মাদক সমস্যা সমাধানে সরকারের পাশাপাশি সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি এবং ড্রিম বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে ‘মাদকাসক্তি ও মাদক প্রতিরোধে তরুণ সমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়ছবি: বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির সৌজন্যে

মাদকের কারণে সামাজিক অবক্ষয় বাড়ছে। ভেঙে যাচ্ছে পারিবারিক বন্ধন, নষ্ট হচ্ছে আস্থা-বিশ্বাস, পরিবার ও সমাজে তৈরি হচ্ছে আতঙ্ক। মাদক সমস্যার সমাধানে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংগঠন, সব ধর্মীয় নেতা, সুশীল সমাজসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।

গত রোববার বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস মিলনায়তনে ‘মাদকাসক্তি ও মাদক প্রতিরোধে তরুণ সমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন। ড্রিম বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারের সার্বিক সহযোগিতায় ছিল বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ এবং বিজনেস ক্লাব।

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক (গোয়েন্দা) খোরশেদ চঞ্চল, মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থার (মানস) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক অরূপরতন চৌধুরী, ড্রিম বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের (ডিবিএফ) প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক রাখিল খন্দকার, সমাজসেবক ও ডিসকভারি চ্যানেলখ্যাত হিউম্যান সিদ্ধাচার্য মার্ক ইউরি বজ্রমুনি এবং ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিয়িং বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক দেবরা ইফরইমসন।

স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার মাহবুবুল হক। সেমিনার পরিচালনা করেন ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী জুয়াইরিয়া জাহান ও নাফিসুল হোসেন।

খোরশেদ চঞ্চল বলেন, মাদকাসক্তি আধুনিক সভ্যতার বিপজ্জনক রোগ। মাদকের ভয়াল থাবায় ধ্বংসের পথে তরুণ প্রজন্ম। শহর থেকে গ্রাম, স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়, সর্বত্রই মাদক পাওয়া যাচ্ছে হাতের নাগালে। মাদকের কারণে বেড়ে যাচ্ছে সামাজিক অবক্ষয়। তরুণ সমাজ হারিয়ে ফেলছে তাদের নৈতিক মূল্যবোধ। এই ভয়াল মাদকের কারণে ভেঙে যাচ্ছে পারিবারিক বন্ধন, নষ্ট হচ্ছে আস্থা-বিশ্বাস, পরিবার ও সমাজে তৈরি হচ্ছে নতুন আতঙ্ক।

অরূপরতন চৌধুরী বলেন, মাদকাসক্তি একটি বহুমাত্রিক জটিল সমস্যা। এ ব্যাধি দূর করতে দরকার সমন্বিত কর্মপ্রয়াস। তিনি আরও বলেন, দেশের উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণীদের একটি বড় অংশ ইয়াবা ও আইসে আসক্ত হয়ে পড়েছে। শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়, কলেজ-স্কুলেও মাদক ঢুকে পড়েছে।

সমন্বিত সামাজিক প্রতিরোধ ছাড়া মাদক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয় জানিয়ে অরূপরতন মাদক সমস্যার সমাধানে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংগঠন, শিক্ষক, সব ধর্মীয় নেতা, সুশীল সমাজ, অভিভাবকসহ সব শ্রেণি–পেশার মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে বিইউর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে মাদকমুক্ত রাখার জন্য এর কর্মকাণ্ড যত বিস্তৃত করা যাবে, ততই আমাদের মঙ্গল। মাদক ও ধূমপানের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, ‘ইতিমধ্যে বিইউকে ধূমপানমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ যাতে নষ্ট না হয়, সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সজাগ দৃষ্টি রয়েছে।’

আলোচনা সভা শেষে অতিথি এবং ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণে মাদকবিরোধী র‌্যালি বের করা হয়।