বেসরকারি স্কুল-কলেজে কর্মচারী নিয়োগে ক্ষমতা হারাল পরিচালনা পর্ষদ

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ফাইল ছবি

বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজে কর্মচারী নিয়োগে এত দিন ধরে চলা নিয়ম পরিবর্তন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নতুন নিয়মে এ নিয়োগে পরিচালনা পর্ষদের ক্ষমতা থাকছে না। জেলা প্রশাসকের (ডিসি) নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটির মাধ্যমে এসব পদে নিয়োগে পরীক্ষা, মূল্যায়ন ও নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হবে। এ কমিটিতে পরিচালনা পর্ষদের কেউ থাকতে পারবেন না।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক পরিপত্রে নতুন এই নিয়মের কথা জানানো হয়। গতকাল সোমবারের তারিখে ‘এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়, উচ্চমাধ্যমিক কলেজ বা স্নাতক কলেজ) প্রবেশ পর্যায়ে শিক্ষক ব্যতীত অন্যান্য এমপিও পদে নিয়োগের সুপারিশ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অনুসরণীয় নির্দেশমালা’ জারি করা হয়েছে। পদগুলো হলো ট্রেড সহকারী বা অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী, কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর বা গবেষণা বা ল্যাব সহকারী, নিরাপত্তাকর্মী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, নৈশপ্রহরী, আয়া, অফিস সহায়ক।

বর্তমানে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ হয় বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) অধীন পরীক্ষা ও সুপারিশের ভিত্তিতে। তবে অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ এবং প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং কর্মচারী পদে নিয়োগ পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে হয়ে আসছিল। এসব পদে নিয়োগে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ আছে। অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ এবং প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগও এনটিআরসিএর মাধ্যমে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে এখন কর্মচারী নিয়োগেও নতুন নিয়ম চালু করা হলো।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, শিক্ষক ছাড়া অন্যান্য এমপিওভুক্ত (বেতন বাবদ মাসে সরকারি অনুদান পায়) কর্মচারী পদে নিয়োগে সুপারিশ কমিটির সভাপতি হবেন ডিসি। কমিটিতে সদস্য হিসেবে থাকবেন সংশ্লিষ্ট জেলার সবচেয়ে পুরোনো সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ বা তাঁর একজন প্রতিনিধি, সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের একজন প্রতিনিধি (পরিদর্শকের নিচে নয়) এবং সংশ্লিষ্ট জেলার যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক বা সহকারী পরিচালক। কমিটিতে সদস্যসচিব হিসেবে থাকবেন সংশ্লিষ্ট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।

এই নিয়োগ কমিটি পরীক্ষা গ্রহণ, ফলাফল প্রস্তুত ও নিয়োগের সুপারিশ করবে। কমিটি মৌখিক পরীক্ষার সময় প্রয়োজনে একাধিক বোর্ড গঠন করতে পারবে। জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধির নেতৃত্বে নবম গ্রেডের নিচে নন, এমন তিন সদস্যবিশিষ্ট বোর্ড গঠিত হবে। নিয়োগের সুপারিশের পর পরিচালনা কমিটিকে এক মাসের মধ্যে সুপারিশ হওয়া প্রার্থীর অনুকূলে নিয়োগপত্র পাঠাতে হবে। একই সঙ্গে মুঠোফোনে বিষয়টি জানাতে হবে। আর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর নিয়োগপত্রের একটি টেমপ্লেট তৈরি করে তা ওয়েবসাইটে আপলোড করবে। নিয়োগপত্র দিতে বিলম্ব করা অসদাচরণ বলে গণ্য হবে। এ জন্য প্রতিষ্ঠানের প্রধানের এমপিও স্থগিতসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আর পরিচালনা কমিটি বাতিলের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হবে।

নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের প্রধান শূন্য পদের প্রাপ্যতার বিবরণী তৈরি করবেন। প্রাপ্যতাবিহীন পদে কোনো কর্মচারী নিয়োগের প্রস্তাব করা হলে তার দায়ভার প্রতিষ্ঠানপ্রধানের ওপর বর্তাবে।