এক টুইটের দাম ২৪ কোটি টাকা

জ্যাক ডরসি
ছবি: এএফপি

টুইটও বিক্রি হতে পারে? এর উত্তর ‘হ্যাঁ’। তবে এ টুইট যেনতেন টুইট নয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারের প্রধান জ্যাক ডরসির করা প্রথম টুইট এটি। নিলামে তাই এর দামও উঠেছে আকাশছোঁয়া। এক টুইট বিক্রি হলো ২৯ লাখ মার্কিন ডলারে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ২৪ কোটি ৫৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা!

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, নিলামে টুইটটি কিনেছেন মালয়েশিয়ার ব্রিজ ওরাকল ফার্মের প্রধান নির্বাহী সিনা এসটাভি। ২০০৬ সালের ২১ মার্চ প্রথম টুইট করেন জ্যাক ডরসি। সেই টুইটে তিনি লেখেন, ‘আমার টুইটার মাত্র তৈরি করছি।’

জ্যাক ডরসি মূলত দাতব্য কাজে অর্থ জোগাতে তাঁর প্রথম টুইটটি নিলামে তোলেন। নিলামে জেতার পর টুইটারেই এক প্রতিক্রিয়ায় এসটাভি এই টুইটকে ভিঞ্চির অমর সৃষ্টি মোনালিসার সঙ্গে তুলনা করেছেন।

বিবিসি বলেছে, গত সোমবার এসটাভির কাছে টুইটটি ‘নন-ফানজিবল টোকেন’ (এনএফটি) হিসেবে বিক্রি করা হয়। এসটাভি টুইটটির ক্রেতা হিসেবে একটি অনন্য ডিজিটাল সনদ পাবেন। সনদে জ্যাক ডরসির ডিজিটাল সই থাকবে। সঙ্গে থাকবে মূল টুইটের মেটা ডেটা। মেটা ডেটায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে টুইটটি পোস্ট করার সময়, টুইটের কনটেন্ট ইত্যাদি। এনএফটি বিষয়টিও তা–ই। প্রতিটি এনএফটি অনন্য এবং তা সংগ্রহকারীর বিশেষ সম্পদ। এর প্রতিরূপ তৈরি করা যায় না। তাই নকশার দিক থেকে তা দুর্লভ হয়ে যায়। এ বছর এনএফটি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অনেক দামি ডিজিটাল শিল্পকর্ম এভাবে বিক্রি হয়েছে।

জ্যাক ডরসি বলেছেন, তিনি টুইট বিক্রির অর্থ দাতব্য প্রতিষ্ঠানে দান করবেন। এসটাভি বলেছেন, ‘আমি মনে করি, মোনালিসার মতোই বহু বছর পর মানুষ এই টুইটের আসল মূল্য বুঝতে পারবে।’

ভ্যালুয়েবলস নামের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি অনলাইন নিলাম প্ল্যাটফর্মে টুইটটি বিক্রি করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী, বিক্রি করে প্রাপ্ত অর্থের ৯৫ শতাংশ পাবেন ডরসি এবং বাকি ৫ শতাংশ পাবে নিলাম কোম্পানি। তবে বিক্রির পরও ওই টুইটার প্ল্যাটফর্মে সবার জন্য টুইটটি থাকবে। টুইটটি নিলামে তোলার কয়েক মিনিটের মধ্যেই এর দাম ৮৮ হাজার মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যায়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, এখন থেকে বিভিন্ন টুইট এবং অনলাইন পোস্ট বিক্রি করার বিষয়টি জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। প্রযুক্তি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ফিউচার্স ইনটেলিজেন্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ক্যাথি হাকল বলেন, ‘আমরা এখন এমন এক যুগে বাস করছি, যেখানে তারকা, সংগীতশিল্পী এবং নানা ক্ষেত্রে প্রভাবশালীদের ভক্তের চেয়ে অতিভক্ত বেশি থাকেন। তাঁরা প্রিয় তারকাদের কোনো কিছু নিজের কাছে রাখতে চান।’ হাকল বলেন, মানুষ যেমন বাস্তব স্মৃতিচিহ্ন কিনে রাখেন, তেমনি তারকাদের টুইট, পোস্ট, ছবি তাঁরা কিনবেন। কারণ, তাঁরা তাঁদের কাছাকাছি অনুভব করতে চাইবেন।