ঢাবিতে অস্থায়ী টিকাকেন্দ্র উদ্বোধন, ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত প্রথম ডোজ

টিকা কার্যক্রম উদ্বোধনকালে প্রথম টিকা নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি অ্যান্ড বুড্ডিস্ট স্টাডিজ বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী রুবেল দাস
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য করোনা টিকার বিশেষ অস্থায়ী ক্যাম্প ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হবে
ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য চালু হলো করোনা টিকার বিশেষ অস্থায়ী ক্যাম্প। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা চিকিৎসাকেন্দ্রে স্থাপিত এই কেন্দ্রে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত (শুধু সিনোফার্ম) টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হবে। ১ নভেম্বর থেকে দেওয়া হবে দ্বিতীয় ডোজের টিকা।

আজ সোমবার সকালে এ অস্থায়ী টিকাকেন্দ্রের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) মুহাম্মদ সামাদ, সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) এ এস এম মাকসুদ কামাল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন।

টিকাকেন্দ্র উদ্বোধনের পর উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিভিন্ন প্রতিকূলতার কারণে অনেক শিক্ষার্থী টিকা কার্যক্রমের আওতায় আসতে পারেননি। বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের অন্য সদস্যদেরও সুরক্ষা দরকার, কারণ তাঁরাও শিক্ষার্থীদের সংস্পর্শে আসবেন। এ কারণে সবাইকে মাথায় রেখেই আমরা চিন্তা করেছি যে ক্যাম্পাসে একটি টিকাকেন্দ্র স্থাপন করা গেলে সবাই স্বাচ্ছন্দ্যে টিকা দিতে পারবেন এবং দ্রুততম সময়ে টিকা নিতে পারবেন। যত দ্রুত আমরা শতভাগ শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনতে পারব, তত দ্রুত সশরীর স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরে যেতে পারব।’
উপাচার্য বলেন, ক্যাম্পাসের এই অস্থায়ী টিকাকেন্দ্রে অন-স্পট নিবন্ধন করেই টিকা নেওয়া যাবে। টিকা নেওয়ার জন্য এ মুহূর্তে জাতীয় পরিচয়পত্র লাগবে। অন্যথায় এক ডোজ টিকা নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যরা যেন শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা চিকিৎসাকেন্দ্রে এসে টিকা নিতে পারেন, সে বিষয়টিও বিবেচনায় রাখা হচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের এই টিকাকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনায় সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

এই কেন্দ্রে টিকা কার্যক্রম উদ্বোধনকালে প্রথম টিকা নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি অ্যান্ড বুড্ডিস্ট স্টাডিজ বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী রুবেল দাস। তিনি জগন্নাথ হলের আবাসিক ছাত্র৷

অস্থায়ী টিকাকেন্দ্রে প্রথম টিকা নিচ্ছেন ঢাবির পালি অ্যান্ড বুড্ডিস্ট স্টাডিজ বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী রুবেল দাস
ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ কেন্দ্রে টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ছয়টি শর্ত ও নির্দেশনার কথা বলা হয়েছে। এগুলো হলো—
১.
জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড দেখিয়ে শিক্ষার্থীরা অন-স্পট নিবন্ধনের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে টিকার প্রথম ডোজ নিতে পারবেন। এনআইডি ছাড়া এই মুহূর্তে টিকা দেওয়া সম্ভব হবে না বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে।
২.
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাভুক্ত টিকাকেন্দ্রে (ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট) নিবন্ধন করা সত্ত্বেও যাঁরা এখনো টিকা নিতে পারেননি, তাঁরা এনআইডি, ছাত্রত্বের আইডি কার্ড ও টিকা কার্ড দেখিয়ে অস্থায়ী টিকাকেন্দ্রে প্রথম ডোজ টিকা নিতে পারবেন।
৩.
ডিএসসিসির আওতাভুক্ত টিকাকেন্দ্রগুলো ছাড়া দেশের অন্য কোনো টিকাকেন্দ্রে নিবন্ধন করা শিক্ষার্থীদের সেখানেই টিকা নিতে হবে। তবে দ্রুত টিকা পেতে একটি তালিকা তৈরি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। সুতরাং তাঁদের ক্যাম্পে সংরক্ষিত তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে।
৪.
যাঁরা ইতিমধ্যে এক ডোজ টিকা ডিএসসিসির আওতাভুক্ত টিকাকেন্দ্রে নিয়েছেন, মুঠোফোনে ম্যাসেজ আসা সাপেক্ষে তাঁরা একই টিকার (সিনোফার্ম) দ্বিতীয় ডোজ এই অস্থায়ী ক্যাম্প থেকে নিতে পারবেন।
৫.
যেহেতু অন-স্পট নিবন্ধন করতে হলে অপেক্ষমাণ লাইনে থাকতে হবে, তাই টিকাকেন্দ্রে আসার আগেই নিবন্ধন শেষ করার জন্য পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে প্রত্যেককে নিজের এনআইডি ব্যবহার করে অনলাইনে সুরক্ষা ওয়েবসাইট বা অ্যাপে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন করার সময় জেলা: ঢাকা, উপজেলা: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, ওয়ার্ড-২১ এবং ‘যে কেন্দ্রে টিকা নিতে ইচ্ছুক’ দেওয়া অপশনের যেকোনো কেন্দ্র বাছাই করতে হবে। নিবন্ধন শেষ হলে এনআইডি, শিক্ষার্থীর আইডি ও টিকা কার্ডটি সঙ্গে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা চিকিৎসাকেন্দ্রে এসে টিকা নিতে হবে।
৬.
যাঁদের এনআইডিতে পেশা হিসেবে ‘ছাত্র’ নির্বাচন করা নেই, তাঁদের টিকা পাওয়া নিশ্চিতের জন্য একটি তালিকা তৈরি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হবে। সুতরাং ওই শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পে সংরক্ষিত তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্যে পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে।