১০ম গ্রেডে পাচ্ছেন প্রাথমিকের ৬৫ হাজার ৫০২ জন প্রধান শিক্ষক, অর্থ বিভাগের সম্মতি
রিট আবেদনকারী ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের পর এবার সারা দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বেতন গ্রেড এক ধাপ বেড়ে ১০ম হচ্ছে। এ বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে অর্থ বিভাগ। এখন প্রশাসনিক উন্নয়নসংক্রান্ত সচিব কমিটির সুপারিশ নিয়ে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
অর্থ বিভাগ গতকাল সোমবার তাদের সম্মতিপত্র প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে পাঠিয়েছে। এতে বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬৫ হাজার ৫০২ জন প্রধান শিক্ষকের বেতন স্কেল বিদ্যমান ১১তম থেকে বাড়িয়ে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং অর্থ বিভাগের ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগের সম্মতি অনুযায়ী অর্থ বিভাগ সম্মতিজ্ঞাপন করেছে।
বিদ্যমান ১১তম গ্রেড অনুযায়ী প্রধান শিক্ষকদের মূল বেতন শুরু হয় ১২ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে। এর সর্বোচ্চ ধাপ ৩০ হাজার ২৩০ টাকা। আর উন্নীত করা গ্রেড অর্থাৎ ১০ম গ্রেডে মূল বেতন শুরু হবে ১৬ হাজার টাকা দিয়ে। এর সর্বোচ্চ ধাপ ৩৮ হাজার ৬৪০ টাকা।
সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডসহ দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার পদমর্যাদা দেওয়ার কথা, কিন্তু বিষয়টি আটকে ছিল। দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে গত ২৮ অক্টোবর রিট আবেদনকারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের বেতন গ্রেড এক ধাপ বাড়িয়ে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়। পাশাপাশি সব প্রধান শিক্ষক অর্থাৎ ৬৫ হাজার ৫০২ জন প্রধান শিক্ষকের বেতন গ্রেড বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করা হয়।
সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১১তম করতে আলোচনা
বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা জাতীয় বেতন স্কেলের ১৩তম গ্রেডে আছেন (শুরুর মূল বেতন ১১ হাজার টাকা)। সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেডও ১০ম করাসহ ৩ দফা দাবি জানাচ্ছেন সহকারী শিক্ষকেরা।
এ বিষয়ে গতকাল সন্ধ্যায় সচিবালয়ে অর্থ বিভাগ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন আন্দোলনকারী শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধিদল। বৈঠক শেষে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা বৈঠকের বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন। তাতে বলা হয়, সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল উন্নীত করার বিষয়ে অর্থ বিভাগের সচিব বলেছেন, সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১১তম করার বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবটি জাতীয় বেতন কমিশনে পাঠানো হয়েছে, যা বেতন কমিশনের বিবেচনাধীন রয়েছে। কমিশনের সুপারিশ পাওয়ার পর অর্থ বিভাগ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করবে।
আর শিক্ষকদের ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার জটিলতা প্রসঙ্গে অর্থ বিভাগের সচিব জানিয়েছেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব করলে অর্থ বিভাগ বিষয়টি পর্যালোচনা করবে। এ ছাড়া শিক্ষকদের শতভাগ পদোন্নতির বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিদ্যমান বিধিমালার আলোকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নেবে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষকেরা আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক কোটির বেশি। শিক্ষক রয়েছেন পৌনে চার লাখের বেশি। সহকারী শিক্ষকের অনুমোদিত পদ ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২১৬টি, বর্তমানে কর্মরত ৩ লাখ ৫২ হাজার ২০৮ জন।