উপকূলের মেয়েদের বিজ্ঞান শিক্ষায় আগ্রহী করার আয়োজন ‘অবাক কুতূহলে’

উপকূলের শিক্ষার্থীদের জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর ঘুরে দেখানো হয়ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের উপকূলের পিছিয়ে পড়া ৪০ শিক্ষার্থী ও ৬ জন শিক্ষকের অংশগ্রহণে ঢাকায় হয়ে গেল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক স্থান পরিদর্শনমূলক আয়োজন ‘অবাক কুতূহলে’। গত শুক্র ও শনিবার দিনভর ঢাকার বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও আইসিটিবিষয়ক বিভিন্ন স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে শিক্ষার্থীরা।

বাংলাদেশের উপকূলের তিনটি দুর্যোগপ্রবণ এলাকা বাগেরহাটের রামপাল, খুলনার রূপসা ও সাতক্ষীরার তালা উপজেলা থেকে আসা এই শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান শিক্ষায় আগ্রহী করে তুলতে ‘অবাক কুতূহলে’ নামের এই আয়োজনটির উদ্যোক্তা বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন)। মালালা ফান্ডের পৃষ্ঠপোষকতায় ‘স্টেম অ্যান্ড আইসিটি স্কিলস ফর দ্য গার্লস অব কোস্টাল এরিয়া (এসআইএসজিসিএ)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

উপকূলের ছয়টি বিদ্যালয়—বাগেরহাটের রামপালের বড়কাটালি বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একই উপজেলার পেড়িখালি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সাতক্ষীরার তালার শহীদ আলী আহম্মদ সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, একই উপজেলার শহীদ কামেল মডেল হাইস্কুল, রূপসার নৈহাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বাগেরহাটের উদ্দীপন বদর সামছু বিদ্যানিকেতনের শিক্ষার্থীরা ৭ মার্চ ঢাকায় এসে পৌঁছায়। ৮ ও ৯ তারিখ দুটি বাসে করে দুই দিনব্যাপী সংসদ ভবন, জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, দৈনিক সংবাদপত্র প্রথম আলো এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি-বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ওলিও ও ব্রেইন স্টেশন ২৩ পরিদর্শন করে শিক্ষার্থীরা।

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি-বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ওলিও ঘুরে দেখেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল দেখে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার শহীদ আলী আহম্মদ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রী তহমিনা খান। বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর আইটি প্রতিষ্ঠান ওলিও ঘুরে অবাক উদ্দীপন বদর সামছু বিদ্যানিকেতনের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতুন নেছা। সে বলেছে, ‘পড়াশোনা শেষ করে আমিও এমন প্রতিষ্ঠানের সদস্য হতে চাই।’

এরপর তাদের জন্য আয়োজিত একটি সেশনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গল্প করেন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল, উইন ইনকরপোরেটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাশফিয়া আহমেদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবোটিকস অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক লাফিফা জামাল।

মুহম্মদ জাফর ইকবাল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, সামনের দিনে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হবে দক্ষ মানুষ। নয়তো একটা সফটওয়্যার মানুষের জায়গা দখল করে নেবে। এ জন্য একজন মানুষের যেসব গুণ এবং দক্ষতা থাকা প্রয়োজন, তা এখন থেকেই শিখে নিতে হবে।  

মেয়েদের সঙ্গে আসা শহীদ কামেল মডেল হাইস্কুলের শিক্ষক চন্দনা রানী গুহ বলেন, ‘আমাদের মতো প্রত্যন্ত এলাকায় মেয়েদের জন্য এমন সুযোগ এখনো অকল্পনীয়। এই ভ্রমণ তাদের জীবন নিয়ে অন্যভাবে ভাবতে সাহায্য করবে। আজ শিক্ষার্থীরা অনেক স্বপ্ন এবং আনন্দ নিয়ে ঢাকা ত্যাগ করল।’ বিজ্ঞপ্তি।