প্রশ্ন :
নিচের অনুচ্ছেদ থেকে ব্যাকরণিক শব্দশ্রেণি খুঁজে বের করো।
গরিবকে সাহায্য করা উচিত। গাড়িটা বেশ জোরে চলছে। তিনি একমনে টিভি দেখছেন। যত মধু তত মিষ্টি। কী জ্বালা, আর কতক্ষণ অপেক্ষা করব।
উত্তর: ব্যাকরণিক শ্রেণি: গরিবকে = বিশেষ্য; জোরে = ক্রিয়া বিশেষণ; একমনে=ক্রিয়া বিশেষণ; তত = সাপেক্ষ সর্বনাম; কী জ্বালা=আবেগ শব্দ।
প্রশ্ন :
নিচের অনুচ্ছেদ থেকে অব্যয় পদ খুঁজে বের করো।
আমানকে নিয়ে ওর মায়ের অনেক আশা। ওর কাছে মায়ের অনেক চাওয়া, ওর জন্য অনেক আয়োজন। ওকে ছাড়া ওর মায়ের এক মুহূর্ত চলে না। ওর সাথেই মায়ের সব সলাপরামর্শ।
উত্তর: অব্যয় পদ: নিয়ে; কাছে; জন্য; ছাড়া; সাথেই।
প্রশ্ন :
নিচের অনুচ্ছেদ থেকে ক্রিয়া বিশেষণ পদ খুঁজে বের করো।
বাবা সকালে দ্রুত বেরিয়ে গেছেন। তখন টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছিল। ঘরে বসে একমনে টিভি দেখছিল ছোট বোন। এ সময় কেউ টিভিতে গুনগুনিয়ে গান করছিল। হঠাৎ বাবা এসে বললেন, তাঁর চশমাটা চট করে খুঁজে দিতে।
উত্তর:ক্রিয়াবিশেষণপদ: দ্রুত, টিপটিপ, একমনে, গুনগুনিয়ে, চটকরে।
প্রশ্ন :
বিশেষ্য পদের শ্রেণিবিভাগ উদাহরণসহ আলোচনা করো।
উত্তর: যে পদ কোনো ব্যক্তি, বস্তু, জাতি, কাজ বা গুণের নাম বোঝায়, তাকে বিশেষ্য পদ বলে। যেমন—বই, নদী, পাখি, ফুল, ঢাকা, ইত্যাদি। বিশেষ্য পদের কয়েকটি শ্রেণিবিভাগ আছে। যেমন:
সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য: যে সকল বিশেষ্য পদে কোনো নির্দিষ্ট স্থান, নদী, পর্বত, সমুদ্র, প্রসিদ্ধ গ্রন্থ বা ব্যক্তির নাম বোঝায়, তাকে সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য বলা হয়। যেমন: আকবর, রানা, লন্ডন, তাজমহল ইত্যাদি।
স্থানবাচক বিশেষ্য: যে সকল বিশেষ্য পদে কোনো নির্দিষ্ট স্থানের নাম বোঝায়, তাকে স্থানবাচক বিশেষ্য বলা হয়। যেমন: রাজশাহী, ময়নামতি ইত্যাদি।
বস্তুবাচক বিশেষ্য: যে বিশেষ্য পদের সাহায্যে কোনো বস্তু বোঝায় এবং যার সংখ্যা নির্দেশ করা যায় না, শুধু পরিমাণ নির্দেশ করা যায়, তাকে বস্তুবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন পানি, লবণ, ইত্যাদি।
জাতিবাচক বিশেষ্য: যে বিশেষ্য পদের সাহায্যে কোনো প্রাণী বা বস্তুর জাতি বোঝায়, তাঁকে জাতিবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন: মানুষ, মুসলমান ইত্যাদি।
গুণবাচক বিশেষ্য: যে বিশেষ্য পদে কোনো গুণ, অবস্থা ও ভাবের নাম বোঝায়, তাকে গুণবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন: সুখ, দুঃখ, দয়া, বীরত্ব ইত্যাদি।
ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য: যে বিশেষ্য পদে কোনো কাজের নাম বোঝায়, তাকে ক্রিয়াবাচক বা ভাববাচক বিশেষ্য বলে। যেমন: ঘুমান, গমন, যাওয়া ইত্যাদি।
সমষ্টিবাচকবিশেষ্য:যেবিশেষ্যপদেসমষ্টিবোঝায়, তাকেসমষ্টিবাচকবিশেষ্যবলে।যেমন: জনতা, সমিতি, সভা, দলইত্যাদি।
প্রশ্ন :
বিশেষণ পদের শ্রেণিবিভাগ উদাহরণসহ আলোচনা করো।
উত্তর: বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম বা ক্রিয়াপদের যে পদ দোষ গুণ, অবস্থা বা সংখ্যা বোঝায়, তাকে বিশেষণ পদ বলে। যেমন: ভালো, মন্দ, লাল, কালো, সুন্দর, মুর্খ, এক, দুই ইত্যাদি। ভালো ছেলে-এ বাক্যে ‘ভালো’ পদের গুণ বোঝাচ্ছে বলে ‘ভালো’ পদটি বিশেষণ।
বিশেষণ পদ নানা রকম হতে পারে। বিশেষণকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
১. নাম বিশেষণ
২. ভাব বিশেষণ।
নাম বিশেষণ: যে বিশেষণ পদ কোনো নামপদকে বিশেষিত করে, তাকে নাম বিশেষণ বলে। নাম বিশেষণ বলতে বাক্যের বিশেষ্য পদ বা সর্বনাম পদ বা বিশেষণ পদের বিশেষণ বোঝায়। যেমন—সে সবুজ জামা পরেছে। অতি উত্তম কথা। এসব বাক্যে ‘সবুজ’ ‘অতি’ নাম বিশেষণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
নাম বিশেষণকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়:
ক. গুণবাচক বা অবস্থাবাচক বিশেষণ: যে বিশেষণ পদ কোনো গুণ বা অবস্থা প্রকাশ করে তাকে গুণবাচক বিশেষণ বা অবস্থাবাচক বিশেষণ বলে। যেমন: গরম চা। সাদা পোশাক
খ. সংখ্যাবাচক বিশেষণ: যে বিশেষণ পদ সংখ্যা নির্দেশ করে, তাকে সংখ্যাবাচক বিশেষণ বলে। যেমন: এক টাকা। দুই শ লোক।
গ. পরিমাণবাচক বা মাত্রাবাচক বিশেষণ: যে বিশেষণ পদ পরিমাণ বা মাত্রা নির্দেশ করে, তাকে পরিমাণ বাচক বা মাত্রাবাচক বিশেষণ বলে। যেমন: অনেক পানি। প্রচুর টাকা।
ঘ. ক্রমবাচক বা পুরণবাচক বিশেষণ: যে বিশেষণ পদ দিয়ে কোনো পর্যায়ক্রমিক স্থান বা ক্রম নির্দেশ করে, তাকে ক্রমবাচক বা পূরণবাচক বিশেষণ। যে বিশেষণ পদ দিয়ে কোনো পর্যায়ক্রমিক স্থান বা ক্রম নির্দেশ করে, তাকে ক্রমবাচক বা পুরণবাচক বিশেষণ বলে। যেমন: নবম শ্রেণি। পঞ্চম দিন ইত্যাদি।
ভাব-বিশেষণ: যে বিশেষণ পদ বিশেষ্য ও সর্বনাম পদ ছাড়া অন্য পদের দোষ গুণ বা অবস্থা প্রকাশ করে তাকে ভাব-বিশেষণ বলে। যেমন: আস্তে হাঁটো, খুব আস্তে হাঁটো ইত্যাদি।
ভাব বিশেষণ আবার দুই প্রকার। যেমন:
ক্রিয়া বিশেষণ:
যে বিশেষণ পদ বাক্যের ক্রিয়াপদের গুণ, অবস্থা, প্রকৃতি ইত্যাদি নির্দেশ করে, তাকে ক্রিয়া বিশেষণ বলে। যেমন: তাড়াতাড়ি চল। দিন ভালো যাচ্ছে না। জিনিসটা সাবধানে রাখ।
বিশেষণের বিশেষণ:
যে বিশেষণ বিশেষণের দোষ, গুণ অবস্থা প্রকাশ করে তাকে বিশেষণের বিশেষণ বলে। যেমন: সে খুব আস্তে হাঁটে, মনোয়ারা খুব ভালো মেয়ে।
মোস্তাফিজুর রহমান, শিক্ষক, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ, ঢাকা