হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে এনটিআরসিএর আবেদনের শুনানি নিয়মিত বেঞ্চে

শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করে মেধাতালিকার ভিত্তিতে যেকোনো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পাওয়া যাবে
ফাইল ছবি

নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সনদধারী ও অবমাননার আবেদনকারীদের উচ্চ আদালতের রায়ের নির্দেশনা অনুসারে চার সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগের সুপারিশ করতে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষকে (এনটিআরসিএ) হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশ স্থগিত হয়নি। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে এনটিআরসিএর করা আবেদন ২৭ জুন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। চেম্বার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।

এর আগে গত ৩১ মে হাইকোর্ট এক আদেশে নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সনদধারী ও অবমাননার আবেদনকারীদের রায়ের নির্দেশনা অনুসারে চার সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগের সুপারিশ করতে এনটিআরসিএকে নির্দেশ দেন। এ সময়ে বিজ্ঞপ্তির (এনটিআরসিএ-তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি) কার্যক্রম আবেদনকারীদের (অবমাননার আবেদনকারী) ক্ষেত্রে স্থগিত থাকবে বলা হয়।

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

এই আদেশের বিরুদ্ধে এনটিআরসিএ আপিল বিভাগে আবেদন করে, যা আজ চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। আদালতে এনটিআরসিএর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফিদা এম কামাল ও কামরুজ্জামান ভূইয়া। অন্যদিকে হাইকোর্টে অবমাননার আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও মহিউদ্দিন মো. হানিফ।

আইনজীবীদের তথ্যমতে, এর আগে সনদধারীদের নিয়োগ বিষয়ে ২০১৭ সালের ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট সাত দফা নির্দেশনাসহ রায় দেন। পঞ্চম দফা ছিল সম্মিলিত মেধাতালিকা অনুযায়ী রিট আবেদনকারীদের শূন্য পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করবে এনটিআরসিএ। দীর্ঘ সময় পেরোলেও রায়ের নির্দেশনা বাস্তবায়ন না হওয়ায় রিট আবেদনকারী তথা নিয়োগপ্রত্যাশী শিক্ষকেরা এটিআরসিএর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পৃথক আদালত অবমাননার আবেদন করেন। নিয়োগপ্রত্যাশী নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রায় আড়াই হাজার প্রার্থী পৃথক আবেদন করেন। এর শুনানি নিয়ে বিভিন্ন সময় হাইকোর্ট আদালত অবমাননার রুল দেন।

আইনজীবীরা জানান, রুলের পর আবেদনকারীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের ৮ মার্চ হাইকোর্ট পঞ্চম দফা বাস্তবায়নে এনটিআরসিকে ১৫ দিন সময় বেঁধে দেন। এ সত্ত্বেও আদেশ বাস্তবায়ন না করে এনটিআরসি ৩০ মার্চ তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে, যা আবেদনের মাধ্যমে আদালতে তুলে ধরা হয়। পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৬ মে হাইকোর্ট এক আদেশে সাত দিনের মধ্যে অবমাননার আবেদনকারীদের নিয়োগের সুপারিশ করতে এনটিআরসিএকে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে এমপিওভুক্ত ও নন-এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শূন্য পদ পূরণে ৫৪ হাজার ৩০৪ জন শিক্ষক নিয়োগের জন্য গত ৩০ মার্চ এনটিআরসিএর দেওয়া তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।

এর ধারাবাহিকতায় ৩১ মে হাইকোর্ট তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম স্থগিতসংক্রান্ত ৬ মে দেওয়া আদেশ সংশোধন করে ওই আদেশ দেন। এর বিরুদ্ধে এনটিআরসিএ আপিল বিভাগে আবেদন করে, যা আজ চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে।

হাইকোর্টে পৃথক তিনটি আবেদনে ১ হাজার ২০০ নিয়োগপ্রত্যাশী শিক্ষকের আইনজীবী মহিউদ্দিন মো. হানিফ প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাইকোর্ট সনদধারী প্রায় আড়াই হাজার প্রার্থীকে চার সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগের সুপারিশ করতে এনটিআরসিএকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাঁদের ক্ষেত্রে তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি স্থগিত থাকবে বলেছেন আদালত।

অর্থাৎ আড়াই হাজার জনকে নিয়োগের জন্য পদ শূন্য রাখতে হবে। এই আদেশ স্থগিত চেয়ে এনটিআরসিএ আবেদন করে। চেম্বার আদালত স্থগিতাদেশ না দিয়ে এনটিআরসিএর আবেদনটি ২৭ জুন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়েছেন। ফলে আপাতত হাইকোর্টের আদেশ বহাল থাকছে।’