পাঠ্যবই-বহির্ভূত অনুচ্ছেদ
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ, বৃহস্পতিবার। দিন গড়িয়ে সন্ধে৵, তারপর রাত নামল। মানুষ সারা দিনের কাজের শেষে শান্তিতে ঘুমিয়ে পড়ল। ঠিক তখনই শুরু হলো পাকিস্তানি সামরিক জান্তার আক্রমণ। ঢাকার পিলখানা, ইপিআর ঘাঁটি, রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে চলল আকস্মিক আক্রমণ। ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের সমস্ত সামরিক ঘাঁটিতে বাঙালি সৈনিকদের ওপর ওরা ঝাঁপিয়ে পড়ল। কামান, ট্যাংক, মেশিনগান প্রভৃতি সব ধরনের ভারী অস্ত্র ব্যবহার করল হানাদার বাহিনী। কিন্তু দেশের বাঙালি সৈনিকেরা এসবের জন্য প্রস্তুত ছিল না। ঘুমন্ত সাধারণ মানুষের ওপরও পাকিস্তানি বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ল। হাজার হাজার নিরস্ত্র বাঙালি মারা গেল হানাদার সৈন্যদের গুলিতে। ওরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস ও আশপাশের বস্তিতে চালাল গোলা। ওদের গোলার আগুনে বাড়িঘর পুড়ে ছাই হলো। মানুষের সাজানো সংসার ধ্বংস হলো।
৩. নিচের কয়েকটি শব্দ ও শব্দার্থ দেওয়া হলো। উপযুক্ত শব্দটি বাছাই করে নিচের বাক্যগুলোর শূন্যস্থান পূরণ করে উত্তরপত্রে লেখো।
শব্দ - শব্দার্থ
জান্তা - সামরিক শাসক
আকস্মিক - হঠাৎ করে
ঝাঁপিয়ে - ঝাঁপ দিয়ে
অস্ত্র - হাতিয়ার
নিরস্ত্র - হাতিয়ারহীন
গোলা - কামান থেকে ছোড়া বিস্ফোরক
ক. সৈন্যদের ____ এসে পড়ল বস্তির ঘরবাড়ির ওপর।
খ. রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে চলল ____ আক্রমণ।
গ. হাজার হাজার ঘুমন্ত ____ বাঙালি মারা গেল।
ঘ. বাঙালি সৈনিকদের ওপর ওরা ____ পড়ল।
ঙ. পাকিস্তানি সামরিক ____ নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আক্রমণ চালায়।
৩ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক. সৈন্যদের গোলা এসে পড়ল বস্তির ঘরবাড়ির ওপর।
খ. রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে চলল আকস্মিক আক্রমণ।
গ. হাজার হাজার ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালি মারা গেল।
ঘ. বাঙালি সৈনিকদের ওপর ওরা ঝাঁপিয়ে পড়ল।
ঙ. পাকিস্তানি সামরিক জান্তা নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আক্রমণ চালায়।
৪. নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখো।
ক. পাকিস্তানি বাহিনী বাঙালির ওপর গভীর রাতে আক্রমণ করেছিল কেন? পাকিস্তানি বাহিনীর বাঙালিদের ওপর আক্রমণের চারটি কারণ লেখো।
খ. পাকিস্তানি বাহিনী প্রথমেই সামরিক ঘাঁটিগুলোতে আক্রমণ চালানোর
পাঁচটি কারণ লেখো।
গ. পাকিস্তানি বাহিনীর ধ্বংসলীলা সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য লেখো।
৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক. গভীর রাতে ঘুমন্ত বাঙালিকে সহজেই পরাস্ত করতে পারবে বলে তারা এ সময় আক্রমণ চালিয়েছিল। পাকিস্তানি বাহিনী কর্তৃক নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর বর্বর আক্রমণের চারটি কারণ হলো—
১. বাঙালিদের দমন করতে।
২. নিজেদের শাসনক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে।
৩. বাঙালিদের শোষণ করতে
৪. বাঙালিদের অধীনস্থ রাখতে।
খ. পাকিস্তানি বাহিনী প্রথমেই সামরিক ঘাঁটিগুলোতে আক্রমণ চালিয়েছিল, কারণ—
১. বাঙালি সামরিক বাহিনীকে নিরস্ত্র করতে।
২. বাঙালির সামরিক শক্তি ধ্বংস করতে।
৩. সামরিক শক্তি না থাকলে সহজেই দমন করা যাবে বলে।
৪. সামরিক বাহিনীতে প্রচুর বাঙালি সৈন্য ছিল বলে।
৫. বাঙালি সামরিক বাহিনী তাদের জন্য হুমকি ছিল বলে।
গ. পাকিস্তানি বাহিনী এ দেশের সামরিক ঘাঁটি ধ্বংস করে। এ ছাড়া ঘুমন্ত মানুষের ওপর পাকিস্তানি বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তাদের ভারী ভারী অস্ত্রের গুলিতে হাজার হাজার ঘুমন্ত বাঙালি নিহত হয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস ও আশপাশের বস্তিতে কামানের গোলা চালায় তারা। এতে দোকানপাট, বাড়িঘর, মানুষের সাজানো সংসার ধ্বংস হয়ে যায়।
খন্দকার আতিক, শিক্ষক, উইল্স লিট্ল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা