স্বপ্ন পূরণের প্ল্যাটফর্ম হতে চায় বুয়েট ড্যান্স ক্লাব

বুয়েট ড্যান্স ক্লাবের পরিবেশনা
ছবি: সংগৃহীত

প্রকৌশলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রশিক্ষিত নাচের শিল্পী যে খুব বেশি পাওয়া যায়, তা কিন্তু নয়। তারপরও কিন্তু ক্যাম্পাসে আয়োজিত ফ্ল্যাশমবগুলোয় হাজির হয়ে যান অনেকেই। এই আগ্রহকে পুঁজি করেই ক্যাম্পাসে নাচ নিয়ে একটা দল গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিভিন্ন ব্যাচের কয়েকজন তরুণ। ফ্ল্যাশমবের সুবাদে আগ্রহীদের সঙ্গে যোগাযোগ তো ছিলই, তাই স্বপ্নের বাস্তবায়ন করা কঠিন হয়নি। এভাবেই যাত্রা শুরু করে বুয়েট ড্যান্স ক্লাব।

কিন্তু তারপরই এল আসল চ্যালেঞ্জ। পড়ালেখার চাপে নাচের জন্য নিয়মিত সময় বের করাটাই কঠিন। তাই সপ্তাহের শেষ ক্লাসের দিনটিকেই তাঁরা বেছে নেন নৃত্যচর্চার জন্য। প্রতি সপ্তাহের বুধবার একাডেমিক কার্যক্রম শেষে এক হন ক্লাবের সদস্যরা। কখনো কখনো অভিজ্ঞ নৃত্যশিল্পীদেরও আমন্ত্রণ জানান। ধ্রুপদি থেকে শুরু করে আধুনিক, নানা ঘরানার নাচ শেখারই সুযোগ আছে এই ক্লাবে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ক্লাবটি বেশ সরব। ফেসবুক, ইউটিউব—দুই মাধ্যমেই তাদের অনুসারী দশ হাজারের বেশি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়েও আছে সাফল্য। ক্লাবের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক যেমন ভারতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা বিশ্ব মিলে রানারআপ হয়েছেন। ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায়ের নৃত্যোৎসব, সব জায়গাতেই সরব উপস্থিতি বুয়েট ড্যান্স ক্লাবের। পাশাপাশি নিজস্ব মেগা ইভেন্টও আছে। ক্লাবের উদ্যোগে প্রতিবছরই হয় আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ড্যান্স ফেস্টিভ্যাল। এটি বুয়েটের সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক আয়োজনগুলোর একটি। কিন্তু ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সুমিত মণ্ডলের স্বপ্ন আরও বড়, ‘আমরা এখন জাতীয় পর্যায়ে ড্যান্স ফেস্টিভ্যাল করছি। এই ফেস্টিভ্যালকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই।’

ক্লাব নিয়ে সভাপতি ইশরাত জাহানের স্বপ্নটা অবশ্য অনুষ্ঠানকেন্দ্রিক নয়। বুয়েটের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের এই শিক্ষার্থী চান, ক্লাবকে যেন শিক্ষার্থীরা স্বপ্ন পূরণের একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এলিজা বলেন, ‘আমি যে ছোটবেলা থেকে নাচতাম, তা কিন্তু নয়। কিন্তু ক্লাবে এসে আশপাশের ভাইয়া-আপুদের দেখে, নাচের চর্চা করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আসার পরও ছায়ানটে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সাহস করেছিলাম। এই ক্লাবে না এলে হয়তো সেটা সম্ভব হতো না। আমি চাই আমার মতো যারা নাচ নিয়ে স্বপ্ন দেখে, ক্লাবকে যেন সেই স্বপ্ন পূরণের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।’