৭২০-এ ৭২০ পেয়ে ইতিহাস গড়লেন ওডিশার শোয়েব আফতাব

ভারতের মেডিকেলে পড়ার পরীক্ষার ফলে বড়সড় চমক দেখিয়েছেন ওড়িশার শোয়েব আফতাব। ৭২০ নম্বরের মধ্যে ৭২০-ই পেয়ে ইতিহাস গড়েছেন।
ছবি: সংগৃহীত

ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রাস টেস্ট বা এনইইটি (নিট) পরীক্ষা হলো ভারতের মেডিকেল কলেজে পড়ার জন্য একটি পরীক্ষা। এ পরীক্ষায় ইতিহাস গড়েছেন ওডিশার ছেলে শোয়েব আফতাব। পরীক্ষা যত নম্বরের হয়েছে, সবই পেয়েছেন শোয়েব। ৭২০-এর মধ্যে ৭২০-ই পেয়ে প্রথম পরীক্ষার্থী হিসেবে এ কৃতিত্ব অর্জন করলেন শোয়েব। ওডিশা রাজ্য থেকে প্রথম নিটে শীর্ষস্থানের অধিকারী হলেন শোয়েব।

গত শুক্রবার নিট পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হয়। পরীক্ষার ফলে বড় চমক দেখান শোয়েব আফতাব। ১৮ বছরের পড়ুয়া শোয়েব পুরো নম্বর পেয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।

ওডিশা রাজ্যের রৌরকেল্লার ব্যবসায়ী পরিবারের ছেলে শোয়েব আফতাব। পরিবারে তিনিই প্রথম ডাক্তারি নিয়ে পড়াশোনা করতে যাচ্ছেন। শোয়েব অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় তাঁর বাবা ব্যবসায় ধাক্কা খান। সেই সমস্যা কাটিয়ে ওঠে পরিবার। মেডিকেলের প্রবেশিকার (ভারতে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা) জন্য পড়াশোনার অনিশ্চয়তাও কেটে যায়। চায়ের ব্যবসা ছেড়ে নির্মাণ ব্যবসা শুরু করেন শোয়েবের বাবা।

শোয়েব আফতাবের কৃতিত্বে অবদান আছে শিক্ষকদেরও।
ছবি: সংগৃহীত

শোয়েব আফতাব বলেন, ‘বাবার নির্মাণ খাতের ব্যবসা ভালো চলতে শুরু করে। এরপরই ভর্তি হই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। মা-বোনও ছিলেন সেখানে। তাঁরা উৎসাহ বাড়িয়েছেন। মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে পেরেছি।’

রাজস্থানের কোটার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশোনা করেছেন শোয়েব। নিট পরীক্ষার উত্তরপত্রের সঙ্গে নিজের উত্তর মিলিয়েই তিনি ভালো ফলের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন বলে জানিয়েছেন। যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তিনি পড়াশোনা করতেন, সেখানকার শিক্ষকেরাও ফল ভালোর ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন।

এ বছরের দুই ধাপে হয়েছিল নিট পরীক্ষা। গত ১৩ সেপ্টেম্বর হয়েছে প্রথম পরীক্ষা। এরপর বিশেষ পরীক্ষা শুরু হয় ১৪ সেপ্টেম্বর। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতেও ১৪ লাখ ৩৭ লাখের বেশি পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিটে ৫০ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর পেতে হয়। তফসিলি জাতি ও উপজাতির ছাত্রীদের পেয়ে হয় ৪০ শতাংশ নম্বর।

সফল শিক্ষার্থীরা ভর্তির হবেন এমবিবিএস ও বিডিএসে। এর দায়িত্বে আছে মেডিকেল কাউন্সেলিং কমিটি (এমসিসি)। এইমস এমবিবিএস ও জেআইপিএমইআর এমবিবিএসের অ্যাডমিশনও হবে নিটের স্কোরের ভিত্তিতে। এমবিবিএস বা বিডিএসে সুযোগ পেতে পরীক্ষার্থীদের নিটে অন্তত ৫০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। সংরক্ষিত ক্যাটাগরির পরীক্ষার্থীদের পেতে হয় ৪০ শতাংশ নম্বর। যাঁদের শারীরিক অসুবিধা রয়েছে, তাঁদের পেতে হবে ৪৫ শতাংশ নম্বর। এই প্রথম সরকার এমবিবিএস, বিডিএসে ভর্তির ক্ষেত্রে জঙ্গি হামলার শিকার পরিবারগুলোর সদস্যদেরও কোটার ব্যবস্থা করেছে। যাঁরা সন্ত্রাস দমনে যুক্ত, জঙ্গিগোষ্ঠীর হিট লিস্টে যাঁরা রয়েছেন, অশান্ত পরিস্থিতির জেরে কাশ্মীর ছেড়ে চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন যাঁরা, তাঁরা সবাই এই কোটার সুযোগ পাবেন।

তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে