মালালার নামে বিশেষ বৃত্তি পাবেন পাকিস্তানী ছাত্রীরা

মালালা ইউসুফজাই

নিজ ভূমিতে মাথায় গুলি খেয়েছেন। সম্মানও পাননি। কিন্তু পাকিস্তানের সেই কন্যা নোবেলও জিতেছেন। নিজ দেশে না পেলেও মালালা ইউসুফজাই সম্মান পেলেন বিদেশের মাটিতে। কারণ, মার্কিন সিনেটে একটি বিল পাস হয়েছে, মালালার নামে একটি বৃত্তি চালু হবে। পাকিস্তানের ছাত্রীরা সেই বৃত্তি পাওয়ার সুযোগ পাবে।

ডনের খবরে বলা হয়েছে, ইউএসএইডের অর্থায়নে এই মামালা বৃত্তি ৫০ শতাংশ পাবে পাকিস্তানের শিক্ষার্থীরা। এই ৫০ শতাংশের নাম ‘মালালা ইউসুফজাই স্কলারশিপ’।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসএআইডির একটি বৃত্তি আছে। এ বৃত্তির আওতায় মেধা ও আর্থিক ক্ষমতার ভিত্তিতে ‘কৃষি বা ম্যানেজমেন্ট’ শাখার পাকিস্তানি ছাত্র-ছাত্রীদের বৃত্তি দেওয়া হয়। গত বছর পর্যন্ত ১ হাজার ৮০৭টি বৃত্তির মধ্যে ২৫ শতাংশ পেয়েছিল ছাত্রীরা।

মার্কিন সিনেটর এই বিলের কারণে প্রচলিত বৃত্তি বেড়ে ৫০ শতাংশে দাঁড়াবে। এগুলো পাবেন শুধু পাকিস্তানের পিছিয়ে পড়া মেধাবী ছাত্রীরা।

গেল বছরের মার্চে মার্কিন সিনেটে এই বিল পাস হয়। এ বছরের প্রথম দিনে পাকিস্তানের ছাত্রীদের জন্য বৃত্তি বাড়াতে তা সংশোধন করা হয়। এখন বিলটি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে পাঠানো হয়েছে। ট্রাম্প সই করলেই এটি আইনে পরিনত হবে।

জাতিসংঘ ২০১৩ সালের ১২ জুলাইকে ‘মালালা ডে’ হিসেবে ঘোষণা দেয়। এরপর থেকে থেকে প্রতিবছর ১২ জুলাই দিনটি পালিত হয়ে আসছে।

পাকিস্তানে নারীদের শিক্ষার জন্য মালালা লড়াই করছিলেন। নিজেই পড়াশোনা করে জীবনে এগিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি চেয়েছিলেন অন্যদেরও এগিয়ে নিতে। অক্সফোর্ডে পড়াশোনা করা মালালা স্কুলে পড়ার সময়েই চাইতেন তাঁর মতো অন্য মেয়েরাও পড়াশোনার সুযোগ পাক। কিন্ত পাকিস্তানের প্রত্যন্ত গ্রামে মেয়েদের শিক্ষা ছিল যেন অলীক স্বপ্ন। সেখানে তালেবানদের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মালালা শিক্ষার আলো জ্বালাতে চেয়েছিলেন। তবে তাঁর এ কাজ মেনে নিতে পারেনি তালেবানরা।

২০১২ সালের ৯ অক্টোবর স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে আক্রান্ত হন মালালা। যে বাসে করে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন, সেই বাসে উঠে বন্দুকধারীরা গুলি করে। মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাকিস্তানের এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। পাকিস্তানে মালালার জীবন ঝুঁকির মধ্য পড়তে পারে ভেবে মালালার বাবাকে যুক্তরাষ্ট্রের পাকিস্তান কনস্যুলেটের শিক্ষা বিভাগে নিযুক্ত করা হয়, সেই থেকে মালালা যুক্তরাষ্ট্রেই আছেন।

সিনেটে বিলটি তোলার সময় সিনেটর ল্যান্ড্রিউ জানান, মালালা ইউসুফজাইয়ের ওপর আক্রমণ বুঝিয়ে দেয় শিক্ষার অধিকারের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে মেয়েদের কীভাবে লড়াই করতে হয়। সমাজের অগ্রগতির জন্য ছেলে ও মেয়ে উভয়েরই শিক্ষার প্রয়োজন। তথ্যসূত্র: ডন