জকসু নির্বাচন
‘মওলানা ভাসানী ব্রিগেড’ প্যানেলের ৪০ হাজার প্রচারপত্র উধাওয়ের অভিযোগ, শাস্তি ও ক্ষতিপূরণের দাবি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনে বাম জোট-সমর্থিত ‘মওলানা ভাসানী ব্রিগেড’ প্যানেলের ২১ প্রার্থীর প্রায় ৪০ হাজার প্রচারপত্র হারিয়ে যাওয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্যানেলের প্রার্থীরা। সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানানো হয়েছে।
আজ শুক্রবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে ‘মওলানা ভাসানী ব্রিগেড’ প্যানেলের সমাজসেবা ও শিক্ষার্থী কল্যাণ সম্পাদক আমরিন জাহান অপি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জকসু নির্বাচনের তারিখ সন্নিকটে। এমন সময়ে তাঁরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও উদ্বেগজনক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন। এসব অভিজ্ঞতা নির্বাচনের সামগ্রিক চরিত্র ও স্বচ্ছতা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণা ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। গতকাল বড়দিন উপলক্ষে ক্যাম্পাসে ছুটি থাকলেও শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে আনাগোনা ছিল এবং মেস ও বাসায় অনেক শিক্ষার্থীর কাছে যাওয়ার সুযোগ ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে মওলানা ভাসানী ব্রিগেডের প্রার্থীরা বলেন, তাঁরা গতকাল দুপুরে ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখেন, অবকাশ ভবনের প্রবেশমুখের ভেতরে সিঁড়ির পাশে বান্ডিল করে রাখা ২১ জন প্রার্থীর ৪০ হাজারের বেশি প্রচারপত্র উধাও হয়ে গেছে। যেহেতু ছাত্রসংগঠনগুলোর নিজস্ব কোনো অফিস নেই, তাই প্রার্থীরা তাঁদের প্রচারপত্র ক্যাম্পাসের বিভিন্ন কর্নারে সংরক্ষণ করেন। পরে প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তাঁরা কোনো স্পষ্ট উত্তর পাননি। পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে ক্যাম্পাস পরিষ্কার করার সময় পরিচ্ছন্নতা দপ্তরের কিছু কর্মী প্রচারপত্রগুলো সরিয়ে নিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, অনেক ভোগান্তির পর তাঁরা সংশ্লিষ্ট পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের চিহ্নিত করেছেন এবং প্রচারপত্রগুলোর একটি অংশ উদ্ধার করতে পেরেছেন। তবে তাঁরা বিশেষভাবে দুটি বিষয় লক্ষ করেছেন। প্রথমত, ক্যাম্পাসে অন্যান্য প্যানেলের প্রচারপত্র ছড়িয়ে থাকলেও সেগুলোয় কোনো হস্তক্ষেপ হয়নি; শুধু তাঁদের প্রচারপত্রই উধাও হয়েছে। দ্বিতীয়ত, উদ্ধার হওয়া প্রচারপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে যে একাধিক সম্ভাবনাময় প্রার্থীর প্রচারপত্র সম্পূর্ণ অনুপস্থিত।
মওলানা ভাসানী ব্রিগেড প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী গৌরব ভৌমিক বলেন, ‘আমরা এই ঘটনাকে কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখছি না। একই সঙ্গে এটাও স্পষ্টভাবে বলতে চাই, নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারপত্র সংরক্ষণ করা প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। অথচ উভয় পক্ষের এমন দায়িত্বহীনতায় আমাদের নির্বাচনী প্রচারণা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
এই প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী ইভান তাহসীভ বলেন, ‘আমরা এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং একই সঙ্গে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি বিশেষ কিছু প্রার্থীর প্রচারপত্র পরিকল্পিতভাবে উধাও হওয়ার ঘটনায় আমরা গভীর সন্দেহ প্রকাশ করছি। এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে একটি নিরপেক্ষ ও গভীর তদন্তের জোর দাবি জানাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে ‘মওলানা ভাসানী ব্রিগেড’ প্যানেলের অন্য প্রার্থীরাও উপস্থিত ছিলেন।