পঞ্চম শ্রেণি - বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় | অধ্যায় ২ : বর্ণনামূলক প্রশ্ন

পঞ্চম শ্রেণির পড়াশোনা

অধ্যায় ২

প্রশ্ন :

সিপাহি বিদ্রোহ কবে হয়েছিল? কার নেতৃত্বে এ বিদ্রোহী শুরু হয়? এ বিদ্রোহের কারণ লেখো।

উত্তর: ১৮৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহ হয়েছিল।

পশ্চিম বাংলার ব্যারাকপুরে মঙ্গল পাণ্ডের নেতৃত্বে এ বিদ্রোহ শুরু হয়ে সারা ভারতে ছড়িয়ে পড়ে।

সিপাহি বিদ্রোহের কারণ:

১. সেনাবাহিনীতে সিপাহি পদে ভারতীয়দের সংখ্যা বেশি ছিল। সেখানে ৫০ হাজার ব্রিটিশ এবং ৩ লাখ ভারতীয় সিপাহি ছিল।

২. ১৮৫৬ সালের পর ভারতের বাইরেও সৈন্যদের কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

৩. কামান ও বন্দুকের কাতু​র্জ পিচ্ছিল করার জন্য গরু ও শূকরের চর্বি ব্যবহারের গুজব নিয়ে ধর্মীয় অশান্তি তৈরি করা হয়েছিল।

৪. সৈন্যদের আন্দোলনকে সমর্থন জানানোর জন্য সাধারণ মানুষ প্রস্তুত ছিলেন। এই আন্দোলন দ্রুতই সৈন্যদের থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। ব্রিটিশ সরকার কঠোর হাতে এ বিদ্রোহ দমন করে। এ বিদ্রোহে প্রায় এক লাখ ভারতীয় মারা যায়।

প্রশ্ন :

কোন শতকে নবজাগরণ ঘটে? নবজাগরণের ফলাফল লেখো। কারা নবজাগরণে অবদান রাখেন?

উত্তর: ব্রিটিশ শাসনকালে শিক্ষা ও যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে উনিশ শতকে বাংলায় নবজাগরণ ঘটে। এ সময় সামাজিক সংস্কারসহ শিক্ষা, সাহিত্য ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের ব্যাপক প্রসার ঘটে।

বাংলায় নবজাগরণের জন্য যাঁরা অবদান রেখেছেন, তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন—

১. রাজা রামমোহন রায়

২. ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর

৩. নবাব আবদুল লতিফ

৪. সৈয়দ আমীর আলী

৫. মাইকেল মধুসূদন দত্ত প্রমুখ।

তাঁদের হাত ধরেই উনিশ শতকে বাংলায় নবজাগরণ ঘটে। তাঁরা নিজেদের সমাজে বহুকাল ধরে প্রচলিত নানা কুসংস্কার, কুপ্রথা সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠেন।

প্রশ্ন :

বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব কে? কত সালে তিনি নবাব হন? পলাশীর যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল লেখো।

উত্তর: বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব ছিলেন সিরাজউদ্দৌলা।

তিনি ১৭৫৬ সালে মাত্র ২২ বছর বয়সে বাংলার নবাব হন।

পলাশীর যুদ্ধের কারণ: নবাব সিরাজউদ্দৌলা তাঁর পরিবারের কিছু সদস্যের, বিশেষ করে খালা ঘষেটি বেগম, রায়দুর্লভ এবং জগৎশেঠের মতো ব্যবসায়ীদের বিরোধিতা ও ষড়যন্ত্রের শিকার হন। এ সময় নানা কারণে নবাবের সঙ্গে ইংরেজ বণিকদের বিরোধ দেখা দেয়। ইংরেজদের সঙ্গে নবাববিরোধী শক্তিগুলো একজোট হয়ে ষড়যন্ত্রে যোগ দেয়। এসবের জের ধরে শেষাবধি ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন ইংরেজ শক্তির সঙ্গে নবাবের সৈন্যদের পলাশীর প্রান্তরে যুদ্ধ হয়।

যুদ্ধের ফলাফল: সেনাবাহিনীর প্রধান মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে নবাব পরাজিত হন। পরে নবাবকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে বাংলায় ১৭৫৭ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ২০০ বছরের ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।

রাবেয়া সুলতানা, শিক্ষক, বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুল, ঢাকা

পূর্বের দিনের পড়া