১. প্রশ্ন: শখের হাঁড়ি কী রকম?
উত্তর: মাটির তৈরি যেসব শিল্পকর্ম রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে শখের হাঁড়ি একটি অন্যতম শিল্পকর্ম। শখের হাঁড়ি বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। কোনো হাঁড়ি ফুল আঁকা, কোনো হাঁড়ি পাতা আঁকা আবার কোনো কোনো হাঁড়িতে মাছের ছবি আঁকা। অপূর্ব সুন্দর কারুকাজখচিত এসব হাঁড়ি সহজেই মানুষের দৃষ্টি কেড়ে নেয়। মানুষ শখ করে পছন্দের জিনিস এই সুন্দর হাঁড়িতে রাখে। তাই এই হাঁড়িকে শখের হাঁড়ি বলা হয়। শখের হাঁড়ি দৃষ্টিনন্দন এবং শিল্প-সৌন্দর্য্যে সত্যি অতুলনীয়।
২. প্রশ্ন: মৃৎশিল্পের প্রধান উপাদান কী?
উত্তর: মাটির তৈরি শিল্পকর্মকে বলা হয় মৃৎশিল্প। এ শিল্পের প্রধান উপাদান হলো মাটি। তবে সব মাটি দিয়ে এ কাজ হয় না। দোআঁশ মাটি তেমন আঠালো নয়, আর বেলে মাটি ঝরঝরে, তাই এগুলো দিয়ে মাটির শিল্প বা মৃৎশিল্প হয় না। মৃৎশিল্পের জন্য দরকার পরিষ্কার এঁটেল মাটি। এ ধরনের মাটি বেশ আঠালো। আবার এঁটেল মাটি হলেই যে তা দিয়ে শিল্পের কাজ করা যাবে তা–ও নয়। এর জন্য দরকার অনেক যত্ন আর শ্রম। দরকার হাতের নৈপুণ্য ও কারিগরি জ্ঞান। প্রয়োজন কিছু ছোটখাটো যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম। মৃৎশিল্পের প্রধান উপাদান মাটি হলেও এর সঙ্গে দরকার একটা কাঠের চাকা। এই চাকায় নরম মাটির তাল লাগিয়ে নানা আকারের মাটির পাত্র ও নানা জিনিস তৈরি করেন কুমারেরা।
৩. প্রশ্ন: কয়েকটি মৃৎশিল্পের নাম লেখো।
উত্তর: মৃৎশিল্প আমাদের দেশের সবচেয়ে প্রাচীন শিল্প। এ দেশের কুোর সম্প্রদায় যুগ যুগ ধরে তৈরি করে আসছে নানা রঙের, নানা বর্ণের ও বিভিন্ন রকমের মৃৎশিল্প। আমাদের দেশের কুমারদের তৈরি কয়েকটি মৃৎশিল্পের নাম হলো: মাটির কলস, হাঁড়ি, সরা, মটকা, বাসনকোসন, পেয়ালা, সুরাই, ডালা, পিঠে তৈরির ছাঁচ, পুতুল ও নানা রকম পশু, পাখি, মাছ ইত্যাদি। এ ছাড়া আমাদের দেশে একসময় গড়ে উঠেছিল অনিন্দ্যসুন্দর মৃৎশিল্প টেরাকোটা। বাংলার অনেক পুরোনো মৃৎশিল্প এই টেরাকোটা।
৪. প্রশ্ন: মাটির শিল্প আমাদের ঐতিহ্য ও গৌরবের বিষয় কেন?
উত্তর: বাংলাদেশের প্রাচীন শিল্পকলার পরিচয় পাওয়া যায় কুটিরশিল্পে। এটা এ দেশের নিজস্ব শিল্প। হাজার হাজার বছর ধরে এ দেশে মাটির শিল্পের চর্চা হয়ে আসছে। এ দেশের মানুষের মন যে শিল্পীর মন, এই মাটির শিল্প তারই পরিচয় বহন করে। ময়নামতির শালবন বিহার, বগুড়ার মহাস্থানগড়, বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদে দেখা যায় পোড়ামাটির ফলকের নিদর্শন। তাই মাটির শিল্প আমাদের ঐতিহ্য ও গৌরবের বিষয়।
খন্দকার আতিক, শিক্ষক, উইল্স লিট্ল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা