ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৭ শিক্ষার্থী বহিষ্কার, কারণ জানাল প্রশাসন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন মৃৎশিল্প বিভাগের জাহিদ শেখ ও মো. শাহরিন ইসলাম, ফলিত গণিত বিভাগের মো. আযহা ইসলাম, সংগীত বিভাগের মর্তুজা হাসান খান, ইতিহাস বিভাগের মো. আজিম মাহমুদ তওসিফ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মো. রিয়াদ মাল এবং ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের মো. আবদুল ওহেদ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন, অসদাচরণ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী বিভিন্ন অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সাত শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আজ মঙ্গলবার বলা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে ৬০ জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন

শৃঙ্খলা পরিষদের সভার সুপারিশ অনুযায়ী ৩ মার্চ রোববার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের সভায় বহিষ্কারের এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল সভায় সভাপতিত্ব করেন।

অপহরণ-ছিনতাইয়ে বহিষ্কার ৬

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মৃৎশিল্প বিভাগের সাময়িক বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী জাহিদ শেখ ও মো. শাহরিন ইসলাম শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের একজন শিক্ষার্থীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলে আটক রেখে তাঁর ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন এবং মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের নামে লালবাগ থানায় মামলা করেন। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাঁদের এ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়।

সাময়িক বহিষ্কৃত ফলিত গণিত বিভাগের মো. আযহা ইসলাম, সংগীত বিভাগের মর্তুজা হাসান খান, ইতিহাস বিভাগের মো. আজিম মাহমুদ তওসিফ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মো. রিয়াদ মাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তনে ঘুরতে আসা দুজন দর্শনার্থীর গতিরোধ করে এলোপাথাড়ি মারধর করে ৫ হাজার ৫০০ টাকা ছিনিয়ে নেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শাহবাগ থানায় মামলা করেন। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্ত এ চার শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ও মর্যাদা ক্ষুণ্ন, অসদাচরণ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী অভিযোগে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের মো. আবদুল ওহেদকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সাময়িক বহিষ্কারের চিঠি সংশ্লিষ্ট থানা, শিক্ষার্থীর স্থানীয় অভিভাবক এবং স্থায়ী ঠিকানায় পাঠানো হবে। বহিষ্কৃত এ সাত শিক্ষার্থী বহিষ্কারাদেশ চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয় হলে অবস্থান করতে পারবেন না। তাঁদের অপরাধের জন্য ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না’ মর্মে কারণ দর্শানো এবং সাত কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এ ছাড়া ক্যাম্পাসে ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকে চাঁদা গ্রহণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রক্টর অফিসের মো. শামীম হোসেনকে স্থায়ীভাবে চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে গত বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সত্যতা তদন্ত কমিটি কর্তৃক প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন

পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কৃত ৬০ শিক্ষার্থীর মধ্যে দুজনকে পরীক্ষাসহ তিন সেমিস্টার, ৪০ জনকে পরীক্ষাসহ দুই সেমিস্টার এবং ১৮ জনকে পরীক্ষাসহ এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

সিন্ডিকেট সভায় সহ–উপাচার্য (প্রশাসন) মুহাম্মদ সামাদ, সহ–উপাচার্য (শিক্ষা) সীতেশ চন্দ্র বাছারসহ সিন্ডিকেট সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন