প্রকৌশল শিক্ষায় স্নাতকে ৪০, সামাজিক বিজ্ঞান ও মানবিকে ৬০ শিক্ষার্থী ভর্তির পরামর্শ

কুয়েটের ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় অডিটরিয়ামে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল
ছবি: বিজ্ঞপ্তি

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষার্থী ভর্তি কমিয়ে গবেষণায় মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর। তিনি প্রকৌশল শিক্ষায় স্নাতক পর্যায়ে ৪০ জন এবং সামাজিক বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগে ৬০ শিক্ষার্থী ভর্তির পরামর্শ দেন। খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) দিবস ২০২৩ উদ্‌যাপন উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এ পরামর্শ দেন। গতকাল শুক্রবার কুয়েট অডিটরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মিহির রঞ্জন হালদারের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবু নঈম শেখ, কুয়েটের সহ–উপাচার্য অধ্যাপক সোবহান মিয়া।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, সব বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক তথা সম্মান ডিগ্রিকে টার্মিনাল ডিগ্রি হিসেবে গণ্য করা উচিত। একই সঙ্গে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা কমিয়ে গবেষণায় বেশি নজর দিতে হবে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য থেকে পিছিয়ে যাবে বলে তিনি মনে করেন। তিনি প্রকৌশল শিক্ষায় স্নাতক পর্যায়ে ৪০ জন এবং সামাজিক বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগে ৬০ শিক্ষার্থী ভর্তির পরামর্শ দেন।

বাজারে চাহিদা ও চাকরির সুযোগ আছে এমন বিভাগ খুলতে হবে অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের বৃত্তির ব্যবস্থা করতে পারে। এ বৃত্তির অর্থের পরিমাণ এমন হতে হবে, যাতে একজন শিক্ষার্থী বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করতে পারেন। এ ছাড়া স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঋণের ব্যবস্থাও করতে পারে বলে অভিমত প্রকাশ করেন তিনি।

কুয়েটের ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল
ছবি: বিজ্ঞপ্তি

ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রশাসন বিভাগের সদস্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থী ও বিভাগের সংখ্যা দিয়ে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের গুণগতমান পরিমাপ করা যায় না। সংখ্যা না বাড়িয়ে কীভাবে শিক্ষা ও গবেষণায় মান অর্জন করা যায়, সেদিকে আমাদের বেশি নজর দিতে হবে।’ নতুন বিভাগ খোলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাজারে চাহিদা ও চাকরির সুযোগ আছে, এমন বিভাগ খোলার দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। বিভাগ খোলার সময় প্রয়োজনীয় জনবল ও অবকাঠামো আছে কি না, এসব বিষয় দেখতে হবে। বিভাগ খুলে জনবল ও অবকাঠামো সংকটের কথা বলা যাবে না বলে তিনি জানান। এ ছাড়া পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প যথাসময়ে এবং সঠিক নিয়মে শেষ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানান তিনি।

মিহির রঞ্জন হালদার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে এবং প্রকৌশল শিক্ষায় কুয়েটকে শীর্ষ স্থান অর্জন করতে হবে। দায়িত্ব পাওয়ার এক বছরের মধ্যে জনবলকাঠামো তৈরি ও প্রকল্পের অর্থ ছাড় করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে তিনি এখন পূর্ণ মনোযোগ দিচ্ছেন। এ লক্ষ্যে শিক্ষার মানোন্নয়ন ও লেখাপড়ার পরিবেশ উন্নয়নে তিনি সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।

কুয়েটের ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

আরও পড়ুন