শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও শিক্ষকেরা নিয়মিত উপস্থিত না থাকলে ব্যবস্থা: মাউশি

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)

কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও শিক্ষক নিয়মিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিত না থেকে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত করছেন বলে জানিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। এ জন্য প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করতে পরিচালনা কমিটিকে সক্রিয় তদারকির নির্দেশ দিয়েছে মাউশি। আর শিক্ষকদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের কার্যকর ভূমিকা নিতে বলেছে সংস্থাটি।

আজ মঙ্গলবার এ বিষয়ে নির্দেশনাপত্র জারি করে মাউশি। এতে বলা হয়, এই নির্দেশনাগুলো প্রতিপালনে কোনো ব্যত্যয় ঘটলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি, প্রতিষ্ঠানপ্রধান ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মাউশি এমন সময়ে এই নির্দেশনা দিল, যখন মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে ক্লাস বন্ধ রেখে হাজারো শিক্ষক জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।

অবশ্য মাউশির পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেছেন, শিক্ষকদের এই আন্দোলনের সঙ্গে এই নির্দেশনাপত্রের কোনো সম্পর্ক নেই। তাঁরা সময়ে সময়ে বিভিন্ন নির্দেশনা দেন। তাঁদের অধীন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই নির্দেশনা দিয়েছেন। হয়তো এটি কাকতালীয়ভাবে এমন সময়ে হয়ে গেছে।

মাউশির আদেশে বলা হয়, নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রম পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চলতি বছর থেকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন নির্ভর করছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের কার্যকর ও দায়িত্বশীল ভূমিকার ওপর। এর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান, শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটি বা গভর্নিং বডি। দৈনন্দিন শিখন-শেখানো ও মূল্যায়ন কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণে শিক্ষকদের এবং তা পর্যবেক্ষণে প্রতিষ্ঠানপ্রধানের নিয়মিত উপস্থিতি অপরিহার্য। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও শিক্ষক নিয়মিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিত না থেকে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত করছেন। পাশাপাশি এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির কোনো নজরদারি না থাকায় নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

এ ছাড়া কোভিড-১৯ অতিমারির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়নি। ফলে এখন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ক্লাস নেওয়াসহ গভীর নজর দেওয়া হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানপ্রধান ও শিক্ষকদের অনিয়মিত উপস্থিতি এই কার্যক্রমসহ শিক্ষার সামগ্রিক পরিবেশ ক্ষুণ্ন করছে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ওপরের দুটি নির্দেশনাসহ মোট পাঁচটি নির্দেশনা দিয়েছে মাউশি। বাকি নির্দেশনাগুলো হলো কোভিড-১৯ অতিমারির কারণে শিক্ষার্থীদের শিখনের ঘাটতি পূরণে গৃহীত বিশেষ ব্যবস্থা কার্যকর রাখা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রচারমাধ্যমে কোনো মিথ্যা ও উসকানিমূলক প্রচারণায় অংশগ্রহণ না করা এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা।

আরও পড়ুন