ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্র | সৃজনশীল প্রশ্ন

অধ্যায় ৩

সরকার দেশের উন্নয়ন ও জনগণের স্বার্থের দিক বিবেচনায় নিয়ে ঢাকায় মেট্রোরেল স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা নির্মাণ করতে বেশ কয়েক বছর সময় লাগবে। যে অবস্থা বিবেচনা করে পরিকল্পনা প্রস্তুত হয়, তা সব সময় মিলতে না-ও পারে। তাই ভবিষ্যৎ অবস্থার পরিবর্তন হলে পরিকল্পনা সংশোধনীসহ কর্তৃপক্ষ করণীয় ঠিক করে রাখেন। যাতে মেট্রোরেল নির্মাণের উদ্দেশ্য অর্জিত হয়।

প্রশ্ন

ক. সিদ্ধান্ত গ্রহণ কী?

খ. ‘পরিকল্পনা সর্বদাই ভবিষ্যৎমুখী’ ব্যাখ্যা করো।

গ. উদ্দীপকের মেট্রোরেল স্থাপন প্রকৃতিভিত্তিক কোন ধরনের পরিকল্পনা? ব্যাখ্যা করো।

ঘ. পরিকল্পনার যে বৈশিষ্ট্যটি ভবিষ্যতে অবস্থার পরিবর্তনকে সহজ করে তোলে, উদ্দীপকের আলোকে তা মূল্যায়ন করো।

উত্তর

ক. যেকোনো সমস্যা সমাধান বা কর্মপন্থা গ্রহণে একাধিক উপায় বা বিকল্প থেকে সর্বোত্তম বিকল্প বাছাইকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ বলে।

খ. ভবিষ্যতে কী করা হবে, তা আগাম ঠিক করাকেই পরিকল্পনা বলে। পরিকল্পনা প্রণেতাদের প্রয়োজনীয় উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণপূর্বক ভবিষ্যৎ সম্পর্কে পূর্বানুমানের ভিত্তিতে কর্মসূচি প্রণয়ন করতে হয়। ভবিষ্যতে কী করা হবে বা না করা হবে, তারই একটি সুস্পষ্ট নকশা হলো পরিকল্পনা। তাই পরিকল্পনার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থার সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা পাওয়া যায়। আর অতীতের কোনো বিষয়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা সম্ভব নয়। এ জন্য বলা হয়, পরিকল্পনা সর্বদাই ভবিষ্যৎমুখী।

গ. উদ্দীপকের মেট্রোরেল স্থাপন প্রকৃতি ভিত্তিতে তা একার্থক পরিকল্পনা।

যে পরিকল্পনা প্রতিষ্ঠানে শুধু একবার ব্যবহারের জন্য বা একটিমাত্র উদ্দেশ্য সাধনের জন্য প্রণয়ন করা হয়, তাকে একার্থক পরিকল্পনা বলে। যেসব কার্যক্ষেত্রে অবস্থা দ্রুত পরিবর্তন হয় বা ফরমায়েশ অনুযায়ী কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়, সেখানে একার্থক পরিকল্পনা উত্তম বলে বিবেচিত হয়ে থাকে।

উদ্দীপকে বলা হয়েছে যে সরকার ঢাকায় মেট্রোরেল স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরূপ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রকল্প প্রণয়ন আবশ্যক। প্রকল্পের বিভিন্ন পর্যায় থাকে। যা ক্রমান্বয়ে বাস্তবায়ন করতে হয়। প্রকল্প একার্থক পরিকল্পনার অধীন হওয়ায় ঢাকায় মেট্রোরেল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা নিঃসন্দেহে একার্থক পরিকল্পনা।

ঘ. পরিকল্পনার নমনীয়তা বৈশিষ্ট্যটি ভবিষ্যতে অবস্থার পরিবর্তনকে সহজ করে তোলে।

পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে সংগতি বিধানের সামর্থ্যকে নমনীয়তা বলে। একটি উত্তম পরিকল্পনায় নমনীয়তার সুযোগ থাকা আবশ্যক। এ জন্যই পরিকল্পনা প্রণেতারা আগে থেকেই বিকল্প অবস্থার ঠিক করে রাখেন এবং সে মোতাবেক পরিবর্তন করা সম্ভব হয়।

উদ্দীপকে বলা হয়েছে, সরকার চিন্তা করেছে মেট্রোরেল নির্মাণে বেশ কয়েক বছর সময় লাগবে। তাই অবস্থা বিবেচনায় যে পরিকল্পনা প্রস্তুত করা হয়, তা সব সময় মেলে না। তাই ভবিষ্যৎ অবস্থার পরিবর্তন চিন্তা করে পরিকল্পনার সংশোধনী কর্তৃপক্ষ আগেই ঠিক করে। এরূপ চিন্তা ও কাজের মধ্য দিয়ে পরিকল্পনার নমনীয়তার বৈশিষ্ট্যটি ফুটে উঠেছে।

বাস্তব পরিস্থিতি সব সময় এক থাকে না। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় এ অবস্থা আরও বেশি পরিবর্তনশীল হয়ে পড়ে।

তাই সম্ভাব্য পরিবর্তন কী হতে পারে এবং ওই পরিবর্তনে পরিকল্পনাটিতে প্রয়োজনে কী পরিবর্তন আনা হবে, তা আগে থেকে ঠিক করতে হয়। যা নমনীয়তার সঙ্গে সম্পৃক্ত।

উদ্দীপকে সরকার সেভাবে পরিকল্পনা অর্থাৎ পরিস্থিতিকেন্দ্রিক পরিকল্পনা ঠিক করে রাখায় বাস্তবায়নে সমস্যা হবে না। ফলে মেট্রোরেল প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য

সফল হবে।