বানরকে দিয়ে কেন ভিডিও গেম খেলাতে চান ইলন মাস্ক

এবার মানুষের মস্তিষ্কে নয়, বরং বানরের মস্তিষ্কের কলকবজা নিয়ে কাজ করবেন ইলন মাস্ক
রয়টার্স

ইলন মাস্ক কেবল টেসলা আর স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী নন। তাঁর আরও প্রতিষ্ঠান রয়েছে। নিউরালিংক সেগুলোর একটি। প্রতিষ্ঠানটির কাজ হলো মানুষের মস্তিষ্ক কম্পিউটারের সঙ্গে যুক্ত করা। এতে সরাসরি মস্তিষ্ক থেকে চিন্তার মাধ্যমে কম্পিউটারকে কাজের নির্দেশ দেওয়া যাবে বলে দাবি করেন মাস্ক। এই প্রযুক্তির পোশাকি নাম ব্রেন-কম্পিউটার ইন্টারফেস।

ইলন মাস্ক বলেছেন, এবার মানুষের মস্তিষ্কে নয়, বরং বানরের মস্তিষ্কের কলকবজা নিয়ে কাজ করবেন। এতে সরাসরি বানরের মস্তিষ্ক থেকে ভিডিও গেম খেলা যাবে বলে ধারণা তাঁর। হাত-পা ছোড়াছুড়ির আর প্রয়োজন হবে না। নিউরালিংক করপোরেশন এর আগে দুটি প্রাণীর মস্তিষ্কে পয়সা আকারের তারহীন সেন্সর যুক্ত করেছিল বলে জানিয়েছিল।

ক্লাবহাউস নামের একটি যোগাযোগের অ্যাপে ভক্তদের উদ্দেশে নানা বিষয়ে কথা বলেন মাস্ক। সেখানে বানরের মস্তিষ্কে তারহীন সেন্সর বসিয়ে প্রযুক্তিটি পরীক্ষা করার কথাও জানান তিনি। ইলন মাস্ক বলেন, দেখে বোঝার উপায় নেই মস্তিষ্কের কোথায় যন্ত্রটি বসানো আছে এবং সেটি একটি সুখী বানর। আসন্ন মাসগুলোতে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যাবে বলে জানান তিনি।

বানরের জন্য চেষ্টায় কোনো কমতি রাখছেন না বলে জানান তিনি। ইলন মাস্কের ভাষায়, ‘আমরা যা যা করতে চাই, সেগুলোর একটি হলো, বানরেরা কীভাবে একে অপরের সঙ্গে কেবল মস্তিষ্কের সাহায্যে ভিডিও গেম খেলতে পারে, তা বের করা। ব্যাপারটা দারুণ হবে।’

মস্তিষ্কে যুক্ত করার জন্য খুদে যে তারহীন যন্ত্রটি নিউরালিংক তৈরি করেছে, সেটিতে তিন হাজার ইলেকট্রোড আছে। চুলের দশ ভাগের এক ভাগ আকারের যন্ত্রটি মস্তিষ্কের হাজারখানেক নিউরন পর্যবেক্ষণ করতে পারে।

নিউরালিংকের মূল লক্ষ্য কার্যকরী ব্রেন-কম্পিউটার ইন্টারফেস তৈরি করা, যা মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডে আঘাতপ্রাপ্ত রোগীদের চিকিৎসায় কাজে লাগানো যাবে। প্রতিষ্ঠানটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আলঝেইমার ও ডিমেনশিয়ার মতো রোগের চিকিৎসায় কাজে লাগবে। এর সঙ্গে স্মৃতিভ্রষ্ট, শ্রবণশক্তি হ্রাস, হতাশা ও নিদ্রাহীনতার মতো সমস্যা সমাধান করা যাবে বলে জানিয়েছেন মাস্ক।

বিজ্ঞানীরা যদিও এখনো কোনো পথ দেখাতে পারেননি, তবে নিউরালিংক ভবিষ্যতে আরেকটি কাজ করতে পারবে বলে বিশ্বাস করেন ইলন মাস্ক। আর সেটি হলো জীবনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে মানুষের স্মৃতি সংরক্ষণ করে রাখা। চাইলে সে ব্যক্তির মৃত্যুর পর সেই সংরক্ষিত স্মৃতি অন্য কারও মস্তিষ্কে সচল করা যাবে। এতে কোনো ব্যক্তি মৃত্যুর পর নিজের আরেকটি সংস্করণ তৈরি করে রেখে যেতে পারবেন বলে ভাবছেন ইলন মাস্ক।