মো. রকুনুজ্জামান চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি কলেজ থেকে ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। গত ৮ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত ফলাফল দেখে তাঁর মন খারাপ হয়েছিল। কারণ, উচ্চতর গণিতে তিনি পাস করতে পারেননি। পরে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে ফলাফল পুনর্নিরীক্ষণের জন্য আবেদন করেন।

আজ শুক্রবার পুনর্নিরীক্ষণের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। পুনর্নিরীক্ষণে রকুনুজ্জামান পাস করেছেন। অবশ্য তিনি একা নন, তাঁর মতো এমন আরও ৭৫ শিক্ষার্থী ফেল থেকে পাস করেছেন। তাঁরা কেউ ফেল করেছিলেন উচ্চতর গণিতে, কেউ জীববিজ্ঞানে, কেউ ইংরেজিতে। পাস করে এসব শিক্ষার্থী বেজায় খুশি।

এবারের এইচএসসি পরীক্ষা হয়েছিল গত নভেম্বরে। সাধারণত এপ্রিল মাসে এ পরীক্ষা হয়। তবে করোনা ও বন্যার কারণে পরীক্ষা একাধিকবার পেছানো হয়েছিল। আর ৮ ফেব্রুয়ারি ফলাফল প্রকাশিত হয়। এ ছাড়া এ বছর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি ছাড়া ১২টি পত্রে পরীক্ষা হয়।

আজ চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পুনর্নিরীক্ষণের ফলাফলে দেখা যায়, ১২ হাজার ২৩ শিক্ষার্থী পুনর্নিরীক্ষণের জন্য আবেদন করেছিলেন। ৩৯ হাজার ৪৪টি উত্তরপত্রের জন্য আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে ৭৭৭টি উত্তরপত্র পরিবর্তন হয়। ফলাফল পরিবর্তন হয়েছে ২৮৬ জনের। সিজিপিএ বেড়েছে ৩৫৭ জনের। গ্রেড পরিবর্তন হয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৫৭ জন।

এবার চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ৯৩ হাজার ৯৯৭ জন। এর মধ্যে পরীক্ষা দিয়েছেন ৯১ হাজার ৯৬০ জন। পাস করেছেন ৭৪ হাজার ৩২ জন। পাসের হার ৮০ দশমিক ৫০। ফলাফল পুনর্নিরীক্ষণের আগপর্যন্ত জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ১২ হাজার ৬৭০ শিক্ষার্থী।

করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে ২০২০ সালে এইচএসসি পরীক্ষা হয়নি। তখন পরীক্ষা ছাড়া ভিন্নভাবে মূল্যায়ন করা হয়েছিল। এতে সব শিক্ষার্থী পাস করেছিলেন। ২০২১ সালে সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচিতে শুধু বিভাগভিত্তিক তিনটি বিষয়ের ছয়টি পত্রে পরীক্ষা নেওয়া হয়। কিন্তু এবার একটি ছাড়া বাকি সব বিষয়েই পরীক্ষায় বসেন শিক্ষার্থীরা। এরপরও চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৮০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। স্বাভাবিক সময়ের হিসাবে এবারই সবচেয়ে ভালো ফল করেছেন চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীরা।

বোর্ড সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে এইচএসসিতে চট্টগ্রামে পাসের হার ছিল ৬২ দশমিক ৭৩। ২০১৯ সালে ছিল ৬২ দশমিক ১৯ শতাংশ। এরপর করোনার কারণে ২০২০ সালে পরীক্ষাই হয়নি। ২০২১ সালে চট্টগ্রামে পাসের হার ছিল ৮৯ দশমিক ৩৯।