পরীক্ষাকেন্দ্রে শিক্ষকদের কাছে ফোন, নিয়ম না মেনে দেরিতে প্রবেশ
চলমান এইচএসসি পরীক্ষায় রাজধানীর হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষার নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অধিকাংশ শিক্ষক মোবাইল ফোন নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করছেন। আবার পরীক্ষার্থীদের বিলম্বে প্রবেশের তালিকাভুক্তির জন্য কোনো রেজিস্ট্রারও রাখা হচ্ছে না। এমনকি নির্ধারিত সময়ের পরও যে কেউ পরীক্ষার কেন্দ্রে প্রবেশ করছেন।
ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ আজ বুধবার এই কেন্দ্র পরিদর্শন করতে গিয়ে এসব অনিয়ম দেখতে পেয়েছেন। এ জন্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া যেসব শিক্ষক (প্রত্যবেক্ষক) ও কর্মচারীর হাতে মোবাইল ফোন পাওয়া গেছে, তাঁদের চলমান এইচএসসি পরীক্ষার সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের তিনটি পৃথক কারণ দর্শানোর নোটিশে এসব অনিয়ম ও ব্যবস্থার কথা তুলে ধরা হয়েছে। এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ ও কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল জব্বার মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, তিনি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেখেছেন, এখন শোকজের জবাব দেবেন।
কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে অধ্যক্ষকে দেওয়া কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়, এইচএসসির রসায়ন (তত্ত্বীয়) প্রথম পত্রের পরীক্ষায় হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজ কেন্দ্রের প্রবেশপথে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বিলম্বে প্রবেশের তালিকাভুক্তির জন্য কোনো রেজিস্ট্রার না রাখা, সাড়ে নয়টার পর (সকাল ১০টার পরীক্ষায় কমপক্ষে আধা ঘণ্টা আগে কেন্দ্রে প্রবেশের নিয়ম) যে কেউ কেন্দ্রে প্রবেশ করা, কেন্দ্রে দায়িত্বরত পুলিশের হাতে মোবাইল ফোন থাকা এবং অধিকাংশ শিক্ষক মোবাইল ফোন নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করেছেন। এটি এইচএসসি পরীক্ষা পরিচালনা নীতিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ বিষয়ে কেন এই পরীক্ষার কেন্দ্র বাতিল করা হবে না এবং কেন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না—এই মর্মে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আরেকটি কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়, একই পরীক্ষায় চারজন প্রত্যবেক্ষকের কাছে মোবাইল ফোন পাওয়া গেছে, যা নীতিমালার লঙ্ঘন। তাঁরা হলেন, কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক হেলেনা খান, পদার্থের শহীদুল ইসলাম, গার্হস্থ্য অর্থনীতির সুরাইয়া বেগম ও অর্থনীতির শিক্ষক আরিফ হোসেন। তাঁদের এইচএসসি পরীক্ষার কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পাশাপাশি কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে জন্য তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া আরেকটি কারণ দর্শানোর নোটিশে লিফটম্যান রেজাউল করিমের কাছে মোবাইল পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ জন্য তাঁর বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
নোটিশগুলোতে সই করেছেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম আমিরুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বোর্ডের চেয়ারম্যান নিজে সরেজমিনে এসব অনিয়ম দেখতে পান। পরে তিনিও সেখানে গিয়ে এর সত্যতা পান। এ জন্য ওই সব ব্যবস্থা এবং কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।