অষ্টম শ্রেণি – বিজ্ঞান | অধ্যায় ৩ : সৃজনশীল প্রশ্ন (১)

অষ্টম শ্রেণির পড়াশোনা

সৃজনশীল প্রশ্ন

কাঠবিড়ালির হাত থেকে রক্ষার জন্য কবির গাছের পেয়ারাকে পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে রাখে। পরে সে লক্ষ করে পলিথিনের মধ্যে বিন্দু বিন্দু পানি জমে আছে। কিন্তু এতে তার পাকা পেয়ারার মিষ্টি সুবাস পেতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হলো।

প্রশ্ন

ক. কৈশিক পানি কাকে বলে?

খ. 'অভিস্রবণ ও ব্যাপন প্রক্রিয়ায় দ্রব ও দ্রাবকের গতিপথ ভিন্ন'-ব্যাখ্যা করো।

গ. উদ্দীপকে বিন্দু বিন্দু পানি জমার প্রক্রিয়াটি ব্যাখ্যা করো।

ঘ. উল্লিখিত প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে সম্পৃক্ত শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াটি জীবজগতে গুরুত্বপূর্ণ— বিশ্লেষণ করো।

উত্তর

ক. মাটির সূক্ষ্মকণার ফাঁকে লেপে থাকা পানিকে কৈশিক পানি বলে।

খ. অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় দ্রাবক অণুগুলো কম ঘনত্বের দ্রবণ হতে বেশি ঘনত্বের দ্রবণের দিকে ধাবিত হয়। পক্ষান্তরে ব্যাপন প্রক্রিয়ায় অণুগুলো বেশি ঘনত্ব হতে কম ঘনত্বের দিকে ধাবিত হয়।

সুতরাং বলা যায়, অভিস্রবণ ও ব্যাপন প্রক্রিয়ায় দ্রব ও দ্রাবকের গতিপথ ভিন্ন।

গ. পলিথিন ব্যাগে বিন্দু বিন্দু পানি জমার প্রক্রিয়াটি প্রস্বেদন। যে শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ বায়বীয় অঙ্গের (পাতা, কাণ্ড, লেন্টিসেল) মাধ্যমে বাষ্পাকারে পানি বাইরে বের করে দেয় তাকে প্রস্বেদন বলে। উদ্দীপকে উল্লিখিত পেয়ারাগুলো থেকে নির্গত জলীয় বাষ্প পলিথিনের সংস্পর্শে ঘনীভূত হয়ে বিন্দু বিন্দু পানির কণায় রূপান্তরিত হয় যা পলিথিন ব্যাগের গায়ে জমে থাকে। সুতরাং প্রস্বেদনের মাধ্যমে নির্গত জলীয় বাষ্পই পলিথিনে বিন্দু বিন্দু পানি আকারে জমা হয়।

ঘ. প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে সম্পৃক্ত শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াটি ব্যাপন। একই তাপমাত্রা ও একই বায়ুমণ্ডলীয় চাপে কোনো পদার্থের অণুগুলো বেশি ঘনত্ব হতে কম ঘনত্বের দিকে ছড়িয়ে পড়াকে ব্যাপন বলে।

ব্যাপন প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই পাকা পেয়ারার মিষ্টি সুবাস বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। উল্লিখিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জীবের সব রকম শারীরবৃত্তীয় কাজ সম্পন্ন হয়। উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণের সময় বাতাসের কার্বনডাই–অক্সাইড গ্রহণ করে এবং অক্সিজেন ত্যাগ করে। এই অত্যাবশ্যক কাজ ব্যাপন দ্বারা সম্পন্ন হয়। জীবকোষে শ্বসনের সময় গ্লুকোজ জারণের জন্য অক্সিজেন ব্যবহৃত হয়। ব্যাপন ক্রিয়ার দ্বারা কোষে অক্সিজেন প্রবেশ করে এবং কার্বন ডাই–অক্সাইড বের হয়ে যায়। উদ্ভিদ দেহে শোষিত পানি বাষ্পাকারে প্রস্বেদনের মাধ্যমে দেহ থেকে ব্যাপন প্রক্রিয়ায় বের করে দেয়। প্রাণীদের শ্বসনের সময় অক্সিজেন ও কার্বন ডাই–অক্সাইডের আদান-প্রদান ও রক্ত থেকে খাদ্য, অক্সিজেন প্রভৃতি লসিকায় বহন ও লসিকা থেকে কোষে পরিবহন করা ব্যাপন দ্বারা সম্পন্ন হয়।

সুতরাং ওপরের আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, উল্লিখিত ব্যাপন প্রক্রিয়াটি জীবজগতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

মোহাম্মদ আক্তার উজ জামান, প্রভাষক, সরকারি রূপনগর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা