এ বছরও হবে ‘বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি উৎসব’
গত বছরের মতো এ বছরও হবে ‘জিপিএইচ ইস্পাত-প্রথম আলো বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি উৎসব’। ৩০ জুন শুরু হতে যাওয়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে সুবিধামতো সময়ে অনুষ্ঠিত হবে এই উৎসব, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি-সংক্রান্ত সব খবর জানতে পারবেন।
আজ মঙ্গলবার প্রথম আলো কার্যালয়ে ‘বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি উৎসব’ নিয়ে আয়োজিত প্রস্তুতিমূলক সভায় এই তথ্য জানানো হয়। সভায় বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত হয়ে উৎসবকে সফল করতে বিভিন্ন রকমের প্রস্তাব ও পরামর্শ দেন। আয়োজকেরা জানিয়েছেন এসব পরামর্শ নিয়ে এবারের উৎসবকে কীভাবে আরও বেশি ভালো করা যায়, সেই চেষ্টা করা হবে।
উল্লেখ্য, এ ভর্তি উৎসবের আয়োজক প্রথম আলো।
সভায় অংশ নিয়ে টিভিএস আটো বাংলাদেশের সহকারী ব্যবস্থাপক (মার্কেটিং) মারুফুল মারুফ বলেন, তাঁরা যখন বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্পনসর করেন, তখন অভ্যন্তরীণভাবে দেখার চেষ্টা করেন, সেই স্পনসর করলে কী লাভ হবে। কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয় উৎসবের বিষয়ে তাঁদের কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যবসার বিষয়টি কম এসেছে। কর্তৃপক্ষের ভাবনা হলো একজন শিক্ষার্থীর কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া। যেটি ওই শিক্ষার্থীর জীবনে প্রভাব ফেলে। তাই সেই সিদ্ধান্ত যেখানে নেবে, তার পাশে থাকার জন্য টিভিএস এখানে স্পনসর করছে।
গত বছরের ২৩ ও ২৪ জুলাই রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ‘জিপিএইচ ইস্পাত-প্রথম আলো বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি উৎসব’। ওই বছর ভর্তি উৎসবে ৩৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি ব্রিটিশ কাউন্সিল, ইএমকে সেন্টারসহ মোট ৪৫টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছিল। তখন শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্টল থেকে ভর্তির তথ্য, বৃত্তির খবর এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে জানতে পারেন। ছিল বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা সংলাপ। এ ছাড়া উৎসবে আসা দর্শনার্থীদের জন্য ছিল র্যাফল ড্রর মাধ্যমে মোটরসাইকেল, ল্যাপটপ, মুঠোফোনসহ বেশ কিছু আকর্ষণীয় পুরস্কার।
আজকের প্রস্তুতিমূলক সভায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে উৎসবের সময় নিয়ে মূলত দুই ধরনের প্রস্তাব এসেছে। কেউ কেউ বলছেন, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার পর ফল প্রকাশের আগে এই উৎসব শুরু করা। আবার কেউ কেউ বলছেন ফল প্রকাশের পর শুরু করা।
এ সময় প্রথম আলোর ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন ও যুব কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক মুনির হাসান বলেন, এখন আলাপ-আলোচনা করে উৎসব শুরুর জন্য সুবিধামতো সময় ঠিক করা হবে।
প্রস্তুতিমূলক সভায় বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা বিশ্ববিদ্যালয় উৎসব নিয়ে বিভিন্ন রকমের পরামর্শ তুলে ধরেন। ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পরিচালক (জনসংযোগ) আবু সাদাত পরামর্শ দেন উৎসবের সেমিনার বা শিক্ষা সংলাপে যে আলোচনা হয়, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদেরও রাখলে ভালো হয়।
ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের সহকারী পরিচালক জিনাত জোয়ার্দার বলেন, তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেছেন এই উৎসব বছরে একবার যথেষ্ট নয়, বছরে যাতে আরও বেশিবার করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যখন আলাদাভাবে এই ধরনের মেলা করে সেখানেও যেন প্রথম আলো সঙ্গে থাকে, সেই অনুরোধ জানান বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজির জনসংযোগ বিভাগের প্রধান মুহাম্মদ ইমতিয়াজ।
আইইউবিএটির উপপরিচালক মো. আল আমিন সিকদারের পরামর্শ প্রথম আলো জিপিএ-৫ প্রাপ্ত সংবর্ধনা দেওয়ার সময় যেমন সাড়া পড়ে, বিশ্ববিদ্যালয় উৎসবেও যেন তেমন সাড়া পড়ে, সেই রকম ব্যবস্থা করার। মূল উদ্দেশ্যে হলো বেশির ভাগ মানুষের কাছে পৌঁছানো।
ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির সহকারী পরিচালক মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন এই উৎসবে সবাই ভর্তি হবে, বিষয়টি এমন নয়। বরং এখান থেকে জেনে তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হয়। তাই কলেজগুলোয়ও এ বিষয়ে সচেতন করার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।
ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির পরিচালক (ভর্তি) নাজলা ফাতমী বলেন, এই ধরনের উৎসব বা মেলা আরও হয়েছে। কিন্তু প্রথম আলো ছাড়া আর একটিও ভালো লাগেনি।
জিপিএইচ ইস্পাতের হেড অব ব্র্যান্ড অ্যান্ড কমিউনিকেশন কুমার ফিলিপ বড়ুয়া বলেন একজন শিক্ষার্থী কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবে, এটি তাঁর জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। তাই একজন শিক্ষার্থী কীভাবে একটি ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারে, সে বিষয়ে সহযোগিতা করতে পারলে সেটি শিক্ষার্থীদের জন্য সুবিধা হয়।
প্রস্তুতিমূলক এই সভায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের ৩৪ জন প্রতিনিধি অংশ নেন। এ ছাড়া প্রথম আলোর কয়েকজন প্রতিনিধি অংশ নেন।