দক্ষিণ কোরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা: ৩৫ মিনিট বন্ধ সব ফ্লাইট
দক্ষিণ কোরিয়ায় গত বৃহস্পতিবার কঠিন এক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন পাঁচ লাখের বেশি পরীক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির এ পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীরা যেন সময়মতো কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারেন, এ জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়। পুলিশ মোতায়েন, অফিস দেরিতে শুরুসহ নানা উদ্যোগের অন্যতম একটি ছিল পরীক্ষার জন্য আধা ঘণ্টার বেশি সময় সব ফ্লাইট বন্ধ রাখা।
দেশের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ভর্তির হওয়ার জন্য অপরিহার্য এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা গত সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল। অধিকাংশ পরীক্ষার্থীই ২০০৭ সালে জন্ম নেওয়া। ওই বছরটিকে অনেক পরিবার সন্তান জন্মের জন্য শুভ হিসেবে বিবেচনা করেছিল। এর ফলে সে সময় জন্মহার বেড়ে গিয়েছিল।
বেলা ১টা ৫ থেকে ১টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত ইনচন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ দেশের সব বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ উড্ডয়ন ও অবতরণ বন্ধ রাখা হয়েছিল। এর কারণ হলো, ওই সময় ছিল ইংরেজি পরীক্ষায় শ্রবণ (লিসেনিং) পরীক্ষা। পরীক্ষার শ্রবণ অংশের সময় পরীক্ষার্থীদের যেন কোনো বিরক্তি না হয়, তাই উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
এ সিদ্ধান্তের কারণে ৬৫টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটসহ মোট ১৪০টি ফ্লাইট উড্ডয়ন ও অবতরণ বন্ধ থাকে। ফ্লাইট ট্র্যাকারে দেখা গেছে, বিমান পরিবহণ মন্ত্রণালয় তিন হাজার মিটারের (৯ হাজার ৮৪৩ ফুট) নিচে বিমান চলাচল নিষিদ্ধ করায় বেশ কিছু উড়োজাহাজ বিমানবন্দরের কাছে আকাশে চক্কর দিচ্ছিল।
দক্ষিণ কোরিয়ার আর্থিক বাজার ও অফিসগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে এক ঘণ্টা দেরিতে খুলেছে এ পরীক্ষার কারণে। পরীক্ষার্থীরা ৯ ঘণ্টার এই বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার জন্য ঠিক সময়ে যেন কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারেন, সে জন্যই এটা করা হয়েছে।
ইয়েসিয়ন কিমের মেয়ে এ বছর পরীক্ষা দিয়েছেন। পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষারত ইয়েসিয়ন কিম বলেন, ‘এই পরীক্ষা প্রায় ২০ বছরের একটি লক্ষ্য এবং একই সঙ্গে নতুন শুরুও বটে।’
এ বছর মোট ৫ লাখ ৫৪ হাজার ১৭৪ পরীক্ষার্থী এই পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করেছেন। গত বছরের তুলনায় ৬ শতাংশ বেশি পরীক্ষার্থী এবার নিবন্ধন করেছেন। ২০১৯ সালের পর এ সংখ্যা সর্বোচ্চ। ২০০৭ সালে প্রায় ৪ লাখ ৯৬ হাজার শিশু জন্মেছিল, যা ১৯৯০–এর দশকের মাঝামাঝি থেকে চলমান জন্মহারের ধারাবাহিক পতনে একটি সাময়িক বিরতি এনে দিয়েছিল।
দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বের দ্রুততম বার্ধক্যজনিত সমাজগুলোর একটি, যদিও ২০২৪ সালে দেশটির জন্মহার সামান্য বেড়ে শূন্য দশমিক ৭৫ হয়েছে।