কথা শুনে লিখে দেবে সেন্সভয়েস

সেন্সভয়েসছবি : সংগৃহীত

শিক্ষকের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনে লিখে রাখেন অনেক শিক্ষার্থী। যত মনোযোগ দিয়েই করেন না কেন, পুরো বক্তব্য কিন্তু আর লেখা হয়ে ওঠে না। এ জন্য অনেকে আবার মুঠোফোনে কথা রেকর্ড করেন। পরে সুবিধামতো সময়ে অডিও শুনে খুঁটিনাটি তথ্য জানেন তাঁরা। তবে এতে সময় বেশ পেরিয়ে যায়। কেমন হতো, যদি কেউ অডিও ফাইলে থাকা সব কথা বাংলায় লিখে দিত। শুনতে অবাক লাগলেও অডিও ফাইলে থাকা বাংলা কথাগুলো আপনাকে লেখে দেবে ‘সেন্সভয়েস’। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির বাংলা ভয়েস ট্রান্সক্রিপশন প্ল্যাটফর্ম কাজে লাগিয়ে সরাসরি মুখের কথা লেখায় রূপান্তর করা যাবে। অর্থাৎ আপনি কথা বলতে শুরু করলেই সেগুলো বার্তা আকারে দেখা যাবে। চাইলে ভিডিওর ক্যাপশনও দেওয়া যাবে। প্ল্যাটফর্মটি তৈরি করেছে দেশি প্রতিষ্ঠান ইনটেলসেন্স এআই লিমিটেড।

কর্মীদের সঙ্গে ইনটেলসেন্স এআই লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতারা
ছবি : সংগৃহীত

শুরুর কথা

২০১৫ সালে ইনটেলসেন্স এআই লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করেন বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রুম্মান আরেফিন। সহপ্রতিষ্ঠাতা হিসেবে রয়েছেন আরিফ আহমদ, মো. রাফি নিজামী, মো. জুবায়ের হোসেন এবং মাহনুমা মনজু। কথা শনাক্ত করার (স্পিচ রিকগনেশন) স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং নিয়ে কাজ শুরু করেন তাঁরা। দক্ষ কর্মীদের সমন্বয়ে গড়ে তোলেন আজকের ইনটেলসেন্স এআই লিমিটেড। এরই মধ্যে দেশি ও বহুজাতিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন বিভিন্ন প্রযুক্তি সেবা দিয়েছে তারা।

বাংলা কথাকে লেখায় রূপান্তর

বাংলা কথা লেখা আকারে তুলে ধরতে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছিল ইনটেলসেন্স এআই লিমিটেড। সফলও হয় তারা। এরই ধারাবাহিকতায় নতুন বছরের প্রথম দিনই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিনির্ভর ট্রান্সক্রিপশন প্ল্যাটফর্ম ‘সেন্সভয়েস’ চালু করে তারা। স্বয়ংক্রিয় স্পিচ রিকগনেশন মডেল এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে কম সময়ে প্রায় নির্ভুলভাবে বাংলা কথাকে লেখায় রূপান্তর করতে পারে প্ল্যাটফর্মটি। ব্যবহারও পদ্ধতিও বেশ সহজ। https://sensevoice. intelsense.ai ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করে ব্যবহার করা যাবে। এতে সর্বোচ্চ ৫০ মেগাইবাইটের অডিও ফাইল রেখে (আপলোড) কথাকে লেখায় রূপান্তর করা যাবে।

প্লাটফর্মটির লাইভ বা রেকর্ড বাটনে ক্লিক করে কথা বলা শুরু করলেই সেগুলো বার্তা আকারে দেখা যাবে। ফলে ব্যক্তিগত ব্যবহারের পাশাপাশি এই প্ল্যাটফর্ম কাজে লাগিয়ে যেকোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহজে গ্রাহকদের সেবা দিতে পারবে। কনটেন্ট নির্মাতারাও নিজেদের ভিডিওতে দ্রুত ক্যাপশন যোগ করতে পারবেন।

প্রতিষ্ঠাতার কথা

ইনটেলসেন্স এআই লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রুম্মান আরেফিন প্রথম আলোকে জানান, বাংলা ভাষায় এটিই প্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক ট্রান্সক্রিপশন প্ল্যাটফর্ম। স্পিচ প্রসেসিং এবং ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিংয়ে দক্ষ একদল কর্মীর সমন্বয়ে প্ল্যাটফর্মটি চালু করা হয়েছে। গত পাঁচ বছর ধরেই আমরা দেশি ও বহুজাতিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন প্রযুক্তিসেবা দিয়ে আসছি। এবার বাংলা ভাষাভাষীদের দৈনন্দিন কাজ সহজ করতে আমরা চালু করেছি ‘সেন্সভয়েস’। ১ জানুয়ারি যাত্রা শুরুর পর থেকেই আমরা বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি। প্ল্যাটফর্মটির সাহায্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজেদের গ্রাহকসেবা ও পণ্য সরবরাহ করতে পারবে। ট্রান্সক্রিপশনভিত্তিক এই সেবা আরও বড় পরিসরে ব্যবহারের জন্য অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস (API) সেবাও দিচ্ছে ইনটেলসেন্স এআই লিমিটেড। ফলে যেকোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব সিস্টেমে সরাসরি সেন্সভয়েস প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে।