বাংলাদেশ থেকে ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ১৯ তরুণ

শতাধিক সমাজসেবী সংগঠনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন ব্রিটিশ যুবরাজ চার্লসের প্রথম স্ত্রী—প্রিন্সেস ডায়ানা। ২০ বছরের বেশি সময় ধরে তাঁর স্মরণে সমাজসেবায় যুক্ত তরুণদের দেওয়া হয় ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড। প্রিন্সেস ডায়ানার দুই ছেলে উইলিয়াম ও হ্যারি সরাসরি এ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত।

আজ রাত ৯টায় এ বছরের ডায়ানা অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত তরুণদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তালিকায় স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশের ১৯ জন। তাঁরা প্রত্যেকেই দেশের বিভিন্ন সমাজসেবাসংক্রান্ত কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত।

বাংলাদেশ থেকে যাঁরা এ বছর ডায়ানা অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হয়েছেন, তাঁরা হলেন মো. মাহবুবুল আবরার (জাগো ফাউন্ডেশন), আনিকা সুবাহ আহমেদ (ইভোলিউশন থ্রিসিক্সটি), মো. শওকত আরাফাত (ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ), রিজভী আরেফিন (অ্যাওয়ারনেস থ্রিসিক্সটি), মুরশিদুল আলম ভূঁইয়া (টিম ব্যর্থ), খাদিজাতুল কুবরা বিনতে আহসান (উইমেন ভিউ), সাদিদ বিন হাসান (ক্রসরোডস ইনিশিয়েটিভ), আনাস হোসেন (সেফহুইল), সাগর মজুমদার (নারডিজ), গুলনাহার মাহবুব (দেশি বলারস), সিদরাতুল মুনতাহা (টেকনোভেশন), মারিয়া মুমু (মশাল মেন্টাল হেলথ), ইউসুফ মুন্না (রিফ্লেকটিভ টিনস), আজাজুল ইসলাম (ওয়ান অব ইউ), মোহাম্মদ আফজাল সুলতান (দূরবীন ফাউন্ডেশন), লামিয়া তাজনীন (ট্রানসেন্ড), সরকার তানভীর আহমেদ (ইয়ুথ পার্লামেন্ট), আফরুজা তানজি (প্রতিভা) এবং মো. মোস্তফা জামান (ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ)।

অ্যাওয়ারনেস থ্রিসিক্সটি নামের একটি সেবামূলক সংস্থার সহপ্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ডায়ানা অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হয়েছেন রিজভি আরেফিন। রিজভি মূলত পানি, পয়োনিষ্কাশন ও পরিচ্ছন্নতাবিষয়ক (ওয়াশ) সচেতনতা তৈরিতে কাজ করেন। তিনি বলেন, ‘ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড তো নিশ্চয়ই খুব সম্মানজনক একটি স্বীকৃতি। তবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হলো এ পুরস্কারের সুবাদে আমি একটা বড় নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাব। ভবিষ্যতে কাজের সুযোগ আরও বাড়বে।’

এখন পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যাঁরা ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন, তাঁদের শক্তিশালী নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবেন এ বছর অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত তরুণেরা।

এখন পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যাঁরা ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন, তাঁদের শক্তিশালী নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবেন এ বছর অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত তরুণেরা। এ ছাড়া অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্তদের জন্য দক্ষতা উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কর্মশালা আয়োজন করে ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড কর্তৃপক্ষ। এ কর্মশালাগুলোকে অ্যাওয়ার্ডের চেয়েও বড় প্রাপ্তি বলে মনে করেন ইউসুফ মুন্না, রিফ্লেকটিভ টিনস নামের একটি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকার সুবাদে ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন এই তরুণ। মুন্না বলেন, ‘আমরা কিশোর–কিশোরীদের সৃজনশীলতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিই। ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনায় আমাদের কার্যক্রম চলছে। ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার ফলে আমাদের কাজের পরিধি নিশ্চয়ই আরও বাড়বে।’

‘অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার পর দায়িত্ব আরও বেড়ে গেছে,’ বলছিলেন দেশি বলারসের সহপ্রতিষ্ঠাতা গুলনাহার মাহবুব। মেয়েদের বাস্কেটবল খেলতে উদ্বুদ্ধ করে তাঁর এ সংস্থা। দেশি বলারসের কাজ সম্পর্কে গুলনাহার মাহবুব বলেন, ‘আমাদের দেশের মেয়েরা পেশাদার বাস্কেটবল খেলায় আগ্রহী হয় না। কেউ ভাবে ক্যারিয়ার নেই। অনেকে বাসা থেকে উৎসাহ পায় না। মেয়েদের মধ্যে বাস্কেটবল খেলাকে আরও জনপ্রিয় করতেই আমরা কাজ করছি।’

ভার্চ্যুয়ালি আয়োজিত অনুষ্ঠানে ডায়ানা অ্যাওয়ার্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টেসি ওজো সিবিই অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্তদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘এ তো কেবল শুরু। আজ থেকে তোমরা ডায়ানা অ্যাওয়ার্ডের বিশাল পরিবারের সদস্য। আমি দুঃখিত যে তোমাদের সবার সঙ্গে এক হয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পারছি না। কিন্তু একদিন নিশ্চয়ই আমাদের দেখা হবে।’

গত বছর বাংলাদেশ থেকে ছয়জন তরুণ ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন।

আরও পড়ুন