বাংলা - পঞ্চম শ্রেণি

পঞ্চম শ্রেণির পড়াশোনা

রচনা: জাতীয় ফল কাঁঠাল

ভূমিকা: কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল। একটি রসাল ও সুস্বাদু ফল হিসেবে কাঁঠাল বিখ্যাত। এটি গ্রীষ্মকালের ফল। তবে বর্ষা ও বর্ষার পরেও কিছুদিন কাঁঠাল পাওয়া যায়।

প্রকৃতি: কাঁঠালগাছ বেশ বড় ও অনেক দিন বাঁচে। একই গাছ থেকে অনেক বছর ধরে কাঁঠাল পাওয়া যায়। মাঘ-ফাল্পুন মাসে কাঁঠালগাছে মুচি ধরে। মুচি থেকে কাঁঠাল হয়। চৈত্র মাস থেকে কাঁঠাল বড় হতে থাকে। বৈশাখ মাস থেকে কাঁঠাল ধরে। কাঁঠালগাছের শিকড় থেকে কাণ্ড, ডালপালা পর্যন্ত কাঁঠাল ধরে। একটি কাঁঠালগাছে ১০০-৩০০টি পর্যন্ত কাঁঠাল ধরে। এক একটি কাঁঠাল আকারে বিরাট এবং ওজনেও ৩০-৪০ কেজি হতে দেখা যায়। কাঁঠাল ছোট-বড় সব রকমেরই হয়। কাঁঠালের চামড়া খরখরে কাঁটাযুক্ত। কাঁঠালের ভেতর অসংখ্য কোষ থাকে। প্রতিটি কোষে একটি করে বিচি। কাঁঠালের বীজ থেকে চারাগাছ হয়। কাঁঠালগাছের গোড়ায় পানি জমে থাকলে গাছ মরে যায়। 

প্রাপ্তিস্থান: কাঁঠাল বাংলাদেশের সর্বত্রই কমবেশি পাওয়া যায়। নরসিংদী, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, যশোরে বেশি কাঁঠাল পাওয়া যায়।

উপকারিতা: কাঁঠাল উপাদেয় ও পুষ্টিকর ফল। কাঁচা কাঁঠালের তরকারি অত্যন্ত সুস্বাদু। কাঁঠাল এমন একটি ফল যার বিচিও খাওয়ার উপযোগী এবং উপকারী। কাঁঠালের বিচি তরকারি হিসেবে দারুণ ক্যালরিযুক্ত। কাঁঠালের মোটা খোসা গরু-মহিষের প্রিয় খাদ্য। পাকা কাঁঠাল খেতে খুবই মিষ্টি ও সুস্বাদু।

অপকারিতা: কাঁঠাল খুব গুরুপাক। সহজে হজম হয় না। বেশি কাঁঠাল খেলে পেটের পীড়া হয়। এ জন্য কাঁঠাল একসঙ্গে বেশি খাওয়া উচিত নয়। অবশ্য অনেক গরিব লোক কাঁঠাল খেয়েই দিন কাটিয়ে দেন।

বিদেশে চাহিদা: আমাদের দেশে যে পরিমাণ কাঁঠাল উৎপন্ন হয়, তার বেশ কিছু পরিমাণ নষ্ট হয়ে যায়। কাঁঠাল এ দেশের সম্পদ। আমরা প্রক্রিয়াজাত করে কাঁঠালের জ্যাম, জেলি, জুস ইত্যাদি বিদেশে রপ্তানি করতে পারি। এ ব্যাপারে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ খুবই জরুরি। এ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সহজেই হতে পারে, যা আমাদের দেশের উন্নয়নেরও কাজে লাগবে।

উপসংহার: কাঁঠাল মৌসুমি ফল। বাংলাদেশের ফলের মধ্যে সবচেয়ে প্রোটিনযুক্ত ফল কাঁঠাল। তাই বাড়ির চারপাশে কাঁঠালগাছ লাগিয়ে এর ফলন প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি করা উচিত।

খন্দকার আতিক, শিক্ষক, উইল্​স লিট্​ল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা