অধ্যায় ৫
'আমড়া ও ক্র্যাব নেবুলা’ গল্পটি নিজের ভাষায় বলো এবং নিজের ভাষায় লেখো।
মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘আমড়া ও ক্র্যাব নেবুলা’ গল্পটি একটি কল্পনানির্ভর রচনা। এই গল্পের প্রধান চরিত্র রঞ্জু। চার বছর বয়স থেকে বানিয়ে গল্প বলা তার স্বভাবে পরিণত হয়েছে। সে প্রায়ই গল্প করতে করতে বাস্তব জীবন থেকে কল্পনার জগতে চলে যায়।
একদিন রাতে ঘুমানোর জন্য রঞ্জুকে তার বড় বোন শিউলির ঘরে আলাদা বিছানা-বালিশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মাঝরাতে ঘুম থেকে উঠে সে মা-বাবার কাছে চলে আসে। তাদেরকে বলে, খেলনা ভাল্লুকটা মাঝরাতে তাকে আঁচড় দেয়, দেয়ালে বাঁধাই করা ময়ূরটা বেরিয়ে তার পায়ে ঠোকর দেয় ইত্যাদি ইত্যাদি। তাই ভয়ে সে শিউলির ঘর থেকে চলে এসেছে।
বিভিন্ন আজগুবি গল্প রঞ্জু তার বোন শিউলিকে বলে। মহাকাশের কোনো এক আগন্তুক তাকে ব্ল্যাকহোলের গোপন রহস্যের কথা বলে গেছে। ফ্লাইং সসার থেকে বিদঘুটে এক প্রাণী লেজার গান দিয়ে তাকে গুলি করার চেষ্টা করেছে। জারুলগাছের নিচে চতুষ্কোণ একটা উজ্জ্বল আলো দেখে উঁকি দিতেই সে ভিন্ন এক বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের একঝলক দেখতে পায়। ফুটবল খেলে বাড়িতে আসার সময় হঠাৎ একটা রোবট বের হয়ে তাকে কুশল জিজ্ঞাস করে।
একদিন মাকে কালির দোয়াত এগিয়ে দেওয়ার সময় হোঁচট খেয়ে সে পড়ে যায়। এতে দোয়াত ভেঙে টুকরা টুকরা হয়ে যায়। কালি ছড়িয়ে কার্পেটসহ সব জিনিস নষ্ট হয়ে যায়। এ জন্য তাকে মায়ের কাছে বকা শুনতে হয়। বকা খেয়ে সে মনকে শান্ত করার জন্য নির্জন ছাদে আসে। হঠাৎ বাতাসের শো শো আওয়াজ শুনে সে পেছনে তাকিয়ে দেখে, তাদের ছাদে একটা মহাকাশযান ভাসছে। একটু পরে নীল আলোর মধ্যে একটা আবছা ছায়া কিলবিল করতে থাকে। সেখান থেকে শুকনা কাঠির মতো একজন মানুষ বেরিয়ে এসে তার সাথে চাটগাঁয়ের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে। তাদের যান ক্র্যাব নেবুলার একটা ফুটো সারানোর জন্য তার কাছে সাহায্য চায়। রঞ্জুর সাথে থাকা চুইংগামটা সে চিবিয়ে দিলে তা দিয়ে ফুটোটা বন্ধ করা হয়। খুশি হয়ে মানুষটা ক্র্যাব নেবুলার একটা ত্রিমাত্রিক প্রতিচ্ছবি রঞ্জুকে উপহার দিয়ে চলে যায়। সিড়ির আলোতে রঞ্জু বুঝতে পারে, পাওয়া উপহারটা হচ্ছে একটা আমড়া। শিউলি জোরাজুরি করলে এক পর্যায়ে সে আমড়াটি তাকে দেয়। তারপর স্বীকার করে, সবাই যেখানে পায়, আমড়াটি সে সেখানেই পেয়েছে।
জাহেদ হোসেন, সিনিয়র শিক্ষক, বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা