গুগলকে গ্যাস-পানি-বিদ্যুতের কাতারে রাখতে চান তিনি

গুগলকে নিত্যপ্রয়োজনীয় সেবা হিসেবে ঘোষণা করতে মামলা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইয়োর অ্যাটর্নি জেনারেল
এএফপি

গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ যেমন নিত্যপ্রয়োজনীয় সেবা, গুগলও তেমনই। বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইয়ো অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল ডেভ ইয়স্ট। তিনি সেখানেই ক্ষান্ত হলে গুগল এতক্ষণে বগল বাজাত। তবে গুগলকে গণ–উপযোগ হিসেবে ঘোষণা করে সরকারি নিয়ন্ত্রণে আনতে গতকাল মঙ্গলবার মামলা ঠুকে দিয়েছেন ওই অ্যাটর্নি জেনারেল।

ডেলাওয়ার কাউন্টির আদালতে করা মামলায় শতবর্ষী এক আইনের আওতায় গুগলকে নিয়ন্ত্রণ করার কথা বলেছেন ডেভ ইয়স্ট। পুরোনো আইনটি রেলযোগাযোগ, বিদ্যুৎ এবং টেলিফোনের মতো জরুরি সেবার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়।

এমন আইনে গুগলের সার্চ রেজাল্টের মান আরও খারাপ হবে এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য গ্রাহকের সঙ্গে যুক্ত হওয়া কঠিন হয়ে যাবে।
হোসে কাস্তানিয়েদা, গুগলের মুখপাত্র

এদিকে গণ–উপযোগ ঘোষণা করার মতো কোনো বৈশিষ্ট্য গুগলের নেই বলে জানিয়েছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটি। গুগলের মুখপাত্র হোসে কাস্তানিয়েদা বলেছেন, ‘এমন আইনে গুগলের সার্চ রেজাল্টের মান আরও খারাপ হবে এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য গ্রাহকের সঙ্গে যুক্ত হওয়া কঠিন হয়ে যাবে। সরকার গুগলকে গ্যাস বা বিদ্যুৎ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের মতো পরিচালনা করুক, ওহাইয়োর অধিবাসীরা তা একদমই চান না। সত্য বলতে কি, এই মামলার কোনো ভিত্তি বা আইন নেই এবং আদালতে আমরা আমাদের সপক্ষে যুক্তি পেশ করব।’

অলাভজনক সংস্থা বেনটন ইনস্টিটিউট ফর ব্রডব্যান্ড অ্যান্ড সোসাইটির জ্যেষ্ঠ ফেলো অ্যান্ড্রু শোয়ার্টজম্যান নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, ওহাইয়োর মামলাটিকে অবাস্তব বলে মনে হলে জেনে রাখুন, বেশ কিছু ধরনের সেবায় সরকারি নিয়ন্ত্রণের ইতিহাস সুদীর্ঘ। ‘দ্য ক্যান্টারবারি টেলস’-এর কথাই ধরুন। দীর্ঘ পথযাত্রায় পর্যটকদের থাকা-খাওয়ার জায়গা দরকার। সরাইখানার মালিকেরা কোনো অবস্থাতেই তাদের তাড়িয়ে দিতে পারেন না।

গুগলের বিরুদ্ধে গত বছর বেশ কিছু মামলার পর ওহাইয়োর মামলাটি ‘বিগ টেক’ প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ন্ত্রণের আওতায় আনার আরেকটি সরকারি পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সুনির্দিষ্ট আইনের অভাব ছিল দীর্ঘদিন। এখন সে শূন্যস্থান পূরণের চেষ্টা চলছে।

গতকালই কলোরাডোর আইনসভায় তথ্যের গোপনতাবিষয়ক একটি আইন পাস হয়। আইনে বলা হয়েছে, গ্রাহকেরা চাইলে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে তথ্য গ্রহণে বাধা দিতে পারবে।

এদিকে বড় প্রযুক্তিনির্ভর প্ল্যাটফর্মগুলোর ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে মামলা করা সহজ করতে গত সোমবার নিউইয়র্কের সিনেটে একটি মামলা পাস হয়।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সুনির্দিষ্ট আইনের অভাব ছিল দীর্ঘদিন। মার্কিন কংগ্রেসও তেমন পদক্ষেপ নেয়নি। এখন সে শূন্যস্থান পূরণের চেষ্টা চলছে।

গুগলের বিরুদ্ধে একচেটিয়া ব্যবসায় পরিচালনা এবং বাজারে প্রভাবশালী অবস্থানের সুযোগ নিয়ে ছোট প্রতিযোগীদের হটানোর অভিযোগ এনে গত ডিসেম্বরে মামলা করে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৮টি অঙ্গরাজ্য। ওহাইয়ো সেগুলোর একটি।