অধ্যায় ২
P ও Q দুইটি কলা। P গঠনগতভাবে তরল হলেও Q ক্যালসিয়াম জাতীয় পদার্থ দিয়ে গঠিত। Q কলাটি P কলার নানা উপাদান তৈরিতে ভূমিকা রাখে।
প্রশ্ন
ক. স্ক্লেরাইড কাকে বলে?
খ. অন্ত্রের ক্রমসংকোচনে অংশগ্রহণকারী পেশিকে কেন মসৃণ পেশি বলা হয়?
গ. P ও Q একই ধরনের কলা—ব্যাখ্যা করো।
ঘ. P ও Q একই হওয়া সত্ত্বেও এদের মধ্যে গাঠনিক ভিন্নতা বিদ্যমান বিশ্লেষণ করো।
উত্তর
ক. স্ক্লেরাইড খাটো, সমব্যাসীয় লম্বাটে বা তারকাকার স্ক্লেরেনকাইমা টিস্যু।
খ. অন্ত্রের ক্রমসংকোচনে অংশগ্রহণ করে অনৈচ্ছিক পেশি, যার কার্যকারিতা আমাদের ইচ্ছাধীন নয়।
এই পেশির কোষগুলো মাকু আকৃতির। এদের গায়ে আড়াআড়ি দাগ থাকে না। এ জন্য অনৈচ্ছিক পেশিকে মসৃণ পেশি বলা হয়।
গ. P ও Q কলা দুটি যথাক্রমে তরল যোজক কলা ও স্কেলেটাল যোজক কলা।
যোজক কলাতে মাতৃকার পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বেশি এবং কোষের সংখ্যা কম। তরল যোজক কলার মাতৃকা তরল এবং মাতৃকার বিভিন্ন ধরনের জৈব পদার্থ দ্রবীভূত অবস্থায় থাকে। একইভাবে স্কেলেটাল যোজক কলায় মাতৃকার পরিমাণ বেশি এবং ক্যালসিয়াম জমা হয়ে কঠিন আকার ধারণ করে। এখানে কোষের সংখ্যাও কম হয়ে থাকে।
সুতরাং আলোচনা হতে স্পষ্ট যে P ও Q একই ধরনের কলা অর্থাৎ যোজক কলা।
ঘ. P ও Q যোজক কলা হলেও এদের মধ্যে গাঠনিক ভিন্নতা রয়েছে। নিচে এদের গাঠনিক ভিন্নতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
১. P অর্থাৎ তরল যোজক কলার কোষগুলো নরম প্রকৃতির এবং এদের মাতৃকা তরল। পক্ষান্তরে Q অর্থাৎ স্কেলেটাল যোজক কলার কোষগুলো তুলনামূলকভাবে শক্ত প্রকৃতির। ক্যালসিয়াম জমা হয়ে দৃঢ় প্রকৃতির মাতৃকা সৃস্টি করে।
২. P বা তরল যোজক কলা দুই ধরনের। যথা রক্ত ও লসিকা। রক্ত রক্তরস ও রক্তকণিকা দিয়ে গঠিত। রক্তের তরল অংশ রক্তরস। এর প্রায় ৯১-৯২% পানি এবং ৮-৯% জৈব ও অজৈব পদার্থ। রক্তকণিকা তিন ধরনের। যথা লোহিত রক্তকাণিকা, শ্বেত রক্তকণিকা ও অনুচক্রিকা। লসিকা হলুদ বর্ণের ঈষৎ ক্ষারীয় যোজক কলা।
অন্যদিকে গঠনের ওপর ভিত্তি করে Q বা স্কেলেটাল যোজক কলাকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা কোমলাস্থি ও অস্থি। কোমলাস্থি কড্রিন মাতৃকাযুক্ত একধরনের নমনীয় স্কেলেটাল যোজক কলা এবং অস্থি একধরনের দৃঢ়, ভঙ্গুর ও অনমনীয় স্কেলেটাল যোজক কলা।
সুতরাং ওপরের আলোচনা হতে প্রতীয়মান হয় যে P ও Q যোজক কলা হওয়া সত্ত্বেও এদের মধ্যে গাঠনিক ভিন্নতা রয়েছে।