চাকরির বাজারের চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে শিক্ষাক্রম প্রণয়নের তাগিদ রাষ্ট্রপতির
বর্তমান চাকরির বাজারের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। তিনি বলেছেন, চাহিদাভিত্তিক ও কর্মমুখী শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। গতকাল বুধবার মিরপুর সেনানিবাসে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) ‘ষষ্ঠ সমাবর্তন-২০২৩’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতি গঠনের প্রথম ধাপ হিসেবে মানসম্মত শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, এটি (মানসম্মত শিক্ষা) অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মেধা বিকাশের প্রধান মাধ্যম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে গবেষণাকে গুরুত্ব দিতে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন।
রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পাঠদানে নিজেকে নিবেদিত করতে এবং মনে রাখতে বলেছিলেন, ‘আনন্দ ব্যতীত শিক্ষা কোনো সুফল বয়ে আনতে পারে না।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে উদ্ভাবিত নতুন ধারণা ও কৌশলগুলোকে শোষণ করে নিজেদের সময়োপযোগী রাখতে হবে।’
আবদুল হামিদ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তরুণ প্রজন্মকে বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তিতে (আইটি) দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকতে দক্ষতা অর্জনের কোনো বিকল্প নেই।
ডিগ্রি অর্জনের জন্য স্নাতকদের অভিনন্দন জানিয়ে রাষ্ট্রপতি তাঁদের মনে রাখার পরামর্শ দেন, শিক্ষা শুধু ডিগ্রি অর্জনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, একজন শিক্ষার্থী কীভাবে ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে এর সদ্ব্যবহার করতে পারেন, তার ওপর প্রকৃত সাফল্য নির্ভর করে।
বর্তমান বিশ্বপরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে দেশের অর্থনীতি সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বিশ্বমন্দা থেকে দেশকে বাঁচাতে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বাড়াতে হবে। রপ্তানি বৃদ্ধি এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থানের মাধ্যমে সেটি করা উচিত।’
রাষ্ট্রপতি গ্র্যাজুয়েটদের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার পাশাপাশি উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ারও পরামর্শ দেন।
৩৬ জন স্নাতককে ‘চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল’ এবং ২৯ জনকে ‘ভাইস-চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল’ প্রদান করা হয় সমাবর্তনে।
ষষ্ঠ সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন সেনাপ্রধান (সিএএস) জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, বিইউপির ভাইস চ্যান্সেলর মেজর জেনারেল মো. মাহবুব-উল আলম, তিন বাহিনীর প্রধান এবং বিইউপির প্রো-ভিসি, কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রারসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।