এসএসসিতে এক বছরে সোয়া দুই লাখ পরীক্ষার্থী কমেছে

এসএসসি পরীক্ষা
প্রথম আলো ফাইল ছবি

এ বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় গত বছরের চেয়ে প্রায় সোয়া দুই লাখ পরীক্ষার্থী কমেছে। এ বছর এসব পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ২০ লাখ ২১ হাজার ৮৬৮ জন। আর গত বছর পরীক্ষার্থী ছিল ২২ লাখ ৪৩ হাজার ২৫৪ জন। আজ রোববার সচিবালয়ের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আসন্ন এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত সভা শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে পরীক্ষার বিভিন্ন তথ্য সাংবাদিকদের জানান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। ১৯ জুন শুরু হবে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা।

শিক্ষার্থী কমার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দুটি কারণে এবার পরীক্ষার্থী কমেছে। প্রতিবছর দুই থেকে আড়াই লাখের কাছাকাছি অনিয়মিত পরীক্ষার্থী থাকে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এবার পরীক্ষার সময় তিন ঘণ্টা থেকে কমিয়ে দুই ঘণ্টা করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রশ্নপত্রের এমসিকিউ অংশের জন্য ২০ মিনিট এবং সৃজনশীল (সিকউ) অংশের জন্য ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট নির্ধারিত থাকবে।

যেহেতু গত দুই বছরের মধ্যে একবার শতভাগ পাস (পরীক্ষা ছাড়াই) করেছে। আরেক বছর পাসের হার ছিল ৯৪ শতাংশের মতো। সে কারণে অনিয়মিত শিক্ষার্থী এবার প্রায় নেই বললেই চলে। আরেকটি বিষয় হলো, পরীক্ষার্থীদের মধ্যে যারা রেজিস্ট্রেশন করে, তাদের একটি অংশ পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণ করে না। আগের দুটো বছরে যেহেতু একবার পরীক্ষাই হয়নি, যা আগে থেকেই বলা হয়েছিল। আবার গত বছর মাত্র তিন বিষয়ে পরীক্ষা হয়েছে। এ জন্য যারা রেজিস্ট্রেশন করেছিল, তাদের প্রায় সবাই ফরম পূরণ করেছিল। কিন্তু এবার যেহেতু আবার পরীক্ষা হবে, তাই আগের মতোই যারা রেজিস্ট্রেশন করেছিল, তাদের সবাই পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণ করেনি। এ দুটি কারণ মিলিয়েই এবার পরীক্ষার্থী কমেছে।

এ বছর নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে সারা দেশের ২৯ হাজার ৫১৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ৩ হাজার ৭৯০টি কেন্দ্রে এসএসসি, দাখিল এবং এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় অংশ নেবে।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, এবারও আগের মতো পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। তবে অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থীকে পরে প্রবেশ করতে দিলে তাদের নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময় এবং দেরি হওয়ার কারণ রেজিস্টারে লিখে ওই দিনই সংশ্লিষ্ট বোর্ডে প্রতিবেদন আকারে পাঠাতে হবে।

প্রশ্নফাঁস রোধে ট্রেজারি থেকে নির্দিষ্ট তারিখের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সব সেট কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে। আর পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে খুদে বার্তার মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের কাছে যে প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হবে, তার সেট কোড জানিয়ে দেওয়া হবে। কেন্দ্রসচিব ছাড়া আর কেউ কোনো মুঠোফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে যেতে পারবেন না। কেন্দ্রসচিবও সাধারণ মানের একটি মুঠোফোন (ছবি তোলা যায় না, শুধু কল করা ও গ্রহণ করা যায় এমন ফোন) ব্যবহার করতে পারবেন।

আরও পড়ুন

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এবার পরীক্ষার সময় তিন ঘণ্টা থেকে কমিয়ে দুই ঘণ্টা করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রশ্নপত্রের এমসিকিউ অংশের জন্য ২০ মিনিট এবং সৃজনশীল (সিকউ) অংশের জন্য ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট নির্ধারিত থাকবে।

পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের কারণে ২৫ জুনের পরীক্ষা এক দিন এগিয়ে আনা হয়েছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হবে ২৫ জুন। এদিন সারা দেশে নানা ধরনের অনুষ্ঠান হবে। তাতে পরীক্ষার্থীদের বা পরীক্ষা গ্রহণের প্রক্রিয়া যেন কোনোভাবেই বিঘ্নিত না হয়, সে জন্য ২৫ জুনের পরীক্ষাটি ২৪ জুন শুক্রবার নেওয়া হবে। ওই দিন সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত এই পরীক্ষা হবে। তিনি বলেন, যখন পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণা করা হয়েছিল, তারপরে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের তারিখ ঠিক হয়েছে। সে জন্যই পরীক্ষার সময় পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এ পরীক্ষা উপলক্ষে ১৫ জুন থেকে আগামী ৭ জুলাই পর্যন্ত সব কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দেন দীপু মনি।

এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার সময় এ বছরের চেয়ে এগিয়ে আনা হবে। মার্চ–এপ্রিলের মধ্যে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হবে।

আরও পড়ুন