শতাধিক প্রতিষ্ঠানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন আইবিএ গ্র্যাজুয়েটরা

দেশের প্রথম এবং একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ) সম্প্রতি ‘সাউথ এশিয়ান কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সিস্টেম’ (এসএকিউএস) স্বীকৃতি পেয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মান, সক্ষমতা, ভর্তি, শিক্ষাব্যবস্থা, গবেষণা ইত্যাদি বিষয় পর্যালোচনা করে এসএকিউএস স্বীকৃতি দেওয়া হয়। অ্যাসোসিয়েশন অব ম্যানেজমেন্ট ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউশনস ইন সাউথ এশিয়া (এএমডিআইএসএ) এ স্বীকৃতি দিয়ে থাকে। এটি বিশ্বে মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি হিসেবে পরিচিত। আইবিএর বিভিন্ন অর্জন ও প্রতিষ্ঠানটির নানা দিক নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন আইবিএর পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ এ মোমেন। তিনি সম্প্রতি এএমডিআইএসএর সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মোছাব্বের হোসেন

আইবিএর পরিচালক মোহাম্মদ এ মোমেন

প্রশ্ন :

প্রশ্ন: আইবিএ থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরা কোন কোন খাতে কাজ করছেন?

মোহাম্মদ এ মোমেন: আইবিএ সম্পর্কে ভুল ধারণা থাকার কারণে অনেকে বলে থাকেন, এখানকার স্নাতকেরা শুধু বহুজাতিক কোম্পানিতে চাকরি করেন। কিন্তু বিষয়টি ঠিক নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদ্‌যাপন উপলক্ষে আমরা একটি বই বের করেছিলাম। আইবিএর শিক্ষার্থীরা কে কোথায় আছেন সেই তথ্য নিয়ে। সেখানে সংগ্রহ করা ১০০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে তাঁরা উচ্চপদে কর্মরত। অনেক গ্র্যাজুয়েট আমলা হয়ে দেশের পলিসি মেকিংয়ে কাজ করছেন। আবার অনেকে উদ্যোক্তা হয়ে নামকরা কোম্পানি তৈরি করে বহু মানুষের কর্মসংস্থান করেছেন।

প্রশ্ন :

প্রশ্ন: কোন খাতে আইবিএর শিক্ষার্থীরা বেশি অবদান রাখছেন বলে মনে করেন?

মোহাম্মদ এ মোমেন: নির্দিষ্ট কোনো খাত নয়, দেশের প্রায় সব খাতে অবদান রেখে দেশ গড়তে কাজ করছেন আইবিএর শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে দেশের ২৩টি ব্যাংকের এমডি আইবিএর শিক্ষার্থী। এ ছাড়া সেনাবাহিনী ও পুলিশে অনেকে কর্মরত। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব এখানকার ছাত্র। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি থেকে শুরু করে অনেক প্রতিষ্ঠানে সিইও পদে দায়িত্ব পালন করছেন এখানকার গ্র্যাজুয়েটরা।

প্রশ্ন :

প্রশ্ন: আইবিএর স্নাতকদের উদ্যোক্তা হওয়ার হার কেমন?

মোহাম্মদ এ মোমেন: আইবিএ থেকে পাস করে অনেকে সফল উদ্যোক্তা হয়েছেন। বড় প্রতিষ্ঠান তৈরির পাশাপাশি অনেক মানুষের কর্মসংস্থান করেছেন তাঁরা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দেশীয় মুঠোফোন ব্র্যান্ড সিম্ফনির কর্ণধার, বিডিজবসের কর্ণধার, শপআপ ও টেন মিনিটস স্কুলের উদ্যোক্তারা আইবিএর শিক্ষার্থী।

ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ)

প্রশ্ন :

প্রশ্ন: আইবিএর শিক্ষাপদ্ধতির কোন বিষয়টি শিক্ষার্থীদের বেশি কাজে লাগে বলে মনে করেন?

মোহাম্মদ এ মোমেন: আইবিএতে প্রায় প্রতিদিন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ ব্যক্তি/বিখ্যাত ব্যক্তিরা অতিথি শিক্ষক হিসেবে ক্লাস নিতে আসেন। ফলে শিক্ষার্থীরা বইয়ের লেখাপড়ার পাশাপাশি বাইরের বিষয় সম্পর্কে বাস্তব ধারণা পান। শিক্ষকেরা নিয়মিত একটি নির্দিষ্ট কারিকুলাম অনুসরণ করে ক্লাস নেন। কিন্তু বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে যেসব অতিথি শিক্ষক আসেন, তাঁরা নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে ক্লাস নেন। তাঁরা নিজেদের জীবনের কথা বলেন। ফলে শিক্ষার্থীরা অনেক বিষয়ে জ্ঞানলাভের সুযোগ পান। বিষয়টি শিক্ষার্থীদের পরবর্তী জীবনে বেশি কাজে লাগে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতি সপ্তাহে বিভিন্ন ওয়ার্কশপ ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

প্রশ্ন :

প্রশ্ন: আইবিএর এখন পর্যন্ত অর্জনগুলো কী?

মোহাম্মদ এ মোমেন: এসএকিউএস স্বীকৃতি আইবিএর জন্য অনেক বড় স্বীকৃতি। কারণ, বাংলাদেশে আমরাই প্রথম বিজনেস স্কুল হিসেবে এ স্বীকৃতি পেলাম। এসএকিউএস স্বীকৃতি প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদল আমাদের এখানে অবস্থান করে এবং দুই বছর আমাদের কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করে এ স্বীকৃতি দিয়েছে। এ ছাড়া আমাদের শিক্ষার্থীরা দেশ-বিদেশে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে থাকে। ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত মোট ২৭৯টি পুরস্কার অর্জন করেছেন আইবিএর শিক্ষার্থীরা।