‘দোহাই আপনাদের, স্কুলগুলো খুলুন, এভাবে একটি প্রজন্ম বেড়ে উঠতে পারে না’
আফগানিস্তানের নারী অধিকারকর্মী মাহবুবা সিরাজ। তিনি নারীদের শিক্ষার ওপর তালেবানের নিষেধাজ্ঞা এবং নারীদের ওপর অন্যান্য নিষেধাজ্ঞাকে ‘অপরাধ’ এবং ‘জাতিবিদ্বেষ বা বর্ণবাদ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তালেবানদের আফাগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রকাশিত এক তথ্যচিত্রে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদের সাক্ষাৎকার নেন নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য এক সময় মনোনয়ন পেয়েছিলেন মাহবুবা সিরাজ। ১৫ আগস্ট আল–জাজিরা এ তথ্য চিত্র প্রকাশ করেছে।
সেখানে মাহবুবা তালেবানের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘দোহাই আপনাদের, অনুগ্রহ করে মেয়েদের স্কুলগুলো খুলে দিন। এটি অসম্ভব, এভাবে স্কুলে না গিয়ে একটি প্রজন্ম বেড়ে উঠতে পারে না।’
জাবিউল্লাহ মুজাহিদের নারী অধিকারকর্মী সিরাজকে বলেন, নারীশিক্ষার জন্য আপনার উদ্বেগ ‘ন্যায়সংগত’। কিন্তু তিনি বলেন, ‘স্কুলশিক্ষার্থীরা যদি তালেবান সরকারের বিরোধিতা শুরু করে’ তাহলে তা ‘আফগান সমাজকে অস্থিতিশীল’ করে তুলতে পারে।
তালেবান মুখপাত্র বলেন, ‘সমস্যা সমাধানে শিক্ষাবিদদের পরামর্শ আমলে নিয়ে আমরা যদি একমত না হই, তারা মনে করেন, আমরা ভুল পথে যাচ্ছি, তাহলে এটি বিভক্তি সৃষ্টি করতে পারে। সরকারের পতনও হতে পারে।’
ইউনেসকোর তথ্য অনুযায়ী, ২৫ লাখের বেশি, প্রায় ৮০ শতাংশ স্কুলগামী আফগান মেয়ে ও তরুণী ২০২১ সাল থেকে স্কুল যাচ্ছে না।
স্কুলে মেয়েদের যেতে না দেওয়ায় তালেবানের সিদ্ধান্তের ফলে গত ২০ বছরে নারীশিক্ষায় পিছিয়ে পড়েছে দেশটি। তালেবান নারীদের অধিকারের বিষয়টি ইসলামিক আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হলে তাঁরা সেটিকে সম্মান করে।
তালেবান নারীদের ওপর নানা বিধিনিষেধ আরোপ করে রেখেছে। নারীরা সাহায্য সংস্থায় কাজ করতে পারবেন না, বিউটি পার্লারগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, নারীদের পার্কে ঘোরাঘুরি নিষিদ্ধ এবং পুরুষ অভিভাবক ছাড়া ভ্রমণও করতে পারেন না নারীরা।
নারীদের অধিকার নিয়ে তালেবানদের এ নীতি প্রত্যাখ্যান করেছে অনেক পশ্চিমা এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ।
সিরাজ মাহবুব আফগান মুখপাত্রকে সতর্ক করে বলেছেলে যে নারীদের বিষয়ে তালেবানের নীতি প্রত্যাহার করা না হলে বিশ্ব তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, আর এতে করে আফগনিস্তানের জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।