বিটকয়েন নিয়ে আলোচনা হোক, না বুঝে যেন বাতিল না করি: আইসিটি প্রতিমন্ত্রী

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ।

বিটকয়েন, ক্রিপ্টোকারেন্সি ও ডিজিটাল কারেন্সি বিষয়ে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ বলেছেন, ‘আলোচনা শুরু হোক। আমরা আগে না জেনে–বুঝেই যেন বাতিল না করি।’ আজ বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বিটকয়েন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মুদ্রার সব সময় পরিবর্তন হতে থাকে। ডিজিটাল কারেন্সি, ক্রিপ্টোকারেন্সি, বিটকয়েন, এগুলো নিয়ে আমাদের জানতে হবে। আমরা যেন পিছিয়ে না পড়ি। আপনি কাকে দোষ দেবেন? এখন কেউ যদি বৈধ টাকা দিয়ে অবৈধ পণ্য ক্রয় করে, তাহলে দোষ তো টাকার না, যে ক্রয় করল তার।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, গেম, বেটিং অ্যাপ এগুলো বন্ধ করতে হবে। এগুলো বেআইনি কার্যক্রম। মাদক যাতে দেশে না আসে, সে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সেটা টাকায় হোক, সোনা দিয়ে হোক বা বিটকয়েন দিয়ে হোক। কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কারেন্সি চালু করা উচিত বলে জানান তিনি। এ ছাড়া বলেন, বিটকয়েন, ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে বিভিন্ন দেশে বিতর্ক আছে। অনেক দেশে অবৈধ আবার অনেক জায়গায় বৈধ। তিনি এটা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা সভার আয়োজনের জন্য ডিআরইউর প্রতি আহ্বান জানান।

কোনো প্রতিষ্ঠান যখন অবিশ্বাস্য অফার নিয়ে বাজারে আসে, তাদের প্রচার করার ক্ষেত্রে সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের যাচাই-বাছাই করা উচিত কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে জুনাইদ আহমেদ বলেন, দায়িত্বশীলদের অবশ্যই সাবধান হওয়ার দরকার আছে। সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত যে রেগুলেটরার আছে, তাদের কিছু নীতি ও আইন প্রয়োগ করতে হবে। ২০১৮ সালে আইসিটি বিভাগ নিজ দায়িত্বে ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা তৈরি করে মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করে। যদিও তা এই বিভাগের দায়িত্বের মধ্যে ছিল না। তখন এটা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে নিয়ে যায় মন্ত্রিসভা।

ই-কমার্স খাতে একটা রেগুলেটরি বডি থাকা প্রয়োজন উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখানে এসক্রো সার্ভিস আবশ্যক করা উচিত। একটা গাইডলাইন করে দেওয়া যে কোনো প্রোডাক্টে তার বাজারমূল্য থেকে কত শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিতে পারবে।

জুনাইদ আহমেদ বলেন, ই-কমার্স থেকে শুরু করে বিদেশে টাকা পাচার, আর্থিক প্রতারণা এখন মূল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছি। এই চ্যালেঞ্জকে প্রযুক্তি দিয়ে সমাধান করতে হবে। এ জন্য আইসিটি বিভাগ ইন্টার অপারেবল ডিজিটাল ট্রানজেকশন প্ল্যাটফর্ম এ বছরের মধ্যেই চালু করবে। এটা চালু হলে কে কোথায় কত টাকা লেনদেন করছে, তা জানা যাবে বলে জানান তিনি।

মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে ডিআরইউর মোবাইল অ্যাপ উদ্বোধন করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে ডিআরইউর সভাপতি মোরসালিন নোমানী বলেন, ডিআরইউর বার্ষিকসহ বিভিন্ন চাঁদা, সদস্যদের তালিকা, ফোন নম্বরসহ সংগঠনটির বিভিন্ন সেবা এখন এক অ্যাপের মাধ্যমে এক প্ল্যাটফর্মে পাওয়া যাবে। এ ছাড়া তিনি বলেন, আইসিটি বিভাগ থেকে ডিআরইউকে ১৫টি কম্পিউটার দেওয়া হয়েছে।

ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খানের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি ওসমান গনি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শুক্কুর আলী, কবির আহমেদ খানসহ সংগঠনটির বর্তমান কমিটির সদস্যরা।