একাদশে ভর্তির নীতি না মানলে মাদ্রাসার এমপিও বাতিল

একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তিতে সর্বোচ্চ ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি কলেজ ও মাদ্রাসার ভর্তি ফিসহ মাসিক বেতন ও যাবতীয় খরচের বিষয়ে অবহিত করে ফি নির্ধারণ করে নির্দেশনা জারি হয়েছে। ভর্তি নীতিমালা ও নির্ধারিত হারে ফি আদায় করতে মাদ্রাসাগুলোকে বলা হয়েছে। আর কোনো মাদ্রাসা ভর্তি নীতিমালা না মানলে পাঠদানের অনুমতি, একাডেমিক স্বীকৃতিসহ তার এমপিও বাতিল করা হবে।

এসব তথ্য জানিয়ে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে আলিমে ভর্তির নির্দেশনা জারি করেছে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড।  

চলতি বছরের ৯ আগস্ট থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইনে শুরু হয়েছে একাদশে ভর্তির কার্যক্রম। ভর্তির সময় কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। ভর্তি প্রক্রিয়ার সব ধাপ শেষ হওয়ার পর ১৩-১৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শিক্ষার্থীদের উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হতে হবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে নির্দেশনা জারি করেছে সরকার।
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৫২৩ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। তারা অনলাইনে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবেদন করছে।

মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ভর্তিযোগ্য শিক্ষার্থীদের তালিকা মাদ্রাসাগুলোর তাদের নোটিশ বোর্ড ও ওয়েবসাইটে প্রকাশের ব্যবস্থা করতে হবে। কোটার শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত সনদ দেখে ভর্তি করাতে হবে। মফস্বল, পৌর ও মেট্রোপলিটন এলাকার বেসরকারি কলেজ-মাদ্রাসার ভর্তিতে সর্বোচ্চ ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এমপিওভুক্ত মফস্বল বা পৌর (উপজেলা) এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তিতে সেশন ফিসহ ভর্তি ফি সর্বসাকল্যে এক হাজার টাকা, পৌর (জেলা সদর) এলাকায় দুই হাজার টাকা এবং ঢাকা মহানগর ছাড়া অন্য মেট্রোপলিটন এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো তিন হাজার টাকার বেশি আদায় করতে পারবে না।

মেট্রোপলিটন এলাকায় অবস্থিত এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে পাঁচ হাজার টাকার বেশি অর্থ আদায় করতে পারবে না। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার আংশিক এমপিওভুক্ত বা এমপিও-বহির্ভূত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উন্নয়ন ও এমপিও-বহির্ভূত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দেওয়ার জন্য শিক্ষার্থী ভর্তির সময় ভর্তি ফি, সেশন চার্জ, উন্নয়ন ফিসহ বাংলা মাধ্যমে সর্বোচ্চ সাড়ে সাত হাজার টাকা এবং ইংরেজি ভার্সনে সর্বোচ্চ সাড়ে আট হাজার টাকা নিতে পারবে।

উন্নয়ন খাতে কোনো প্রতিষ্ঠান এবার ১ হাজার ৫০০ টাকার বেশি আদায় করতে পারবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে রেড ক্রিসেন্ট ফি বাবদ ১২ টাকা নিতে পারবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
কোনো শিক্ষার্থীর পাঠবিরতি থাকলে ও বিলম্বে ভর্তি হলে তাকে ১৫০ টাকা পাঠ বিলম্ব ফি এবং ১০০ টাকা বিলম্ব ভর্তি দিতে হবে।

সরকারি মাদ্রাসাগুলোকে সরকারি পরিপত্র অনুযায়ী ফি সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের অনুমোদিত ফির বেশি না দেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে সব ফি রসিদের মাধ্যমে নিতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বর্তমান কোভিড-১৯ এবং অভিভাবকদের আর্থিক অসচ্ছলতার বিষয় বিবেচনা করে দরিদ্র, মেধাবী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ভর্তিতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাগুলোকে উল্লিখিত ফিগুলো যত দূর সম্ভব মওকুফ করতে বলা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পর বোর্ডের বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা বোর্ডের অনুমতি নিয়ে প্রয়োজনীয় ফি জমা দিয়ে মাদ্রাসা, গ্রুপ ও বিষয় পরিবর্তন করতে পারবে। তবে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে গ্রুপ পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই। বিজ্ঞান গ্রুপ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী অন্য গ্রুপে একবার ভর্তি হওয়ার পর পরে বিজ্ঞান বিভাগে প্রত্যাবর্তনের কোনো সুযোগ নেই।

ভর্তি নীতিমালা না মেনে শিক্ষার্থী ভর্তি করালে সেই মাদ্রাসার পাঠদানের অনুমতি বা স্বীকৃতি বাতিলসহ এমপিওভুক্তি বাতিল করা হবে। আর সরকারি কলেজ ও সমমানের প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্নের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর ব্যত্যয় ঘটলে সব দায়দায়িত্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে বহন করতে হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।