কোচিং ও সহায়ক বইয়ের সুযোগ থাকছেই শিক্ষা আইনে

শিক্ষা মন্ত্রণালয়
ফাইল ছবি

দীর্ঘ ১০ বছর ধরে আলোচনার পর প্রস্তাবিত শিক্ষা আইনের খসড়া চূড়ান্ত করার কাজ প্রায় শেষ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে সহায়ক বই, কোচিংসহ যে বিষয়গুলো নিয়ে এত দিন ধরে বিতর্ক চলে আসছে সেই বিষয়গুলো রেখেই খসড়াটি চূড়ান্ত হচ্ছে। এতে সরকারের অনুমোদন ও নিবন্ধন নিয়ে সহায়ক বই ও কোচিং চালানোর সুযোগ রাখা হয়েছে।

এ ছাড়া সরকারের অনুমোদন ছাড়া পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তু এবং তার আলোকে পরীক্ষার সম্ভাব্য প্রশ্নাবলির উত্তর পত্রিকায় মুদ্রণ বা ইলেকট্রিক মাধ্যমে প্রকাশ করা যাবে না। আজ মঙ্গলবার শিক্ষা আইনের খসড়া নিয়ে সভা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, আইনে কিছু বিষয় সংযোগ-বিয়োজন করার জন্য মতামত দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। মতামত যৌক্তিক হলে সেটি গ্রহণ করা হবে।

শিগগিরই আইনের খসড়া নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। এরপর সেটি মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের জন্য খসড়াটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হবে।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ খসড়ায় বলা হয়েছে, কোনো ধরনের নোটবই বা গাইড বই মুদ্রণ, বাঁধাই, প্রকাশ বা বাজারজাত করা যাবে না। কেউ এই বিধান লঙ্ঘন করলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড ভোগ করতে হবে। নোট-গাইড বন্ধ করা হলেও সরকারের অনুমোদন নিয়ে সহায়ক পুস্তক, বাঁধাই, প্রকাশ বা বাজারজাত করা যাবে। তবে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা কোনো শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সহায়ক পুস্তক ক্রয় বা পাঠে বাধ্য করতে পারবে না। এসব বই কিনতে বা পাঠে বাধ্য করলে বা উৎসাহ দিলে তা অসদাচরণ হিসেবে গণ্য হবে।

১৯৮০ সালে করা একটি আইনেও অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত নোট-গাইড নিষিদ্ধ। নোট-গাইডের নামে এখন অনুশীলন বই বা সহায়ক পাঠ্যবই চলছে।

আজকের মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, নিবন্ধন নিয়ে কোচিং চালানোর সুযোগ রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত আইনে। যেকোনো কোচিংয়ের জন্য অবশ্যই নিবন্ধন নিতে হবে। নিবন্ধনের সময় বলতে হবে কোন ধরনের কোচিং করাবে। তবে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষক নিজ প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়াতে পারবেন না। এমনকি যে কোচিং সেন্টারে যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী পড়বে, সেখানে ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক পড়াতে পারবেন না।

অবশ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের শনাক্ত করে সম্মতির ভিত্তিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণি কার্যক্রম শেষ হওয়ার পরে বা আগে নিয়ম মেনে অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করার সুযোগ এখনো রয়েছে।

কোচিং, প্রাইভেট এবং সব ধরনের নোট-গাইড, অনুশীলন বা সহায়ক বই শিক্ষা আইনের মাধ্যমে বন্ধ করা এবং জাতীয় শিক্ষানীতি পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়নের জন্য ২০১১ সাল থেকেই শিক্ষা আইন করার কাজ চলছে। এরপর থেকেই এই আইনের খসড়া নিয়ে কেবল আলোচনা চলছে। এখনো আইনটি না হওয়ায় জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়নও পিছিয়ে গেছে।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন