শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে প্রতীকী ক্লাস রাজশাহীতে

দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অবিলম্বে খুলে দেওয়ার দাবিতে রাজশাহীতে শিক্ষার্থীরা প্রতীকী ক্লাস ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষক, অভিভাবক, সাংবাদিক নেতা ও ছাত্রনেতারাও অংশ নেন কর্মসূচিতে
ছবি: প্রথম আলো

দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অবিলম্বে খুলে দেওয়ার দাবিতে রাজশাহীতে শিক্ষার্থীরা প্রতীকী ক্লাস ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। বুধবার (২৬ মে) বেলা ১১টায় নগরের সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতীকী ক্লাস ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এতে তাঁদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষক, অভিভাবক, সাংবাদিক নেতা ও ছাত্রনেতারাও অংশ নেন। এর আগে গত সোম ও মঙ্গলবার একই দাবিতে একই স্থানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্রুত খুলে দেওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।

ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচিতে রাজশাহীর বেসরকারি নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ইশতিয়াক আহম্মেদ সভাপতিত্ব করেন। সঞ্চালনা করেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জান্নাতুল সাবিরা।

শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ। তিনি প্রতীকী ক্লাস নিয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। তিনি প্রতীকী ক্লাসে ‘সমসাময়িক বাংলাদেশের পরিস্থিতি ও করোনা’ বিষয়ে ক্লাস নেন। তিনি বলেন, গণপরিবহনসহ সবকিছু খুলে দিয়েছে সরকার। সেই পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা সচেতন। তাঁরা যথাসম্ভব স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে যে ক্লাসে অংশ নিতে পারেন, সেটা আজকে শিক্ষার্থীরা প্রতীকীভাবে দেখিয়েছেন। আশা করি, এ বিষয়ে সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। এভাবে আর যেন শিক্ষার্থীদের রাস্তায় এসে দাঁড়াতে না হয়। তারা কালক্ষেপণ না করে দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেবে।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতীকী ক্লাসে অংশ নেন শিক্ষার্থীরা
ছবি: প্রথম আলো

ঘণ্টাব্যাপী কর্মসূচিতে প্রতীকী ক্লাসে গণিত ক্লাস নেন নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী নাদিম সিনা, ইংরেজি ক্লাস নেন রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী জাকারিয়া। এতে বক্তব্য দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহব্বত হোসেন মিলন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ত্বকী ওয়াসিফ।

এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিতে রাজশাহীতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতীকী ক্লাস ও অবস্থান কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করেন সাবেক রাকসু ভিপি রাগিব আহসান মুন্না, রাজশাহী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আসলাম-উদ-দৌলা, ছাত্রনেতা তামিম শিরাজী, আব্দুর রহমানসহ সর্বস্তরের নাগরিকেরা।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ১৪ মাস ধরে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ। লকডাউনের মধ্যেও শপিং মল, মার্কেট, অফিসসহ গণপরিবহন খুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আশ্চর্যজনক হচ্ছে সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রেখেছে। অথচ শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে সর্বোচ্চ সচেতন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে সরকার বেকায়দায় পড়তে পারে। এ কারণে করোনার দোহাই দিয়ে তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে। এই দীর্ঘ ১৪ মাসে অনেক শিক্ষার্থী ঝরে গেছেন। অনেক বাল্যবিবাহ হয়ে গেছে দেশে। মানসিক ও অর্থনৈতিক চিন্তায় অনেক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা পর্যন্ত করেছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা ছাড়া শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের দ্রুত টিকা দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে হবে সরকারকে। শিক্ষার্থীরা যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাসে উপস্থিত হয়ে ক্লাস করতে পারেন, তার দৃষ্টান্ত আজকে তাঁরা এই কর্মসূচির মাধ্যমে রেখেছেন। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিন।