করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই খুলবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর টানা তৃতীয় মেয়াদের সরকারের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে এই ভাষণ দেন
ছবি: পিআইডি

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ রাখতে হচ্ছে। তবে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ খুলে দেওয়া হবে।

টানা তৃতীয় মেয়াদে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের চলমান উন্নয়ন ও অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করার যে কোন ধরনের অপচেষ্টা সম্পর্কে সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর এই ভাষণ বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বেশ কয়েকটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এবং রেডিওতে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। শেখ হাসিনা চতুর্থবার এবং টানা তৃতীয় বারের মতো ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। এর আগে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তাঁর দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নিরংকুশ বিজয় অর্জন করে।

বাংলাদেশ দ্রুত টিকা নিয়ে আসার সব ধরনের প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে। টিকা আসার পর পরই চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যসহ সম্মুখসারির যোদ্ধারা অগ্রাধিকারভিত্তিতে টিকা পাবেন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের ৭ হাজার ৬২৪টি এমপিও-ভুক্ত মাদ্রাসায় ১ লাখ ৪৮ হাজার ৬১ জন শিক্ষক-কর্মচারিকে প্রতিমাসে ২৭৬ কোটি টাকা বেতন ভাতা দেওয়া হচ্ছে। ২০২০ সালে নতুন করে ৪৯৯টি মাদ্রাসা এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। ১ হাজার ৫১৯টি এবতেদায়ী মাদ্রাসার ৪ হাজার ৫২৯ জন শিক্ষককে ত্রৈমাসিক ৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, করোনার কারণে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখাসহ বছরের প্রথম দিন সারাদেশে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত প্রায় ২ কোটি টাকা শিক্ষার্থীর মধ্যে ২ হাজার ৯৫৮ কোটি টাকার বৃত্তি-উপবৃত্তি বিতরণ করা হয়েছে।

৭ হাজার ৬২৪টি এমপিও-ভুক্ত মাদ্রাসায় ১ লাখ ৪৮ হাজার ৬১ জন শিক্ষক-কর্মচারিকে প্রতিমাসে ২৭৬ কোটি টাকা বেতন ভাতা পাচ্ছেন

শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাসের মহামারির কারণে এক গভীর সঙ্কটের মধ্য দিয়ে আমাদের বিগত ২০২০ সাল অতিক্রম করতে হয়েছে। সেই সঙ্গে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান এবং উপর্যুপরি বন্যা আমাদের অর্থনীতির উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। আমরা সেসব ধকল দৃঢ়তার সঙ্গে কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু, করোনাভাইরাস-জনিত সঙ্কট থেকে বিশ্ব এখনও মুক্ত হয়নি। তিনি বলেন, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে বাংলাদেশে এখনও সংক্রমণ এবং মৃত্যুহার অনেক কম। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি এই মহামারি নিয়ন্ত্রণে রাখার। বাংলাদেশও দ্রুত টিকা নিয়ে আসার সব ধরনের প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, টিকা আসার পর পরই চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যসহ সম্মুখসারির যোদ্ধাদের অগ্রাধিকারভিত্তিতে টিকা প্রদান করা হবে।

কোভিড-১৯ মোকাবিলায় চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী এবং মাঠ প্রশাসনের সদস্যসহ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ যারা দরিদ্র-অসহায় মানুষের সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন তাঁদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। যাঁদের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা মোকাবেলায় তাঁর সরকার এ পর্যন্ত ১ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে যা মোট জিডিপি’র ৪ দশমিক ৩ শতাংশ। পাশপাশি বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রায় আড়াই কোটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠিকে নগদ অর্থসহ বিভিন্ন সহায়তার আওতায় আনা হয়েছে এবং সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।