'মঙ্গলতরী'র অর্জন ও আক্ষেপ

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তৈরি রোবট `মঙ্গলতরী`
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তৈরি রোবট `মঙ্গলতরী`

‘ইউনিভার্সিটি রোভার চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতায় তৃতীয় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়’—শিরোনামটা এমন হতে পারত। হলো না, কারণ কোভিড-১৯–এর কারণের রোবোটিকসবিষয়ক এই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাটির চূড়ান্ত পর্ব এ বছর বাতিল করা হয়েছে। তবে আয়োজকদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তালিকায় দেখা যাচ্ছে, ফাইনালের জন্য নির্বাচিত ৩৬টি দলের মধ্যে নম্বরের দিক দিয়ে তৃতীয় অবস্থানে ছিল ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তৈরি রোবট—‘মঙ্গলতরী’।

শিক্ষার্থীদের তৈরি রোবট একদিন মঙ্গল গবেষণায় নভোচারীদের কাজে আসবে, এই প্রত্যাশা থেকেই ২০০৭ সাল থেকে আয়োজিত হচ্ছে ইউনিভার্সিটি রোভার চ্যালেঞ্জ (ইউআরসি)। আন্তর্জাতিক পর্যায়ের রোবটিকসের প্রতিযোগিতাগুলোর মধ্যে এই আয়োজনটির বিশেষ মর্যাদা আছে। মার্স সোসাইটি আয়োজিত প্রতিযোগিতার মূল পর্ব অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের উটাহ প্রদেশের মার্স ডেসার্ট রিসার্চ স্টেশনে। প্রতিযোগীদের পাঠানো ‘সিস্টেম এক্সেপটেন্স রিভিউ (এসএআর) প্যাকেজ’–এর ভিত্তিতে ফাইনালের জন্য নির্বাচন করা হয় ৩৬টি দল। এ বছর বিশ্বের নানা দেশ থেকে ৯৩টি দল অংশগ্রহণ করলেও এসএআর প্যাকেজ পাঠাতে সক্ষম হয়েছিল ৬৮টি দল। নির্বাচিত ৩৬টি দলের মধ্যে ৯৩ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে ছিল ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়।

`মঙ্গলতরী`র পেছনের কারিগরেরা।
`মঙ্গলতরী`র পেছনের কারিগরেরা।

২০১৭ সাল থেকে ইউনিভার্সিটি রোভার চ্যালেঞ্জে অংশ নিচ্ছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মঙ্গলতরী’। কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ খলিলুর রহমানের নেতৃত্বে এ বছর ভালো ফলের লক্ষ্য নিয়ে বেশ আটঘাট বেঁধে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ জন শিক্ষার্থীর একটি দল।


কথা হলো দলটির 'কন্ট্রোল অ্যান্ড সফটওয়্যার সিস্টেমস' বিভাগের প্রধান, কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশলের শিক্ষার্থী আশিক আদনানের সঙ্গে। তিনি বলেন, '১৭ থেকে ২০ জানুয়ারি ভারতে ইন্ডিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অংশ নিয়ে অনেক সমস্যার সমাধান আমরা করতে পারিনি। ফলে, সপ্তম হয়েছিলাম। যেটা আমাদের প্রত্যাশার তুলনায় বেশ খারাপ রেজাল্ট বলা যায়। তাই দেশে ফেরার পর ইউআরসিতে ভালো করার জন্য একরকম জেদ চেপে গিয়েছিল। দু-একটা সমস্যা ছাড়া প্রায় সব সমস্যার সমাধানই আমরা করে ফেলেছিলাম। সেই জন্যই হয়তো পয়েন্ট ভালো এসেছে।'


আশিক জানালেন, ফাইনালে অন্তত সেরা পাঁচের মধ্যে থাকার প্রত্যয় ছিল তাঁদের। কিন্তু যেহেতু ফাইনাল অনুষ্ঠিত হচ্ছে না, তাই আক্ষেপ রয়েই গেল। তবু এই প্রচেষ্টার জন্য 'মঙ্গলতরী' দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ভিনসেন্ট চ্যাং।