ভালো ফলের চাপে শিক্ষার্থীদের জীবন বিপন্ন করা হচ্ছে: শিক্ষা উপমন্ত্রী

জাতীয় দিবসগুলোয় বিভিন্ন সৃজনশীল কাজে বিজয়ী শিক্ষার্থীদের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অতিথিরা। ২২ মে, ঢাকা
ছবি: শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সৌজন্যে

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, মুখস্থ বিদ্যা দিয়ে আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সম্ভব নয়। ভবিষ্যতে মূল দক্ষতাই হবে শিখতে পারার দক্ষতা। সেখানে একজন শিক্ষার্থীর যোগাযোগের দক্ষতা, সূক্ষ্ম চিন্তা, সমস্যার সমাধান ও অনেকের সঙ্গে কাজ করার দক্ষতা থাকতে হবে।

জাতীয় দিবসগুলোয় বিভিন্ন সৃজনশীল কাজে বিজয়ী শিক্ষার্থীদের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে মাধ্যমিক (দশম শ্রেণি) পর্যন্ত সব শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এ অনুষ্ঠান হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।

একই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, সৃজনশীল কাজে ঢাকার বাইরের শিক্ষার্থীরা যেভাবে জড়িত, ঢাকা কিংবা চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীরা সেভাবে জড়িত নয়। শহরের শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার বাইরে কিছু করতে দেওয়া হয় না। বলা যায়, শহরের শিক্ষক-অভিভাবকেরা শিক্ষার্থীদের মানসিক নির্যাতন করছেন। ভালো ফল করার চাপ দিয়ে তাদের জীবন বিপন্ন করে দেওয়া হচ্ছে।

উপমন্ত্রী আরও বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশেই ১৬ বছর বয়সের আগে কোনো শিক্ষার্থীকে ‘মেধাবী শিক্ষার্থী’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় না। অথচ এ দেশে ১০ বছর বয়স হলেই একজনকে ‘মেধাবী শিক্ষার্থী’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এই শিক্ষার্থীর যখন মেধা অর্জনের সময়, শিক্ষা গ্রহণের সময়, তখন তাকে মেধাবী শিক্ষার্থীর তকমা দিয়ে নির্যাতনের মুখে ফেলে দেওয়া হয়। তাকে মূল্যবোধ শেখার কোনো সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না, সৃজনশীলতা বিকাশের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না।

ফলনির্ভরতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে উল্লেখ করে মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ফলনির্ভরতা থেকে বের না হলে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ ধরা যাবে না। আজ একজন শিক্ষার্থী মুখস্থ করে ভালো ফল করলেও শিল্পবিপ্লবের পর্যায়ে এসে তাকে নতুন করে শিখতে হবে। না হলে সে টিকে থাকতে পারবে না।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান প্রমুখ।