এইচএসসির ফলাফলে ভিকারুননিসায় আনন্দ
এইচএসসির ফলাফল অলনাইনে জেনেও কলেজে আসছেন শিক্ষার্থীরা। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে আনন্দের কমতি ছিল না শিক্ষার্থীদের। বেলা ১১টায় দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অনলাইনে ফলাফল প্রকাশ করা হয়। অনেকে শিক্ষার্থী এসেছেন দুপুর ১২টার দিকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে শুরু করে তাঁদের সংখ্যা।
শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল জানান। এ সময় শিক্ষার্থীরা ড্রাম বাজিয়ে জানান দেন তাঁদের এই অর্জনের কথা।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবার পরীক্ষা দিয়েছিলেন তাসফিয়া তারান্নুম ও ইসরার ফাইরুজ কবীর। দুই বন্ধুই জিপিএ–৫ পেয়েছেন। তাঁরা অনলাইনে রেজাল্ট জেনে এসেছেন কলেজে। এই দুই শিক্ষার্থীর মা মাহফুজা আক্তার আর ফাহমিদা বেগম প্রথম আলোকে জানালেন, এটা একটা উৎসব, তাই শিক্ষার্থীরা ফলাফল জেনেও এসেছেন, যাতে সবার সঙ্গে দেখা হয়। ফলাফল নিয়ে তাঁরা সন্তুষ্ট।
তবে ফলাফল নিয়ে সন্তুষ্ট না ব্যবসা শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী নাবিলা ইসলাম নেহা। তিনি জানালেন, এসএসসিতে তাঁর গোল্ডেন জিপিএ–৫ ছিল। এবার শুধু জিপিএ–৫ পেয়েছেন। নাবিলা ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এভাবে পাসের ফলে সামনে ভর্তি পরীক্ষায় প্রতিযোগিতা আরও তীব্র হবে। তিনি বলছিলেন, সচিবালয়ে সেদিন যে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছিলেন, তাঁরা কাজটি ভালো করেননি। অনেক শিক্ষার্থীর প্রস্তুতি আরও ভালো ছিল। ফলাফল তেমন হয়নি।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার্থী ছিলেন মোট ২,৫৬৯ জন। পাস করেছেন ২,৫৩৫ জন। পাসের হার ৯৯ দশমিক ০৬ শতাংশ। জিপিএ–৫ পেয়েছেন ১৭৩৭ জন।
ভিকারুননিসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাজেদা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ফলাফল দেখেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসছেন। সবার সঙ্গে সবার দেখা হচ্ছে, এটাই আনন্দের। ফলাফল নিয়ে সবাই সন্তুষ্ট। তিনি বলেন, পরীক্ষা হলে ভালো হতো। তবে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে কোনো কোনো সময় তো অনেক সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আনতে হয়।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার কারণে গত ১৮, ২১, ২৩, ২৫ ও ২৮ জুলাই এবং ১ ও ৪ আগস্টের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। সবশেষে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন সূচিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু নতুন করে আর পরীক্ষা না নিয়ে যেগুলো হয়েছে, সেগুলোর ওপর ভিত্তি করে এইচএসসির ফলাফল প্রকাশের দাবি নিয়ে শত শত পরীক্ষার্থী ২০ আগস্ট দুপুরে সচিবালয়ে ঢুকে পড়েন। পরে তাঁদের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে বসে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অবশিষ্ট পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়।
কীভাবে ফলাফল প্রকাশ হবে, তা নিয়ে মন্ত্রণালয় থেকে আন্তশিক্ষা বোর্ডে নির্দেশনা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠিত বিষয়গুলো পূর্ণ মান এবং বাতিল হওয়া পরীক্ষাগুলোর ক্ষেত্রে শুধু পরীক্ষার্থীদের এসএসসিতে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে এ ফলাফল তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়।