গুচ্ছভুক্ত ২২টি সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শূন্য আসনে ভর্তিতেও ‘আন্তবিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন’ চালু রাখার দাবি জানিয়েছেন ভর্তি-ইচ্ছুক একদল শিক্ষার্থী। এই দাবিতে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য ও রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন।
অন্যদিকে ভর্তি-সংশ্লিষ্ট কয়েকজনকে আইনটি নোটিশও দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এ বিষয়ে রিট করারও প্রস্তুতি নিচ্ছেন ওই সব শিক্ষার্থীরা।
চলতি শিক্ষাবর্ষে (২০২২-২৩) গুচ্ছভুক্ত ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় গত জুনে। এরপর পাস করা শিক্ষার্থীদের চার ধাপে (চারবার মেধাতালিকা ও চারবার মাইগ্রেশনের সুযোগ) ভর্তি কার্যক্রম চলে। এই ভর্তি কার্যক্রম শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাসও শুরু হয়েছে। কিন্তু ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের অনেকে স্বেচ্ছায় ভর্তি বাতিল করলে বেশ কিছুসংখ্যক আসন শূন্য হয়। এরপর ‘বিশেষ পর্যায়ে’ এই শূন্য আসনগুলো পূরণের উদ্যোগ নেয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বলছেন, মোট শূন্য আসনের সংখ্যা দুই হাজারের বেশি। এই বিশেষ পর্যায়ের ভর্তিতে মাইগ্রেশনের মাধ্যমে গুচ্ছভুক্ত অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ রাখা হয়নি। শুধু একজন শিক্ষার্থী বর্তমানে যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি আছেন, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর পছন্দক্রম অনুযায়ী বিষয় পরিবর্তনের সুযোগ পাবেন।
এ ছাড়া যেসব শিক্ষার্থী এখন পর্যন্ত গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাননি, তাঁদের কাছ থেকে অনলাইনে ভর্তি-সংক্রান্ত বিষয়ে সম্মতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেতরে মাইগ্রেশন সম্পন্ন করার পর পরের এই শিক্ষার্থীরা মেধাক্রমের ভিত্তিতে শূন্য আসনগুলোতে ভর্তির সুযোগ পাবেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের একজন মো. শাহরিয়ার হোসেন। তিনি গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন। কিন্তু তাঁর ইচ্ছা রাজধানীতে অবস্থিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে তাঁর মতো অনেক শিক্ষার্থীর আর এই সুযোগ থাকছে না। উল্টো কম নম্বর পেয়েও হয়তো কেউ কেউ ‘ভালো বিষয়ে’ ভর্তি হয়ে যাবেন। তাই তাঁর দাবি আগের চার ধাপের মতো শূন্য আসনে ভর্তিতেও আন্তবিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন বহাল রাখা হোক। এ বিষয়ে তাঁরা রিট করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, গুচ্ছভিত্তিক ভর্তির বিজ্ঞাপনেও ‘বিশেষ পর্যায়ে’ ভর্তিতে এই রকমভাবে মাইগ্রেশনের বিষয়টি উল্লেখ ছিল না।
অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে মাইগ্রেশনের সময় শেষ হওয়ার পর শূন্য আসনগুলো পূরণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশেষ ব্যবস্থায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি মনে করেন, এই সিদ্ধান্ত যৌক্তিক। কারণ, ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাসও শুরু হয়ে গেছে। এখন যদি আবারও বিশ্ববিদ্যালয় পরিবর্তনের সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে শূন্য আসনগুলো সহজেই পূরণ করা যাবে না। তাই শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেই বিষয়টি পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত সঠিক বলে তিনি মনে করেন।