রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হলেন আবেদা সুলতানা

অধ্যাপক ড. আবেদা সুলতানা
ছবি: সংগৃহীত

উত্তরের অন্যতম বিদ্যাপীঠ রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজ। শিক্ষার মান উন্নত রাখার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মনন, সৃজনশীলতা, শৃঙ্খলা ও মানবিক বিকাশের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাটি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে। এমন প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দিয়েছেন অধ্যাপক ড. আবেদা সুলতানা। তিনি বাংলাদেশ ইতিহাস অলিম্পিয়াড জাতীয় কমিটি সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য।

গত শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) আবেদা সুলতানা আনুষ্ঠানিকভাবে রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজে নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন। ওই দিন তিনি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের উদ্দেশে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।

আবেদা সুলতানা ১৯৯১ সালে ২৬ জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গায় দর্শনা সরকারি কলেজে শিক্ষকতা দিয়ে শুরু করেন কর্মজীবন। এরপর তিনি ১২টি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো হলো রাজশাহী কলেজে, যশোরে এম এম কলেজ, নরসিংদী সরকারি কলেজ, গাজীপুরে ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি কলেজ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি তিতুমীর কলেজ।

রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেওয়ার অনুভূতি ব্যক্ত করে আবেদা সুলতানা বলেন, করোনাকালের এই সময়টা শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাস করছে, সেটা যেন আরও ভালোভাবে করতে পারে সেই প্রচেষ্টা থাকবে। এ ছাড়া এই সময়ে তাদের মানসিক উন্নয়নের জন্য অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য দিয়ে তাদের আরও বেশি উদ্দীপ্ত করতে হবে। করোনা শেষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে যে কাজটা বেশি গুরুত্ব দিয়ে করার জন্য আমাদের শিক্ষকদের নির্দেশ দেব, তা হলো শিক্ষার্থীদের মানবিক, সাংস্কৃতিক ও অসাম্প্রদায়িক মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নানা রকমের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড জোরদার করা।

অধ্যক্ষ আবেদা সুলতানা আরও বলেন, ‘আমার অঙ্গীকার থাকবে শিক্ষার্থীরা যাতে করে মেধা, মনন, সহনশীলতা, নেতৃত্ব, সৃজনশীলতা, শৃঙ্খলা ও দক্ষতার ভিত্তিতে মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ, দেশপ্রেমিক, অসাম্প্রদায়িক ও সুযোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে। কেবল জিপিএ-৫ নয়, বরং পিতৃমাতৃভক্তিবোধ, ধর্মীয় অনুশাসনের যথাযথ চর্চা, বাঙালি জনপদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের ধারক ও বাহক, প্রতিবেশীর প্রতি দায়িত্বশীলতা, দরিদ্র ও বেদনার্ত মানুষের প্রতি কর্তব্যনিষ্ঠা সর্বোপরি সুগভীর দেশপ্রেম বুকে ধারণ করে কাঙ্ক্ষিত নির্মল মানুষ হিসেবে প্রতিটি শিক্ষার্থী আত্মবিকাশ করতে পারে।

‘সাঁওতাল সংস্কৃতিতে খ্রিষ্টধর্মের প্রভাব’ শীর্ষক শিরোনামে আবেদা সুলতানা পিএইচডি করেন। এ ছাড়া তিনি নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তিনি সব সময় মনে করেন, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, মুক্তচিন্তা ও শৃঙ্খলা চর্চার মাধ্যমে মানুষের মানবিক বিকাশ ঘটে। সত্যিকার অর্থে জীবনে অর্থ খুঁজে পাওয়া যায়।

কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে কাজ করার ব্যাপারে আবেদা সুলতানা বলেন, শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করার অনেক কিছু স্বপ্ন আছে, যা এখন বাস্তবায়ন করতে পারব। একই সঙ্গে প্রশাসনিক কাজগুলো দায়িত্ব নিয়ে সম্পন্ন করতে সক্ষম হব। আগে হয়তো অনেক কাজ করতে পারতাম না, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ছিল না, এখন তা করতে পারব। শিক্ষকতা জীবনে শ্রেষ্ঠতম স্থান হলে অধ্যক্ষ হিসেবে কাজ করা। এটা আমার কাছে অনেক আনন্দ ও সৌভাগ্যের ব্যাপার। এই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা থাকবে।