জার্মানিতে পড়াশোনার পাশাপাশি কাজের সুযোগ: জেনে নিন নিয়ম ও সুবিধা

জার্মানিতে ১২ শতাংশের বেশি বিদেশি শিক্ষার্থীর পড়াশোনা করেনফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য জার্মানি এখন অন্যতম শীর্ষ গন্তব্য। উচ্চমানের শিক্ষাব্যবস্থা, তুলনামূলক কম খরচ এবং পড়াশোনা শেষে কাজের সুযোগের কারণে দেশটি ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে। আরও ভালো দিক হলো, শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি খণ্ডকালীন কাজও করতে পারেন।

তবে সুযোগটি সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হলে জার্মানির আইন, নিয়মকানুন ও সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থীদের জন্য বিস্তারিত তুলে ধরা হলো—

কাজের সময়সীমা

জার্মানিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি সেমিস্টার চলাকালে প্রতি সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২০ ঘণ্টা, সেমিস্টার বিরতিতে পূর্ণকালীন কাজ করতে পারেন।

এটি বছরে মোট ১৪০ পূর্ণদিন বা ২৮০ অর্ধদিন কাজের সমান। এই সীমা অতিক্রম করলে ভিসা স্ট্যাটাস বিপদের মুখে পড়তে পারে।

তবে কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে। যদি কাজটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাধ্যতামূলক ইন্টার্নশিপের অংশ হয়, তবে এটি এই সীমার মধ্যে গণনা হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক বা রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করলে কিছু ক্ষেত্রে এই সীমার বাইরে কাজের অনুমতি পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন

কাজের জন্য প্রয়োজনীয় আইনি বিষয়

জার্মানিতে বৈধভাবে কাজ করতে একজন শিক্ষার্থীর থাকতে হবে:

—জার্মান ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর

—জার্মান ব্যাংক অ্যাকাউন্ট

—সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর

মাসিক আয়

২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জার্মানিতে ঘণ্টাপ্রতি ন্যূনতম মজুরি ১২ দশমিক ৮২ ইউরো নির্ধারিত হয়েছে। যদি মাসিক আয় ৫২০ ইউরোর বেশি হয়, তবে শিক্ষার্থীদের সামাজিক নিরাপত্তা অবদান দিতে হয় এবং বার্ষিক ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিতে হতে পারে।

প্রথম আলো ফাইল ছবি
আরও পড়ুন

জনপ্রিয় পার্ট-টাইম চাকরির ধরন

জার্মানিতে শিক্ষার্থীরা নানা ধরনের কাজ করতে পারেন, যেমন—

অন-ক্যাম্পাস (On-campus):

—লাইব্রেরি সহকারী

—ছাত্র সংস্থার কর্মী

—রিসার্চ বা টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট

অফ-ক্যাম্পাস (Off-campus):

—রেস্টুরেন্ট, ক্যাফে বা সুপারমার্কেটে চাকরি

—দোকান বা খুচরা বিক্রয়ে সহকারী

প্রথম আলো ফাইল ছবি

বিশেষ দক্ষতাভিত্তিক কাজ

—ভাষা শিক্ষা বা অনুবাদ

—আইটি সাপোর্ট

—কনটেন্ট বা টেক-সহায়ক কাজ

আরও পড়ুন

কীভাবে চাকরি খুঁজবেন

জার্মানিতে পার্ট-টাইম কাজ খুঁজতে অনলাইন রিসোর্স ও নেটওয়ার্কিং-দুই-ই জরুরি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যারিয়ার সেন্টার, বিশ্ববিদ্যালয়ের জব বোর্ড, রিজ্যুমে সহায়তা ও ক্যারিয়ারবিষয়ক পরামর্শ পাওয়া যায়।

অনলাইন প্ল্যাটফর্ম যেমন Stepstone, Indeed, Xing, LinkedIn ইত্যাদি ওয়েবসাইটে নিয়মিত পার্ট-টাইম বা ইন্টার্নশিপের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।

জার্মানি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য এমন এক পরিবেশ তৈরি করেছে যেখানে পড়াশোনা ও কাজ—দুটি ক্ষেত্রেই সমৃদ্ধ হওয়ার সুযোগ রয়েছে। সুনির্দিষ্ট আইন, শ্রমিক সুরক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়ক অবকাঠামোর ফলে শিক্ষার্থীরা নিশ্চিন্তে পার্ট-টাইম কাজ করতে পারেন, যা তাঁদের শিক্ষা ও পেশাগত জীবনের জন্য এক অমূল্য সম্পদ।

আরও পড়ুন