নিরাপদ, নারীবান্ধব ক্যাম্পাস

সমমানের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় এখানে খরচও বেশ কম। ক্যাম্পাসের ভেতরে আমাদের নিজস্ব ডে কেয়ার সেন্টার আছে। ফলে মা হওয়ার পরও মেয়েরা নির্বিঘ্নে এখানে পড়তে পারছে।

যে কারণে আলাদা

অধ্যাপক ড. পারভীন হাসান, উপাচার্য, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি

পুরান ঢাকায় অনেক পরিবার বেশ রক্ষণশীল। তারা তাদের মেয়েদের ছেলেদের সঙ্গে পড়তে দিতে স্বস্তি বোধ করে না। অনেকে পয়সা খরচ করে মেয়েকে বিশ্ববিদ্যালয়েই দিতে চান না। আবার অনেক পরিবারে মেয়েদের তাড়াতাড়ি বিয়ে হয়ে যায়। এসব বিবেচনায় এ এলাকায় আমরাই আলাদা করে পাঠদানের ব্যবস্থা করেছি। সমমানের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় এখানে খরচও বেশ কম। ক্যাম্পাসের ভেতরে আমাদের নিজস্ব ডে কেয়ার সেন্টার আছে। ফলে মা হওয়ার পরও মেয়েরা নির্বিঘ্নে এখানে পড়তে পারছে। সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি না থাকলে এই এলাকার অনেক মেয়েরই হয়তো পড়ালেখা করা হতো না। আমি মনে করি, এই বৈশিষ্ট্যই আমাদের সেরা করে তুলেছে। ঢাকার কেন্দ্রস্থলে আমরাই ক্যাম্পাসে মেয়েদের জন্য একটি নিরাপদ, নারীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।

আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততা

দেশের বাইরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ, সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি বেশ গুরুত্ব দেয়। যেমন ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত ওয়েবিনারে পশ্চিমবঙ্গের ডায়মন্ড হারবার উইমেন্স ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক অপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায় অংশগ্রহণ করবেন। অন্যদিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর উইমেন্স স্টাডিজ এবং ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অব বেঙ্গল স্টাডিজের সঙ্গে যৌথভাবে একটি ওয়েবিনারের আয়োজন করা হচ্ছে। এ ছাড়া কাবুল ইউনিভার্সিটিসহ আফগানিস্তানের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার বিষয়ে আলোচনা চলছে।

শিক্ষক ও গবেষণা

আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা প্রত্যেকেই দক্ষ ও নিবেদিতপ্রাণ। নারীশিক্ষার যে মহান ব্রত নিয়ে আমরা পথ চলছি, আমাদের শিক্ষকেরাও একই আদর্শে অনুপ্রাণিত। তাঁরা সব সময় শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন অনুযায়ী বাড়তি সময় ও যত্ন দিয়ে সহযোগিতা করেন। আমাদের সব বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মধ্যে আন্তরিকতা ও হৃদ্যতা আছে। গবেষণায় আমরা সব সময় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিই। গবেষণা ও প্রকাশনাকে শিক্ষকদের মূল্যায়ন ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়।

প্রাঞ্জল প্রাক্তন

পাঠদানের পাশাপাশি আমরা শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তুলতে চেষ্টা করি। আমরা চাই, এখান থেকে পাস করে বের হওয়ার পর প্রত্যেক মেয়ে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠুক। ফলে আমাদের এখানে পাঠদানের প্রক্রিয়াকে খুব গুরুত্ব দেওয়া হয়। এ জন্যই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী এখন সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে ভালো প্রতিষ্ঠানে ও গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকরি করছে। কয়েকজনকে আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবেও নিয়েছি। এখান থেকে পাস করে অনেকে বৃত্তি নিয়ে বিদেশে পড়ছে। আমাদের প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষকেরাও মেয়েদের কর্মসংস্থানের জন্য নানাভাবে সহযোগিতা করেন। যেখানেই আমাদের মেয়েরা শিক্ষানবিশি কিংবা চাকরি করছে, খোঁজ নিলে সব সময় আমরা তাদের সম্পর্কে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়াই পাই। তারা বলে, আমাদের মেয়েরা কাজের ব্যাপারে খুব আন্তরিক, যত্নশীল। শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক জ্ঞান বাড়ানোর জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি। এই যোগাযোগের ফলে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ, শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ে। বিশেষ করে দীপ্ত টিভি, সিসনোভা ইনফরমেশন সিস্টেমস লিমিটেড এবং কাজী ফার্মস লিমিটেড এ ব্যাপারে বিশেষ সহযোগিতা করে।