গুচ্ছের সি ইউনিটের ফলাফলে পাসের হার ৬০.৪২, ৮৬ নম্বর পেয়ে প্রথম রাশেদ ফরাজি
দেশের ২৪টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য অনুষ্ঠিত গুচ্ছভুক্ত জিএসটির সি ইউনিটের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। এ পরীক্ষায় পাসের হার ৬০ দশমিক ৪২। শিক্ষার্থীরা আজ রোববার রাত ১১টা ৫৯ মিনিটের আগেই জিএসটির ওয়েবসাইটে ঢুকে তাঁদের ফলাফল জানতে পারবেন। আজ সকালে জিএসটি সমন্বিত ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক ও যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেনের কাছে টেকনিক্যাল কমিটির পক্ষ থেকে সি ইউনিটের ফলাফল তুলে দেওয়া হয়। পরে জিএসটি সমন্বিত ভর্তি কমিটির সভায় উপস্থাপনের পর তা প্রকাশের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
ঘোষিত ফলাফলে জানানো হয়, ২০২৩-২৪ সেশনে প্রথম বর্ষে ভর্তির জন্য এ বছর সি ইউনিটে ৪০ হাজার ১১৬ জন পরীক্ষার্থী আবেদন করেন। এর মধ্যে ৩৫ হাজার ১৬৮ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। তার মধ্যে ২১ হাজার ২৪৮ জন শিক্ষার্থী ৩০ নম্বরের ওপরে পেয়ে ভর্তির ন্যূনতম যোগ্যতা অর্জন করেছেন, যার হিসাবে পাসের হার ৬০ দশমিক ৪২। এ ছাড়া বিভিন্ন কারণে শূন্য দশমিক শূন্য ২ শতাংশ তথা ৭ জন শিক্ষার্থীর উত্তরপত্র বাতিল হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আজ রাত ১১টা ৫৯ মিনিটের মধ্যে জিএসটির ওয়েবসাইট থেকে ফলাফল জানতে পারবেন।
ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, সি ইউনিটে সর্বোচ্চ ৮৬ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন মো. রাশেদ ফরাজি। কৃতিত্বপূর্ণ এই শিক্ষার্থী চাঁদপুর সরকারি কলেজে পড়াশোনা করেছেন, তাঁর রোল নং ৫০১৯৬৩ এবং কেন্দ্র ছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। এ ছাড়া ৮৫ নম্বরের ওপরে ২ জন, ৮০ নম্বরের ওপরে ২৯ জন, ৭৫ নম্বরের ওপরে ১৬৭ জন, ৭০ নম্বরের ওপরে ৫৮৬ জন, ৬৫ নম্বরের ওপরে ১ হাজার ৪৭৭ জন, ৬০ নম্বরের ওপরে ২ হাজার ৯৩২ জন, ৫৫ নম্বরের ওপরে ৫ হাজার ৩ জন, ৫০ নম্বরের ওপরে ৭ হাজার ৬২৭ জন, ৪৫ নম্বরের ওপরে ১০ হাজার ৬৯৩ জন, ৪০ নম্বরের ওপরে ১৪ হাজার ১৩ জন, ৩৫ নম্বরের ওপরে ১৭ হাজার ৪৯৩ জন এবং ৩০ নম্বরের ওপরে ২১ হাজার ২৪৮ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন। ১০ মে সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য বি ইউনিটভুক্ত শিক্ষার্থীদের জন্য ৩ হাজার ৬২৯টি আসন রয়েছে। ইতিমধ্যে এ ও বি ইউনিটের ফলাফলও প্রকাশিত হয়েছে। এ ইউনিটভুক্ত বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৫০ হাজার ৭৬০ জন পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হন। সেই হিসাবে এ ইউনিটে পাসের হার ৩৩ দশমিক ৯৮। বি ইউনিটভুক্ত মানবিক বিভাগ থেকে ৩১ হাজার ৮১ জন পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হন। সে হিসাবে পাসে হার ৩৬ দশমিক ৩৩। দেশের ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ইউনিটে ভর্তির জন্য ১২ হাজার ৪০২টি এবং বি ইউনিটে ভর্তির জন্য ৪ হাজার ৫১৫টি আসন রয়েছে।
সি ইউনিটের ফলাফল প্রকাশের সময় অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের যাতায়াত, থাকা-খাওয়াসহ বিভিন্ন দুর্দশা লাঘবে চতুর্থবারের মতো তিনটি ইউনিটে জিএসটি ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের আগেই ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হলো। খুব দ্রুতই গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ভর্তির পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্নে পরীক্ষা সম্পন্ন করায় গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ যাঁরা প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, মডারেশনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন, তাঁদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্তরের সামরিক-বেসামরিক, আধা সামরিক, গোয়েন্দা সংস্থাসহ সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’
যবিপ্রবিতে এসে সি ইউনিটের ফলাফল প্রকাশসংক্রান্ত সার্বিক বিষয় প্রত্যক্ষ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. দিদার-উল-আলম, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হাফিজা খাতুন, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত, জামালপুরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. কামরুল আলম খান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নাসিম আখতার, কিশোরগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক জেড এম পারভেজ সাজ্জাদ, নেত্রকোনার শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম কবীর, সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবু নঈম শেখ, পিরোজপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কাজী সাইফুদ্দিন, জিএসটির টেকনিক্যাল উপকমিটির অধ্যাপক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, অধ্যাপক মো. খাদেমুল ইসলাম, অধ্যাপক সৈয়দ মো. গালিব প্রমুখ।
ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল, ভর্তির পরবর্তী প্রক্রিয়াসহ অন্য সব তথ্য ওয়েবসাইট এবং জিএসটিভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।