অধ্যায় ২
নিচের চিত্র দেখে প্রশ্নের উত্তর লেখো।
ক. সিন্যাপসিস কাকে বলে?
খ. সাইটোকাইনেসিস বলতে কী বোঝায়?
গ. চিত্রটি কিসের? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ব্যাকটেরিয়ার ক্ষেত্রে উদ্দীপকে উল্লিখিত চিত্রটি কতটুকু তাৎপর্যপূর্ণ? মতামত দাও।
উত্তর
ক. দুটি হোমোলোগাস জোড় বাঁধার প্রক্রিয়াকে সিন্যাপসিস বলে।
খ. টেলোফেজ পর্যায়ের শেষের দিকেই সাইটোকাইনেসিস আরম্ভ হয়। যে প্রক্রিয়ায় বিভাজনরত কোষের সাইটোপ্লাজম দুই ভাগে বিভক্ত হয়, তাকে সাইটোকাইনেসিস বলে। উদ্ভিদ কোষে স্পিন্ডল যন্ত্রের বিষুবীয় অঞ্চল ক্রমশ প্রশস্ত হয়ে কোষপ্রাচীরকে স্পর্শ করে। সূত্রগুলো অদৃশ্য হয়ে যায়। বিষুবীয় অঞ্চলেই লাইসোজোমের ন্যায় ফ্রাগমোজোম জমা হয় এবং পরে এরা মিলিত হয়ে প্লাজমালেমা নামক ঝিল্লির সৃষ্টি করে। প্লাজমালেমা নামক ঝিল্লির ওপর অন্যান্য দ্রব্য জমা হয়ে এটি কোষ প্লেটে পরিণত হয়। কোষপ্লেটের ওপর হেমিসেলুলোজ ও অন্যান্য দ্রব্য জমা হয়ে কোষপ্রাচীর গঠন করে। কোষপ্রাচীর গঠনের ফলে মাতৃকোষটি পরবর্তী সময়ে দুই ভাগে ভাগ হয়ে দুটি অপত্য কোষের সৃষ্টি করে।
গ. উদ্দীপকে চিত্রটি কোষচক্রের। কোষের বিভাজন ঘটার প্রস্তুতি পর্যায় এবং বিভাজক পর্যায়কে সমষ্টিগতভাবে কোষচক্র বলে। কোষ বিভাজনের জন্য কোষের বিশেষ প্রস্তুতির প্রয়োজন পড়ে। প্রস্তুতি পর্যায়ে (ইন্টারফেজ) কোষস্থ ক্রোমোজোমাল DNA-এর অনুলিপন হয়। ATP সরবরাহ বৃদ্ধি পায় এবং RNA ও প্রোটিন সংশ্লেষণ হয়, যা কোষ বিভাজনের সময় ব্যবহৃত হয়। প্রস্তুতি পর্যায়কে তিনটি উপপর্যায়ে ভাগ করা হয়।
এগুলো হলো: ১) বিরাম–১: এ উপপর্যায়ে সাইক্লিন নামক প্রোটিন, অন্যান্য প্রোটিন এবং RNA সংশ্লেষিত হয়। ৩০–৪০% সময় এখানে ব্যয় হয়। ২) DNA অনুলিপন: এ উপপর্যায়ে কোষস্থ সকল ক্রোমোজোমের DNA অনুলিপন বা প্রতিরূপ সৃষ্টি হয়। সময় লাগে ৩০–৫০% এবং ৩) বিরাম–২: এ উপপর্যায়ে কোষ বিভাজনের অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান প্রস্তুত হয়। সময় লাগে ১০–২০%। কোষের প্রস্তুতি পর্যায় এবং বিভাজন পর্যায় এভাবে চক্রাকারে আবির্ভূত হয়। কোষের প্রস্তুতি পর্যায় (বিরাম–১, DNA অনুলিপন এবং বিরাম–২) এবং বিভাজন পর্যায়কে (প্রোফেজ, প্রো–মেটাফেজ, মেটাফেজ, অ্যানাফেজ এবং টেলোফেজ) সমষ্টিগতভাবে কোষচক্র বলে। এ পর্যায় সম্পন্ন হতে মোট সময়ের ৫–১০% সময় বিভাজনে ব্যয় হয়।
ঘ. ব্যাকটেরিয়া আদিকোষী। এককোষী বা বহুকোষী যেকোনো জীবেই কোষ বিভাজনের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি হয়ে থাকে। এককোষী বা আদিকোষী জীবের ক্ষেত্রে বংশবিস্তার বা কোষবিভাজনে কোনো জটিল ধাপ পরিলক্ষিত হয় না। মাতৃকোষের নিউক্লিয়াস সরাসরি বিভক্ত হয়ে দুটি অপত্য কোষের সৃষ্টি হয়। এ ধরনের কোষ বিভাজন অ্যামাইটোসিস নামে পরিচিত। ব্যাকটেরিয়া এককোষী হওয়ায় অ্যামাইটোসিস প্রক্রিয়ায় কোষ বিভাজন হয়ে থাকে। কোষ বিভাজনের শুরুতে নিউক্লিয়াসটি ধীরে ধীরে লম্বা হতে থাকে ও মাঝখানে ভাগ হয়ে দুটি নিউক্লিয়াসে পরিণত হয়। পরে কোষটির মধ্যভাগে একটি চক্রাকার গর্ত ভেতরের দিকে ঢুকে গিয়ে শেষে দুই ভাগে ভাগ করে ফেলে। ফলে একটি কোষ দুটি অপত্য কোষে পরিণত হয়। এ ধরনের বিভাজনকালে নিউক্লিয়াস মেমব্রেনের অবলুপ্তি ঘটে না এবং মাকু যন্ত্রের ও আবির্ভাব ঘটে না। নিচে চিত্রের মাধ্যমে এটিকে দেখানো হলো:
উপরের আলোচনা হতে প্রতীয়মান হয় যে, ব্যাকটেরিয়াতে কোষ বিভাজনের জন্য কোন পূর্ব প্রস্তুতি প্রয়োজন পড়ে না। সুতরাং ব্যাকটেরিয়ার ক্ষেত্রে উদ্দীপকে উল্লিখিত চিত্রটির (কোষ চক্র) কোন ভূমিকা নেই।