মানসম্মত শিক্ষার অনন্য বিদ্যাপীঠ এইউবি

এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ক্যাম্পাস

‘শিক্ষায় নবদিগন্ত’ স্লোগান নিয়ে স্বল্প খরচে মানসম্মত শিক্ষার প্রত্যয়ে ১৯৯৬ সালের ৪ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয় এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (এইউবি)।

১৯৯৬ সালে ঢাকার ওসমানী মিলনায়তনে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে তৎকালীন পানিসম্পদমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। সেই থেকে অনেক চেষ্টা ও দক্ষতার পরিচয় দিয়ে দুই দশকের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে আজ এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ আজকের অবস্থানে এসেছে।

ঢাকার অদূরে আশুলিয়ায় সবুজে ঘেরা নিরিবিলি পরিবেশে ১০ একরের বেশি জমির ওপর এশিয়ান ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে, যা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির নির্দেশনা অনুযায়ী পরিচালিত। এ ক্যাম্পাসে রয়েছে বিস্তৃত মাঠ, আছে ক্রিকেট ও ফুটবল খেলার আলাদা মাঠ, ফ্রি ওয়াই–ফাই, শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ, ইনডোর ও আউটডোর গেমস এবং বিনোদনের ব্যবস্থা। এ ছাড়া এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে বিনা মূল্যে পরিবহনসুবিধা ও স্বল্প খরচে হোস্টেল–সুবিধা।

স্বল্প খরচে মানসম্মত শিক্ষার অনন্য বিদ্যাপীঠ এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ। শিক্ষার মান উন্নত রাখার জন্য এ বিশ্ববিদ্যালয় সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে রয়েছে বিশ্বমানের সিলেবাস ও শিক্ষা কার্যক্রম, অভিজ্ঞ শিক্ষক, সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, উচ্চমানের কম্পিউটার ল্যাব, সিসিটিভিসহ ক্লাস মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা, নির্দিষ্ট বিষয়ে শিক্ষার পাশাপাশি জীবনঘনিষ্ঠ বিষয়ে সাধারণ জ্ঞানের ব্যবস্থা।

এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে সুবিন্যস্ত শিক্ষার্থী কার্যক্রম। তাই এখানে আধুনিক যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার যোগ্যতা অর্জিত হয়। এ ছাড়া এখানে আছে উদ্যোক্তা হওয়ার এবং চাকরির বাজারের যোগ্য করে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও।
২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এ সময়ে আমরা গর্বিত আমাদের অ্যালামনাইদের নিয়ে, যাঁরা বাংলাদেশের প্রশাসনিক, শিক্ষা, আর্থিক, সেবা, আইটি খাতসহ সব খাতে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বে এশিয়ান ইউনিভার্সিটির অ্যালামনাইরা ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছেন বিভিন্ন সেক্টরে, বিশ্বের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাকাল্টি সদস্য হিসেবে গৌরবের সঙ্গে শিক্ষাদানে ভূমিকা রাখছেন।

এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশে-বিদেশে কর্মজীবনে ভালো করছেন। দেশে সরকারি–বেসরকারি পর্যায়ে তাঁরা উচ্চপদে আসীন আছেন। বিদেশেও তাঁরা সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো সেশনজট নেই, কাজেই শিক্ষার্থীরা শিক্ষাজীবন শেষ করে সরাসরি কর্মজীবনে প্রবেশ করতে পারেন। দেশে–প্রবাসে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা–কর্মচারী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষার্থী, অ্যালামনাই—সব মিলিয়ে আমরা একটি পরিবার—এশিয়ান পরিবার।

এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ব্যয় রাখা হয়েছে কম, যাতে অল্প আয়ের মানুষও এ উন্নত শিক্ষার সুযোগ গ্রহণ করতে পারে। এ ছাড়া রয়েছে ছাত্রবৃত্তি ও বেতন মওকুফের ব্যবস্থা। এসএসসি ও এইচএসসির ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বেতন ছাড়ে (সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে) লেখাপড়ার সুবিধা, সেমিস্টার ফলাফলের ভিত্তিতে স্কলারশিপের ব্যবস্থাও আছে। বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা এখানে বিনা মূল্যে লেখাপড়া করার সুযোগ পান।

এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান বিদেশি শিক্ষার্থীদের আকর্ষণ করেছে। এ কারণে অস্ট্রেলিয়া, এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশের শিক্ষার্থীরা এখানে পড়াশোনা করছেন।
যাঁর চেষ্টা, অর্জিত জ্ঞান ও অর্থে এ প্রতিষ্ঠান আজকের অবস্থানে এসেছে, তিনি হলেন শিক্ষাবিদ, অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও লেখক অধ্যাপক আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেক। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ড. আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেককে কেমব্রিজের বায়োগ্রাফিক্যাল অ্যাওয়ার্ড ডিভিশনের পক্ষে থেকে ইন্টারন্যাশনাল ম্যান অব দ্য ইয়ার নির্বাচিত করা হয় এবং ২০১৬ সালে জর্ডানের বাদশা আবদুল্লাহ রয়্যাল একাডেমি সম্মাননা প্রদান করা হয়। এ ছাড়া তিনি দেশি-বিদেশি নানা পুরস্কার পেয়েছেন।

নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে এশিয়ান ইউনিভার্সিটিতে বাংলাদেশে প্রথম ক্যাম্পাস ও দূরশিক্ষণ পদ্ধতির সমন্বয়ে দ্বৈত শিক্ষা পদ্ধতির প্রবর্তন করা হয়েছিল। বর্তমানে করোনা মহামারিতে বাংলাদেশের সব স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে দ্বৈত শিক্ষা পদ্ধতির সুফল পাচ্ছে। করোনা মহামারির একেবারে প্রথম থেকেই এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অনলাইনের মাধ্যমে সফলতার সঙ্গে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

ডিজিটালাইজেশনের এ যুগে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সমন্বয়ে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমানে এটি ৫টি অনুষদ ও ১২টি বিভাগ নিয়ে অভিজ্ঞ শিক্ষক দ্বারা মানবসম্পদ উন্নয়নে আধুনিক শিক্ষার সঙ্গে মূল্যবোধের সমন্বয়ে মানসম্মত উচ্চশিক্ষা প্রদান করে যাচ্ছে। এখানকার ফ্যাকাল্টি সদস্যরা গবেষণার কাজে জড়িত। তাঁদের জার্নাল ও গবেষণাপত্র দেশ ও বহির্বিশ্বেও সমাদৃত।

এইউবির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ড. জাফর সাদেক। তিনি তিনি অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করে বর্তমানে দেশের সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন।

এ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শাহজাহান খান কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অন্টারিও থেকে ম্যাথমেটিক্যাল স্ট্যাটিসটিকসে পিএইচডি (১৯৯২) এবং এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যানে বিএসসি (সম্মান) এবং এমএসসিতে প্রথম শ্রেণি অর্জন করেন তিনি। তিনি ১৯৮০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন। পরে অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন কুইন্সল্যান্ড, কিং ফাহাদ ইউনিভার্সিটি অব পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মিনারেল ও সৌদি আরবে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন কুইন্সল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ায় অধ্যাপক এবং পরিসংখ্যানের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি সুলতান কাবুস বিশ্ববিদ্যালয়, ওমান ও বাহরাইন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন।

এইউবির ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. নুরুল ইসলাম আগে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ও ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। শুধু ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে নয়, মানুষ ও মানবতার পাশে থেকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি। গত ২৬ বছরে এক দিনের জন্যও বন্ধ থাকেনি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আলোকিত মানুষ গড়ার কার্যক্রম। মানুষ গড়ার কারিগর এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ বেঁচে থাকুক শত সহস্র বছর। এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ নামের আলোর বিচ্ছুরণ ঘটুক সারা বিশ্বে।